বেআইনি ভাবে বণ্টিত ২১৮টি কয়লাখনির বরাত বাতিল করে ফের নিলামে তাদের আপত্তি নেই বলে সুপ্রিম কোর্টে জানাল কেন্দ্র। ১৯৯৩ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ২১৮টি কয়লাখনি বণ্টন বেআইনি ভাবে হয়েছিল বলে আগেই রায় দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
কয়লাখনিগুলির ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের বক্তব্য শুনতে চায় প্রধান বিচারপতি আর এম লোঢার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। তাই আজ থেকে ফের শুনানি শুরু হয়েছে। অ্যাটর্নি-জেনারেল মুকুল রোহতগি জানান, ২১৮টি কয়লাখনি নিলামের মাধ্যমে ফের বণ্টন করায় নরেন্দ্র মোদী সরকারের কোনও আপত্তি নেই। তবে ৪০টি কয়লাখনিতে উৎপাদন শুরু হয়ে গিয়েছে। আরও ৬টি উৎপাদন শুরুর জন্য প্রায় তৈরি। সেগুলি নিয়ে আলাদা ভাবে বিবেচনা করার আর্জি জানিয়েছেন রোহতগি। কারণ, দেশে বিদ্যুৎ সঙ্কট চলছে। ওই কয়লাখনিগুলির বরাত বাতিল হলে কয়লার অভাবে সেই সঙ্কট আরও জটিল হয়ে দাঁড়াবে।
বেআইনি ও অস্বচ্ছ ভাবে ওই কয়লাখনিগুলি বিভিন্ন শিল্পসংস্থাকে দেওয়ায় কেন্দ্রের ১ লক্ষ ৮৬ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল। আজ সওয়ালে রোহতগি বলেন, “ওই ৪৬টি কয়লাখনি এত দিন যত কয়লা ব্যবহার করেছে কেন্দ্রকে সে জন্য টনপ্রতি ২৯৫ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তা ছাড়া ওই খনিগুলির পরিচালক কর্তৃপক্ষকে সরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্থার কাছ থেকে বিদ্যুৎ কেনার দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করতে হবে।” কেন্দ্রের ক্ষতিপূরণের এই শর্ত মানলে তবেই ওই খনিগুলির কথা বেঞ্চ আলাদা ভাবে ভাবতে পারে বলে জানিয়েছেন রোহতগি।
খনিগুলির ভাগ্য নির্ধারণের জন্য সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতিদের নিয়ে কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিল বেঞ্চ। আজ অ্যাটর্নি-জেনারেল বলেন, “আমরা এই ধরনের কমিটি গঠনের পক্ষে নই। যদি খনি বণ্টন বাতিল করতে হয় তবে সেই সিদ্ধান্ত মেনেই এগোতে হবে।”
কেন্দ্রের বক্তব্য নিয়ে এজিকে হলফনামা দিতে বলেছে বেঞ্চ। হলফনামা দিতে হবে কয়লা উৎপাদকদের সংগঠন, স্পঞ্জ লোহা উৎপাদকদের সংগঠন ও বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদকদের সংগঠনকেও। ৯ সেপ্টেম্বর ফের শুনানি হবে। ২১৮টি খনির বরাত বাতিল করার আগে শিল্পসংস্থাগুলির স্বার্থও মাথায় রাখা উচিত বলে আজ সওয়াল করেন কয়লা উৎপাদকদের কৌঁসুলি কে কে বেণুগোপাল। তিনি বলেন, “এখনও কয়লা কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত কোনও ব্যক্তির ভূমিকা নিয়ে মন্তব্য করেনি সুপ্রিম কোর্ট।” বেণুগোপালের মন্তব্যের জবাবে বেঞ্চ জানায়, কয়লা কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত শেষ হয়নি। তাই খনি বণ্টন বেআইনি ঘোষণা করার সময়ে অভিযুক্তদের নিয়ে মন্তব্য করার বিষয়ে সতর্ক থাকতে হয়েছে কোর্টকে।
কয়লা কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্তদের বিচারের ভার বিশেষ সিবিআই বিচারক ভরত পরাশরকে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। অভিযুক্তদের মধ্যে কুমারমঙ্গলম বিড়লা ও প্রাক্তন কয়লাসচিব পি সি পরাখের বিরুদ্ধে মামলা ইতিমধ্যেই বন্ধ করে দিয়েছে সিবিআই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy