পুলিশি হেফাজতে ধৃত দম্পতি। ছবি: অমিত দাস।
ওড়িশার কটক শহরে একই পরিবারের চার জনকে খুনের ঘটনায় জড়িত দম্পতি ধরা পড়েছে অসমের হাইলাকান্দি থেকে। বুধবার রাতে দুই রাজ্যের পুলিশ মাটিজুরি গ্রামের এক বাড়ি থেকে অভিযুক্ত দম্পতিকে ধরে। ধৃতেরা অপরাধের কথা কবুল করেছে, পুলিশ জানিয়েছে।
২০১৪-র ২১ সেপ্টেম্বর ওড়িশার কটকের বাসিন্ধা দীনবন্ধু মল্লিকের বাড়িতে এক ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছিল। পরিবারের প্রধান দীনবন্ধু মল্লিক (৬৮), তাঁর স্ত্রী নির্মলা মল্লিক (৪৫) ও তাঁদের দুই সন্তান প্রণতি (৬) এবং শাশ্বতী (৪) কে হত্যা করা হয়েছিল। সেই ঘটনা ওড়িশা জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। রাজ্য পুলিশ তদন্তে কোনও সূত্রই খুঁজে পাচ্ছিল না বলে জানান কটক পুলিশের ডিএসপি (অপরাধ ) বি আর মল্লিক। তিনি এই মামলার তদন্তে বর্তমানে হাইলাকান্দি শহরে আছেন। আততায়ীদের সন্ধানে পুলিশ ওড়িশা ও আশপাশের রাজ্যে তল্লাশি চালাতে থাকে বলে মল্লিক জানান। তাও খুনিদের হদিস মিলছিল না। এই খুনের রহস্য ভেদ করতে এক সময় কলকাতা থেকে বিখ্যাত স্কেচ আর্টিস্ট দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
পুলিশি সূত্রে জানা যায়, খুনিরা পরিবারের সবাইকে খুন করে সোনার গয়না এবং অন্য সামগ্রীর সঙ্গে একটি মোবাইল সেটও নিয়ে যায়। ওড়িশা পুলিশ মোবাইলের লোকেশন খুঁজতে আরম্ভ করে। এতে সাফল্যও মেলে। পুলিশ জানতে পারে খুনিরা অসমে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে। ওড়িশা পুলিশ অসম পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ডিএসপি বি আর মল্লিক ছুটে আসেন অসমের হাইলাকান্দি জেলায়। এখানে এসে পুলিশ সুপার রাজেন সিংহ-সহ পুলিশকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে অভিযানের রূপরেখা তৈরি করেন তিনি। পরিকল্পনা মতো বুধবার রাতে হাইলাকান্দি থানার মাটিজুরি গ্রামের সাদিক আহমেদের বাড়িতে যৌথ অভিযান চালায় পুলিশ। রাতেই এই বাড়ি থেকে হিমাদ্রিশেখর দাস ওরফে রহিম খান ও তার স্ত্রী আয়েশা বেগমকে গ্রেফতার করা হয়।
ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জানায়, খুন হওয়া দীনবন্ধুর ভাগ্নের সূত্রে মল্লিক পরিবারের সঙ্গে ধৃতদের পরিচয় ছিল। হাইলাকান্দির এসপি রাজেন সিংহ ও কটক পুলিশের ডিএসপি বি আর মল্লিক বৃহস্পতিবার জানান, যে ধৃতরা খুনের কথা স্বীকার করেছে। তবে শুধুমাত্র সোনা-টাকার জন্য একই পরিবারের চার জনকে খুন করা হয়েছিল কি না খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ধৃতদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। হিমাদ্রিশেখর দাস কেন তার নাম পরিবর্তন করে রহিম খান হলেন তাও পুলিশ খতিয়ে দেখছে। ওড়িশা পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত হিমাদ্রিশেখরের বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরে ও আয়েশা বেগমের বাড়ি ঝাড়খন্ডে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy