Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Covaxin

কোভ্যাক্সিন ৭৭ শতাংশের বেশি কার্যকর, দাবি

ভারত বায়োটেকের দাবি, করোনা রোখার প্রশ্নে ৭৭.৮ শতাংশ কার্যকর তাদের টিকা। এমনকি, ডেল্টা প্রজাতির স্ট্রেনকে রুখতেও সক্ষম

প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২১ ০৬:২০
Share: Save:

মানবদেহে তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষার ভিত্তিতে প্রতিষেধক কোভ্যাক্সিন ৭৭.৮ শতাংশ কার্যকর বলে দাবি করল ভারত বায়োটেক। হায়দরাবাদের ওই সংস্থার দাবি, ডেল্টা প্রজাতির স্ট্রেনকে রুখতেও সক্ষম তাদের প্রতিষেধক। ভারতে তৃতীয় দফা পরীক্ষার আগেই তা জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োগের ছাড়পত্র পেলেও, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) অনুমোদন পেতে ব্যর্থ হয় সংস্থা। এখন তৃতীয় দফার ফলাফল হাতে আসায় কোভ্যাক্সিনের আন্তর্জাতিক ছাড়পত্র পাওয়ার পথ সুগম বলেই সংস্থা আশাবাদী।

তৃতীয় দফার ফলাফল না-থাকায় এত দিন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ছাড়পত্র পেতে সমস্যা হচ্ছিল কোভ্যাক্সিনের। ফলে ওই টিকার কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একাধিক দেশ। আমেরিকাতেও জরুরি ভিত্তিতে ওই টিকা ব্যবহারের অনুমোদন চেয়ে আবেদন করা হলেও ছাড়পত্র আটকে যায়। এই পরিস্থিতিতে আজ সংস্থার পক্ষ থেকে টুইট করে জানানো হয়, কোভ্যাক্সিনের তৃতীয় দফার ফলাফল সামনে এসেছে। যার ভিত্তিতে বলা যেতে পারে ওই টিকা সুরক্ষিত ও কার্যকর। ২৫টি কেন্দ্রে টিকার দ্বিতীয় ডোজ়প্রাপ্ত ১৩০ জনের উপরে সমীক্ষা চালিয়ে ওই দাবি করেছে সংস্থা।

ভারত বায়োটেকের দাবি, করোনা রোখার প্রশ্নে ৭৭.৮ শতাংশ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে ওই টিকা। এমনকি, করোনার যে নতুন স্ট্রেন ডেল্টা প্রায় ১০০টির বেশি দেশে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, সেটির বিরুদ্ধেও ওই প্রতিষেধকের কার্যকারিতা ৬৫.২ শতাংশ। ডেল্টা-সহ করোনাভাইরাসের অন্য যে স্ট্রেনগুলি ‘ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন’ সেই আলফা, বিটা ও গামার ক্ষেত্রে এটি কার্যকর বলে দাবি করা হয়েছে। কোভ্যাক্সিনের কার্যকারিতার রিপোর্ট কোনও আন্তর্জাতিক স্বীকৃত জার্নালে প্রকাশিত হয়নি বলে এর আগে সমালোচনা হয়েছে। এ বার ভারত বায়োটেকের দাবি, তাদের ওই গবেষণা মেডরিভ আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

সংস্থার দাবি, কোভ্যাক্সিন প্রয়োগে সেই অর্থে কোনও ক্ষতিকর প্রভাব দেখতে পায়নি ‘ডেটা সেফটি মনিটরিং বোর্ড। বরং অন্যান্য প্রতিষেধকগুলির তুলনায় ওই টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার হার কম। টিকাপ্রাপ্রকদের মধ্যে ১২ শতাংশের হালকা জ্বর ও মাথা ব্যথার মতো উপসর্গ লক্ষ্য করা গিয়েছে। কেবল ০.৫ শতাংশ টিকাপ্রাপকদের শরীরে গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া লক্ষ করা গিয়েছে। সংস্থার দাবি, এটি মৃত ভাইরাস নির্ভর প্রতিষেধক হওয়ায় মানবদেহে কোনও বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। তাদের টিকা প্রয়োগে ক্ষতিকর প্রভাব হলে ক্ষতিপূরণ যাতে দিতে না হয়, সেজন্য দর কষাকষি করছে মডার্না, ফাইজ়ার-সহ একাধিক বিদেশি প্রতিষেধক সংস্থা। কিন্তু ভারত বায়োটেকের দাবি, তাদের প্রযুক্তি এতটাই উন্নত যে কোভ্যাক্সিনের জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়া থেকে ছাড়ের কোনও দাবি জানানো হয়নি
কেন্দ্রের কাছে।

বর্তমানে ইরান, ব্রাজিল, মেক্সিকো-সহ মোট ১৬টি দেশে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের ছাড়পত্র পেয়েছে কোভ্যাক্সিন। কিন্তু হু-র ছাড়পত্র না থাকায় এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। আজ ভারত বায়োটেকের অন্যতম কর্ণধার কৃষ্ণা ইলা জানান, অন্যান্য প্রতিষেধকের তুলনায় এ দেশে সব থেকে বেশি সংখ্যক মানুষের উপর পরীক্ষা চালানোর ভিত্তিতে কোভ্যাক্সিনের কার্যকারিতা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়েছে।

ভারত বায়োটেক ছাড়াও কোভ্যাক্সিন প্রতিষেধক তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)। বিভিন্ন সময়ে কোভ্যাক্সিন নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে আইসিএমআর-কে। এ বার তৃতীয় পর্যায়ের ফলাফল আসায় স্বস্তিতে আইসিএমআর কর্তা বলরাম ভার্গবও। তিনি বলেন, ‘‘কোভ্যাক্সিনের সাফল্য দেশের গবেষণালব্ধ জ্ঞান ও প্রতিষেধক শিল্পকে বিশ্বের আঙিনায় প্রতিষ্ঠা করল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Vaccine Covaxin Bharat Biotech
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE