Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Kumbh Mela

কুম্ভ নিয়ে নীরবতা ভাঙলেন মোদী, করোনা ঠেকাতে প্রতীকী রূপে উদ্‌যাপনের আর্জি

প্রথম পাঁচ দিনেই মেলায় যোগদানকারী ২ হাজার ১৬৭ জনের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়ে। এখনও পর্যন্ত ১ জন সাধুর মৃত্যু হয়েছে।

করোনা সঙ্কটে কুম্ভমেলায় বিপুল জনসমাগম নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন মোদী।

করোনা সঙ্কটে কুম্ভমেলায় বিপুল জনসমাগম নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন মোদী।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২১ ১০:২৩
Share: Save:

দেশ জুড়ে তীব্র সমালোচনার মধ্যে হরিদ্বারের কুম্ভমেলা নিয়ে নীরবতা ভাঙলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। করোনা সঙ্কটের কথা মাথায় রেখে আপাতত প্রতীকী রূপে কুম্ভ মেলা উদ্‌যাপনের আর্জি জানালেন তিনি। ফোনে জুনা আখড়ার স্বামী অওধেশানন্দের সঙ্গে এ নিয়ে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মোদী। মোদীর প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে তিনি পুণ্যার্থীদের ভিড় করে শাহি স্নান থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ জানিয়েছেন।

শনিবার টুইটারে মোদী লেখেন, ‘আচার্য মহামণ্ডলেশ্বর পূজ্য স্বামী অওধেশানন্দ গিরির সঙ্গে ফোনে কথা হল। সাধুসন্তদের স্বাস্থ্যের খবর নিলাম। সকলেই প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন। তার জন্য সন্তজনদের কৃতজ্ঞতা জানাই। দু’টো শাহি স্নান ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে। করোনা সঙ্কটের কথা মাথায় রেখে আমি অনুরোধ জানিয়েছি যে আপাতত কুম্ভ প্রতীকী রূপেই উদ্‌যাপন করা হোক, যা এই সঙ্কটের সঙ্গে লড়াইয়ে আমাদের শক্তি জোগাবে’।

প্রধানমন্ত্রীর টুইটের পরই তাঁর প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে টুইট করেন স্বামী অওধেশানন্দ। তিনি লেখেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধকে সম্মান জানাচ্ছি। মানুষকে অনুরোধ করছি, কোভিড পরিস্থিতিতে বিপুল সংখ্যায় শাহি স্নান করতে আসবেন না আপনারা এবং সমস্ত বিধিনিষেধ মেনে চলুন’।

নোভেল করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় দেশে দৈনিক সংক্রমণ ইতিমধ্যেই ২ লক্ষ পেরিয়ে গিয়েছে। সেই অবস্থায় হরিদ্বারে কুম্ভ মেলা ঘিরে উন্মাদনা নিয়ে গত কয়েক দিন ঝরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। অতিমারিজনিত বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করে হাজার হাজার মানুষকে শাহি স্নানে অংশ নিতে দেখা যায়।

তা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠলেও নির্লিপ্ত ছিল উত্তরাখণ্ড সরকার। বরং গত বছর দিল্লির নিজামউদ্দিন মরকজের সঙ্গে তুলনা উঠলে, উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী তীরথ সিংহ রাওয়ত যুক্তি দেন, মরকজে একটি বদ্ধ ঘরে অনেকে জড়ো হয়েছিলেন। কেউ জানত না কী ঘটছে সেখানে। সেই তুলনায় খোলা আকাশের নীচে কুম্ভমেলা চলছে। মরকজে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁরা বাইরের লোক, কুম্ভের সকলে নিজের লোক বলেও মন্তব্য করেন তীরথ। স্বাস্থ্য গুরুত্বপূর্ণ হলেও ধর্মকে অবহেলা করা যায় না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে বিতর্কের মধ্যেও শাহি স্নানে বিরতি পড়েনি। বরং ১১ মার্চ, ১২ মার্চ এবং ১৪ মার্চে আয়োজিত প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় শাহি স্নানে অংশ নিতে দেখা যায় হাজার হাজার মানুষকে। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় শাহি স্নানে ৪৮ লক্ষ ৫১ হাজার মানুষ অংশ নেন বলে হিসেব পাওয়া গিয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকে। কুম্ভমেলায় এই বিপুল সংখ্যক মানুষের যোগদানে কোভিড বিধিনিষেধ কার্যকর রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। এর মধ্যেই সেখানে ৩০ জন সাধু করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, যার মধ্যে মহা নির্বাণী আখড়ার স্বামী কপিল দেবের মৃত্যুও হয়েছে। বাদ যাননি পুণ্যার্থীরাও। ১০ থেকে ১৫ এপ্রিল, মেলার প্রথম পাঁচ দিনেই ২ হাজার ১৬৭ জনের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছে।

তাই ২৭ এপ্রিল চতুর্থ শাহি স্নানের আয়োজন কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল সব মহল থেকেই। এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবারই ১৩টি ধর্মীয় সংগঠনকে নিয়ে গঠিত নিরঞ্জনী আখড়া এবং অন্য একটি আখড়া কুম্ভ থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তার পরই প্রধানমন্ত্রী নিজে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগী হলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE