Advertisement
E-Paper

‘বিপর্যয় হয়নি কংগ্রেসের’, অ্যান্টনির মন্তব্যে বিতর্ক

কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা এ কে অ্যান্টনি এক মন্তব্য করে বিতর্ক বাধালেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৯ ০১:৪৮
—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

ভোটের ফলের দিন রাহুল গাঁধীর ইস্তফা পেশের খবর দলীয় সূত্রে জেনেই কংগ্রেসের নেতাদের মধ্যে পদ ছাড়ার ইচ্ছাপ্রকাশের প্রবণতা দেখা দিয়েছে। আজ মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস কমিটির সভাপতি থেকেও ইস্তফা দিতে চাইলেন কমল নাথ। যিনি আজ দিল্লিতে দলের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকেও আসেননি। কিন্তু এমন এক টালমাটাল অবস্থায় আজ

কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা এ কে অ্যান্টনি এক মন্তব্য করে বিতর্ক বাধালেন। তিনি দাবি করলেন, ‘‘কংগ্রেসের বিপর্যয় হয়নি। শুধু প্রত্যাশামাফিক ফল হয়নি।’’

দলের সভাপতি পদ থেকে রাহুল গাঁধীর সরে যাওয়ার প্রস্তাব আজ ওয়ার্কিং কমিটি খারিজ করেছে। এই কথা শোনাতেই আজ বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন গুলাম নবি আজাদ, এ কে অ্যান্টনির মতো প্রবীণ নেতারা। পাঁচ বছর আগেও দলের বিপর্যয়ের পরে এই অ্যান্টনিকে মাথায় রেখেই একটি কমিটি গঠন করেছিলেন সনিয়া গাঁধী। সেই সময়েও দলকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর অনেক সুপারিশ করেন অ্যান্টনি। অথচ পাঁচ বছর পরেও কংগ্রেসের আসন সংখ্যা ৪৪ থেকে বেড়ে ঠেকে গিয়েছে ৫২-তে। লোকসভায় প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদাও এ বারে পাবে না তারা।

কিন্তু অ্যান্টনির কথা শুনে আজ দলের মধ্যেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। দলের অনেকেই বলছেন, ‘‘কংগ্রেসের শোচনীয় হার হয়েছে, এ কথা মেনে নিতে আপত্তি কোথায়? এই বাস্তবটি মানলে তবেই না ভবিষ্যতে সংশোধনের অবকাশ থাকবে। অ্যান্টনি প্রবীণ নেতা। কিন্তু তাঁর আজকের মন্তব্য তো অনেকটা কপিল সিব্বলের জিরো-লস তত্ত্বের মতো। টু-জি কাণ্ডের পরে তিনি বলেছিলেন, কোনও লোকসানই হয়নি। তখনও এমন বিতর্ক হয়েছিল।’’

তবে এ দিনের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে সনিয়া গাঁধী-রাহুল গাঁধী-প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাদের সামনে অনেক নেতাই মুখ খোলার চেষ্টা করেছেন। অনেকে সাফ জানিয়েছেন, নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ যে পর্যায়ে গিয়ে ভোট করেন কংগ্রেস তার ধারেকাছে নেই। মোদী গরিবদের জন্য শৌচালয় তৈরি করে, তাঁদের বাড়িতে রান্নার গ্যাস, বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়ে সম্মান বাড়িয়েছেন। ফলে জাতপাতের সমীকরণ মুছে এখন গরিবদের মুখেও মোদী-নাম হচ্ছে। তার উপরে রয়েছে জাতীয়তাবাদ ও মেরুকরণ। যে কারণে রাহুল গাঁধীর ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ আর রাফালের অভিযোগও সে ভাবে দাগ কাটতে পারেনি। অনেক নেতা এমনটাও জানিয়েছেন, ইভিএম নিয়ে কংগ্রেস এত হইচই করলেও বাস্তবে কোথাও কোনও অভিযোগ তোলার সুযোগ ছিল না। দলীয় সূত্রে খবর, মধ্যপ্রদেশের তরুণ নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার কড়া সমালোচনা করেছেন রাহুল। বৈঠকে রাহুল অভিযোগ করেন, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে সঠিক ভাবে প্রচার করতে পারেননি নেতারা। তাঁর সঙ্গে সুর মিলিয়ে সিন্ধিয়াও জানান, রাজ্যের নেতাদের আরও সক্রিয় ভাবে কাজ করা উচিত ছিল। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘এরপরে রাহুল সরাসরি সিন্ধিয়াকে বলেন, আপনিও তো একটি রাজ্যের নেতা। সেই রাজ্যে কী হল?’’ জোতিরাদিত্যের রাজ্য মধ্যপ্রদেশে মাত্র একটি আসন পেয়েছে কংগ্রেস।

বৈঠকে বলতে না পারলেও পরে ঘরোয়া আলোচনায় অনেক নেতা জানান, যে কোনও দলে একটি শৃঙ্খলা থাকে। সনিয়া গাঁধী যখন সভানেত্রী ছিলেন, বৈঠকে সবার পরে পৌঁছতেন। সেটিই নিয়ম। রাহুল সভাপতি হওয়ার পরে সনিয়া তাঁর আগে বৈঠকে পৌঁছন। আজও তার অন্যথা হয়নি। কিন্তু প্রিয়ঙ্কা আজ রাহুলের সঙ্গেই আসেন। এটিও বেনজির। পরিবার আর দল আলাদা রাখা উচিত। তার উপরে রাহুল-প্রিয়ঙ্কা নিজের টিমে যাঁদের উপরে ভরসা রেখে চলছেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও বিস্তর অসন্তোষ রয়েছে দলের অন্য নেতাদের। তাঁরা ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যও নন। কিন্তু আজ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে তাঁদের বসিয়ে দেন ভাই-বোন। অ্যান্টনি অবশ্য বলেন, ‘‘আজ হারের বিষয় নিয়ে মোটের উপরে

আলোচনা হয়েছে। বিশদ আলোচনা হয়নি। পরের বৈঠকে পূর্ণাঙ্গ আলোচনা হবে।’’

AK Antony Election Results 2019 Lok Sabha Election 2019 লোকসভা ভোট ২০১৯ লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy