প্রশান্ত কিশোর। ফাইল চিত্র।
প্রশান্ত কিশোরের মন্তব্যে আলোড়ন বিহার রাজনীতিতে। তিনি এই মুহূর্তে সংযুক্ত জনতা দল (জেডিইউ)-এর সহ-সভাপতি। কংগ্রেস এবং লালুপ্রসাদের সঙ্গে তৈরি করা মহাজোট থেকে বেরিয়ে যে ভাবে নীতিশ কুমার বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন, তা তিনি মেনে নিতে পারেননি। শনিবার সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।
তাঁর এই মন্তব্যের পরই মহাজোট ভাঙার জন্য নীতীশের সমালোচনায় ফের সরব হয়েছে কংগ্রেস এবং রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)। আর দলের সহ-সভাপতির এই মন্তব্যে স্বাভাবিক ভাবেই অস্বস্তিতে জেডিইউ শিবির।
২০১৫ সালে বিহার বিধানসভার নির্বাচনে প্রবল মোদী হাওয়া রুখে দিয়েছিল নীতীশ কুমার নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস, আরজেডি এবং জেডিইউ মহাজোট। সেই সময় অনেকেই তাঁকে সারা দেশে মোদী বিরোধী মঞ্চের অন্যতম মুখ হিসেবে দেখতে শুরু করেছিলেন। যদিও বিহারে বিরোধীদের সেই মধুচন্দ্রিমা বেশি দিন টেকেনি। পরের বছরই মহাজোট থেকে বেরিয়ে গিয়ে বিজেপির সঙ্গে নয়া গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন নীতীশ। নীতীশের এই ঐতিহাসিক ‘পাল্টি’কে বরাবরই নজিরবিহীন বিশ্বাসঘাতকতা বলে এসেছে কংগ্রেস এবং আরজেডি। এ বার নীতিশের সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুললেন খোদ দলের সহ-সভাপতি প্রশান্ত কিশোর।
সংবাদসংস্থাকে দেওয়া ভিডিয়ো সাক্ষাৎকারে প্রশান্ত কিশোর বলেছেন, ‘‘বিহারের কথা মাথায় রাখলে জোট ছাড়ার সিদ্ধান্ত হয়তো সঠিক ছিল। কিন্তু যে ভাবে তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, তা ঠিক নয়। এই কথা আমি আগেও বলেছি। বিজেপির সমর্থনে মুখ্যমন্ত্রী না হয়ে ওঁর সরাসরি নির্বাচনে যাওয়া উচিত ছিল।’’
আরও পড়ুন: ভোটপ্রচারে সেনার বীরত্ব! বন্ধ করতে কমিশনকে চিঠি প্রাক্তন নৌসেনা প্রধানের
রাজনীতির ময়দানে নীতীশ কুমারের বারবার শিবির বদলের ঘটনা প্রসঙ্গে প্রশান্ত কিশোর বলেছেন, ‘‘ভারতে শিবির পাল্টানোর ঘটনা নতুন কিছু নয়। অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু বা ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক-ও বহুবার এক শিবির থেকে অন্য শিবিরে গিয়েছেন।’’
মহাজোট ভেঙে নীতীশের বেরিয়ে যাওয়া নিয়ে প্রশান্ত কিশোরের এই মন্তব্য নয়া অস্ত্র তুলে দিয়েছে বিহারের বিরোধীদের। আরজেডি-র বক্তব্য, ‘এত দিন ধরে আমরা নীতীশের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনতাম, এখন জেডিইউ-এর জাতীয় সহ সভাপতিও একই কথা বললেন। আমরাও মনে করি মহাজোটকে পিছন থেকে বিশ্বাসঘাতকতার ছুরি মেরেছিলেন নীতীশ।’
আরও পড়ুন: নয়া পাকিস্তান গড়তে হলে সন্ত্রাসবিরোধী নয়া পদক্ষেপও জরুরি, ইমরান সরকারকে খোঁচা কেন্দ্রের
দলের সহ-সভাপতির মন্তব্যে অস্বস্তিতে পড়া জেডিইউ অবশ্য জানিয়েছে, ‘যখন নীতীশ কুমার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তখন জেডিইউতে ছিলেন না প্রশান্ত কিশোর। তাই এই মন্তব্য ওঁর একান্ত ব্যক্তিগত মত।’
রাষ্ট্রপুঞ্জের জনস্বাস্থ্য বিভাগের প্রাক্তন কর্মী এবং ভারতের প্রথম বিশেষজ্ঞ প্রচার কৌশলী প্রশান্ত কিশোর গত বছরই যোগ দিয়েছিলেন জেডিইউতে। রাজনীতির ময়দানে সরাসরি পা রাখার পর তাঁর একাধিক বিতর্কিত মন্তব্যে অস্বস্তিতে পড়েছে জেডিইউ। কিছু দিন আগেই তিনি বলে বসেছিলেন, প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর রাজনীতিতে আসা ভারতে একটি বহুপ্রতীক্ষিত বিষয়। পরে অবশ্য একটু পিছু হঠে তিনি জানিয়েছিলেন, লোকসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগে কংগ্রেসে যোগ দিয়ে বিশেষ কিছু বদলাতে পারবেন না প্রিয়ঙ্কা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy