Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Delhi Violence

Delhi Violence: সাহসিকতার পুরস্কার চান দিল্লি হিংসায় বিজেপি নেতার হুমকির প্রতিবাদ না করা সেই ২৪ পুলিশ

বর্তমানে রাষ্ট্রপতি ভবনে কর্মরত বেদপ্রকাশ। তাঁর দাবি, দিল্লিতে হিংসা চলাকালীন অত্যন্ত তৎপরতার সঙ্গে নিজের কর্তব্য পালন করেন তিনি।

কপিল মিশ্রের পাশে নির্বিকার ভাবে দাঁড়িয়ে বেদপ্রকাশ।

কপিল মিশ্রের পাশে নির্বিকার ভাবে দাঁড়িয়ে বেদপ্রকাশ।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২১ ১২:৫৬
Share: Save:

সংশোধিত নাগরকিত্ব আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে তখন ফুঁসছে রাজধানী। সেই সময় শাগরেদদের পাশে নিয়ে হুমকি দিয়েছিলেন কপিল মিশ্র। মুহূর্তের মধ্যে সেই ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছিল নেটমাধ্যমে। তাতে বিজেপি নেতার পাশে নির্বিকার ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছেল উত্তর-পূর্ব দিল্লির তৎকালীন ডেপুটি কমিশনার বেদপ্রকাশ সূর্যকে। দিল্লি হিংসায় তৎপরতার সঙ্গে কর্তব্য পালনের জন্য তিনিই এ বার সাহসিকতার মেডেল চেয়ে আবেদন জানালেন।

প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষা, অপরাধ দমন এবং কুখ্যাত অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের জন্য পুলিশকর্মীদের ‘প্রেসিডেন্টস পুলিশ মেডেল ফর গ্যালান্ট্রি’ সম্মান দেওয়া হয়। গলায় মেডেল পরিয়ে কুর্নিশ জানানো হয় তাঁদের সাহসিকতাকে। সেই সম্মান চেয়ে এ বার নিজে থেকে আবেদন জানিয়েছেন দিল্লি পুলিশের ২৪ জন আধিকারিক ও কর্মী, যাঁদের উপস্থিতিতে ২০২০ সালে রাজধানীর বুকে পাঁচ দিনব্যাপী হিংসার আগুন জ্বলতে দেখা গিয়েছিল। প্রাণহানি হয়েছিল ৫৩ জনের।

দিল্লি পুলিশ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীনে। সেখানকার পুলিশকর্মীদের সাহসিকতার পদক দেওয়ার বিষয়টিও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকেই পরিচালিত হয়। তার জন্য পুলিশ সদর দফতরের শীর্ষ আধিকারিকরা কর্মীদের নাম সুপারিশ করেন। দিল্লির পুলিশ কমিশনার তার মধ্যে অনুমোদন দিলে, তার পর তা কেন্দ্রে পাঠানো হয়। সম্প্রতি পুলিশ সদর দফতরে নিজের নাম সুপারিশের জন্য পাঠিয়েছেন বেদপ্রকাশ। যুগ্ম কমিশনার অলোক কুমারও আবেদন পাঠিয়েছেন। ‘অসাধারাণ কার্য পুরস্কার’-এর জন্যও আবেদন করেছেন দিল্লি পুলিশের ২৩ জন আধিকারিক ও কর্মী। ১৪ জন পদোন্নতির জন্য আবেদন জানিয়েছেন।

দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, দক্ষ হাতে তিন-চার দিনের মধ্যে হিংসা সামাল দিয়েছেন বলে নিজের আবেদনপত্রে দাবি করেছেন বেদপ্রকাশ। হিংসা চলাকালীন শতাধিক মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছেন, পাথরবৃষ্টি চলাকালীনও মানুষের সাহায্যে দৌড়ে গিয়েছেন, ফোনে যাঁরা সাহায্য চেয়েছেন, যত শীঘ্র সম্ভব ছুটে গিয়েছেন, এমন দাবিও করেছেন তিনি। এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসেই দিল্লি পুলিশের হেড কনস্টেবল হমেন্দ্র রাঠির পদোন্নতি হয়। হিংসা চলাকালীন নিহত আইবি আধিকারিক অঙ্কিত শর্মার খুনের কিনারা করতে এবং অভিযুক্ত হাসিন কুরেশিকে গ্রেফতার করতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জড়ো করেছিলেন, তাই তাঁকে পুরস্কৃত করা হচ্ছে বলে সেই সময় জানানো হয়।

রাজধানীর হিংসায় দিল্লি পুলিশের ভূমিকা ঘিরে শুরু থেকেই বিতর্ক। সেই পুলিশকর্মীদের ধরে ধরে পুরস্কৃত করা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বেদপ্রকাশের আবেদন নিয়েও তাই সামলোচনা শুরু হয়েছে। কারণ গত বছর ২৩ ফেব্রুয়ারি মৌজপুর ট্র্যাফিক সিগনালে দাঁড়িয়ে সিএএ সমর্থকদের উদ্দেশে কপিলের ওই ভাষণের পরই আগুন জ্বলে ওঠে উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে। বেদপ্রকাশকে পাশে নিয় সেইসময় কপিল বলেন, ‘‘আপনাদের প্রতিনিধি হয়ে এসেছেন ডিসিপি সাহেব। আমি ওঁকে বলতে চাই, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট এখন ভারতে রয়েছেন। তাই শান্তিতে চলে যাচ্ছি আমরা। এর পর কিন্তু আর আপনার কথা শুনব না। রাস্তা খালি না হলে, আমরা নামব।’’

পুলিশ আধিকারিককে পাশে নিয়ে এমন উস্কানিমূলক করার পাশাপাশি, নেটমাধ্যমেও নিজে সেই ভিডিয়ো পোস্ট করেন কপিল। সেই একাধিক মামলা দায়ের হলেও, আদালতে তিরস্কৃত হলেও, কপিলের বিরুদ্ধে এখনও কোনও পদক্ষেপ করেনি দিল্লি পুলিশ। কর্তব্যে গাফিলতি নিয়ে বেদপ্রকাশের বিরুদ্ধেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। বরং গত ২৪ ফেব্রুয়ারি উত্তর-পূর্ব দিল্লি থেকে সটান রাষ্ট্রপতি ভবনে দায়িত্ব দিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে। হিংসার সময় দিল্লির পুলিশ কমিশনার পদে ছিলেন যে এসএন স্রীবাস্তব, সময়ের আগেই পদোন্নতি হয় তাঁর। এঁরা প্রত্যেকে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র উমর খালিদ, জামিয়া কোঅর্ডিনেশন কমিটির মিডিয়া কোঅর্ডিনেটর সফুরা জারগার এবং পিঞ্জরা তোড়ের কর্মী দেবাঙ্গনা কলিটা এবং নাতাশা নরওয়ালের বিরুদ্ধে তদন্তকারী দলের শামিল ছিলেন। দিল্লি হিংসায় এঁদের সকলকেই গ্রেফতার করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE