শরদ পওয়ারের দল এনসিপি মহারাষ্ট্রে বিজেপিকে সমর্থন দেওয়ার কথা বলতেই দু’পক্ষের অস্বস্তি বাড়াতে সক্রিয় হল কংগ্রেস। দলের হাইকম্যান্ডের তরফে আজ শীর্ষ সারির বেশ কয়েক জন নেতা বলেছেন, মহারাষ্ট্রের ভোট প্রচারে এনসিপিকে ‘তোলাবাজের পার্টি’ এবং ‘ন্যাচারাল কোরাপ্ট পার্টি’ বলে মন্তব্য করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই দুর্নীতি কি এখন গঙ্গা জলে ধুয়ে গেল! কংগ্রেস এখন এটাই দেখতে উৎসুক যে ‘তোলাবাজের পার্টি’র সমর্থন প্রধানমন্ত্রী নেবেন, নাকি এনসিপি নেতৃত্বের দুর্নীতি দমনে তিনি ব্যবস্থা করবেন!
সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ চহ্বাণও এ দিন নিশানা করেছেন শরদ পওয়ারকে। বলেছেন, “ভোট প্রচারে প্রধানমন্ত্রী এত গালমন্দ করার পরও পওয়ার রাতারাতি কী ভাবে ভোল বদলালেন সেটাই আশ্চর্যের! যাঁকে সাম্প্রদায়িক বলে দু’দিন আগেও সমালোচনা করেছেন, তাঁকেই এখন সমর্থনের কথা ঘোষণা করছেন। ফলে উভয়ের কী রফা হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন জাগছে।” পৃথ্বীরাজের কটাক্ষ, “ভোটের দু’দিন আগে কংগ্রেসের সঙ্গে এনসিপির জোট ভাঙার সময়েই বুঝেছিলাম, মোদীর সঙ্গে পওয়ারের বোঝাপড়া হয়েছে। সেটাই এখন প্রমাণ হয়ে গেল।”
কংগ্রেস নেতারা বলছেন, শরদ পওয়ারের ভাইপো অজিত পওয়ার এবং প্রাক্তন এনসিপি মন্ত্রী সুনীল টাটকারের বিরুদ্ধে সেচ কেলেঙ্কারির অভিযোগ ও ফাইল জমা রয়েছে রাজ্যের দুর্নীতি দমন বিভাগের কাছে। সেই সঙ্গে এনসিপি নেতা তথা প্রাক্তন পূর্ত মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মহারাষ্ট্র সদন নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। হয়তো সেই কারণেই বিজেপি-র সঙ্গে রফা করতে চাইছে এনসিপি। তবে কংগ্রেসের একাংশ নেতা এ-ও মনে করছেন, আসলে শরদ পওয়ার তাঁর মেয়ে সুপ্রিয়া সুলের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করতে চাইছেন। সে জন্যই বিজেপির সঙ্গে সমঝোতায় তাঁর এত আগ্রহ।
তবে পওয়ারও আজ কংগ্রেসকে পাল্টা অস্বস্তিতে ফেলতে চেয়েছেন। এই মরাঠা নেতা আজ বলেন, “কংগ্রেসের এক রাজ্য নেতা ফোন করে আমাকে বলেছিলেন, চলুন শিবসেনার সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়ি। কিন্তু সেই প্রস্তাবে আমি রাজি হইনি। আর এখন বিজেপিকে সরকার গঠনে বাইরে থেকে সমর্থন দেওয়াই ছিল সেরা বিকল্প। তাতে রাজ্যে একটি সুস্থির সরকার তৈরি হতে পারবে।”
কিন্তু এতে ভয় পাচ্ছে কেন কংগ্রেস? ভোট ফলাফলেই দেখা যাচ্ছে কংগ্রেসের ভোট শতাংশ যখন লোকসভা নির্বাচনের থেকে কমেছে, তখন এনসিপির ভোট বেড়েছে। এনসিপি কংগ্রেসের থেকে একটি আসন কম পেয়েছে ঠিকই, কিন্তু আগের বিধানসভা ভোটের তুলনায় এ বার কংগ্রেসের শক্তির যা ক্ষয় হয়েছে, তুলনায় এনসিপির ক্ষতি হয়েছে কম। এ বার রাজ্যে কংগ্রেস ১৮ শতাংশ ও এনসিপি ১৭.২ শতাংশ ভোট পেয়েছে। বিজেপি পেয়েছে ২৭.৮ শতাংশ ভোট। রাজ্যে কংগ্রেসের তুলনায় এনসিপির সাংসদ সংখ্যাও এখন বেশি। কংগ্রেসের সাংসদ রয়েছে ২ জন, এন সি পির ৫ জন।
কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির এক সদস্যের ব্যাখ্যা, “এই অবস্থায় এনসিপি যদি নতুন সরকারের শরিক হয় বা বাইরে থেকে সমর্থন যোগায় তা হলে কার্যত ক্ষমতায় থেকে তাদের শক্তি আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর তা হতে পারে কংগ্রেসের ক্ষতির মূল্যে।” আর সেই জন্যই কংগ্রেস নেতারা মনেপ্রাণে চাইছেন, মহারাষ্ট্রে শিবসেনার সমর্থনেই সরকার গড়ুক বিজেপি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy