নিজেদের সাংস্কৃতিক আন্দোলনে গ্রামের মানুষকে পাশে পেতে নাটক নিয়ে গ্রামে গেল ‘কোরাস’। চারদিন ধরে চষে বেরিয়েছে বরাক উপত্যকার তিন জেলার বিভিন্ন গ্রাম। ১৯৯১ সাল থেকে এই ভাবনায় কাজ করছেন ওই সংস্থার সদস্যরা। প্রথম পর্বে লাগাতার তিন বছর চলে এই সাংস্কৃতিক পরিক্রমা। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর দ্বিতীয় পর্বের সূচনা হয় ২০১৪ সালে। এ বার চতুর্থ বর্ষের পরিক্রমা হয় ২৬ জানুয়ারি থেকে। সঙ্গে কলকাতার নাট্যদল ‘কল্যাণী কলামণ্ডলম’। আখর বাউল ছিল বইয়ের প্রদর্শনী নিয়ে। ‘ফোরাম ফর সোশ্যাল হারমনি’ দেখায় তথ্যচিত্র।
কোরাসের কর্মকর্তারা বলেন, কৃষিভিত্তিক গ্রামীণ অর্থনীতি এখন ধ্বংসপ্রায়। এর দরুন চাষিরা এখন দিনমজুর। তা প্রভাব ফেলেছে তাঁদের সংস্কৃতিতেও। একই অবস্থা চা বাগানগুলিতে। মজুরি-অসন্তোষে বাগান শ্রমিকরা কেউ ছাদ ঢালাইয়ের কাজ করেন। কেউ হচ্ছেন দোকান কর্মচারী। ফলে সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলার জায়গা ক্রমে নষ্ট হচ্ছে। সব জায়গায় থাবা বসাচ্ছে কর্পোরেট পুঁজি। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্যই পরিক্রমা বলে জানান তাঁরা। ১১টি জায়গায় অনুষ্ঠান করে সংস্থা।
চতুর্দিকে গেল গেল রব উঠলেও কোরাসের ধারণা ভিন্ন। সংস্থার বক্তব্য— তরুণ, কিশোর-কিশোরীরা তাদের ভাবনায় আকৃষ্ট হচ্ছে। তিন-চার রাত এখানে-ওখানে কাটাতে হবে জেনেও গ্রামের উদ্দেশে বেরিয়ে আসে। গ্রামেও কিশোর-কিশোরীদের গান-আবৃ্ত্তির জন্য এগিয়ে আসতে দেখা গিয়েছে। তবে বার বারই তাদের মনে হয়েছে, উপত্যকায় নেতৃত্বের অভাব প্রকট। রাস্তাঘাটের জন্য চলাফেরা দায়। সে নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে মন খুলে কথা বলা যায় না। একই ভাবনায় ৮ ফেব্রুয়ারি দেওয়ান বাগানে আয়োজন করা হয়েছে প্রতিযোগিতামূলক ঝুমুর ও কাঠি নাচ প্রতিযোগিতা। এটি তাদের চতুর্থ বর্ষের কর্মসূচি। আগের বছরগুলিতে এই প্রতিযোগিতা হয় বরশিঙ্গা, নারায়ণছড়া ও ডলুতে। দেওয়ানের কর্মসূচি সার্থক করে তুলতে চা শ্রমিকদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। রাধেশ্যাম কল তার সম্পাদক। সঙ্গে রয়েছেন রতন কাহার ও শ্যামল তাঁতি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy