Advertisement
০২ ডিসেম্বর ২০২৩
Serial Killer

Cyanide Mallika: সায়ানাইড দিয়ে পর পর খুন! ধনী হওয়ার নেশায় সাধারণ মহিলা থেকে হয়ে উঠেছিলেন সিরিয়াল কিলার

তার প্রথম শিকার ১৯৯৯ সালে। বেঙ্গালুরুর বাইরে মমতা রাজন নামে বছর তিরিশের এক মহিলাকে খাবারের সঙ্গে সায়ানাইড মিশিয়ে খুন করে।

কেডি কেম্পাম্মা ওরফে সায়ানাইড মল্লিকা।

কেডি কেম্পাম্মা ওরফে সায়ানাইড মল্লিকা।

সংবাদ সংস্থা
বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২২ ১৩:৩৮
Share: Save:

খুব অল্প বয়সেই বিয়ে হয়ে গিয়েছিল তার। অভাবী পরিবারে বেড়ে ওঠা মেয়েটির বিয়েও হয়েছিল আরও একটি অভাবী পরিবারে। ফলে অনটন ছিল নিত্যসঙ্গী। স্বামী দর্জির কাজ করতেন। সংসার চালাতে তাই নিজেকেও পরিচারিকার কাজে নামতে হয়।

যে সব বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করা শুরু করে, প্রতিটি পরিবারই বিত্তশালী ছিল। ফলে সেই পরিবারের সদস্যদের আদবকায়দা, বিলাসবহুল জীবনযাপনের প্রতি ক্রমে আকৃষ্ট হতে থাকে। ওঁদের মতো নিজেকে সাজানোর চেষ্টা করা শুরু করে। কিন্তু এক জন পরিচারিকার কাজ করে যে টাকা আয় করত, তা দিয়ে বিলাসবহুল জীবনযাপন, তার উপর সংসার খরচ— একটা অলীক কল্পনা ছাড়া আর কিছু ছিল না। কিন্তু সেই অলীককে বাস্তবে রূপায়িত করার পথ খুঁজতে গিয়ে যে সব বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করত, সেই বাড়িগুলিতেই ছোটখাটো চুরি করা শুরু করে।

ওই যে কথায় আছে, চোরের ১০ দিন, গৃহস্থের এক দিন। ফলে এক দিন ধরাও পড়ল সে। জেলেও যেতে হল। জেল থেকে ফিরে স্বামীর ঘরেও আর ঠাঁই হয়নি। কিন্তু এখানেই থেমে থাকেনি সে। চিটফান্ড সংস্থা বানিয়ে টাকা উপার্জনের চেষ্টা করে। সেটাও ঠিকমতো চলেনি। আর এখান থেকেই অপরাধের জগতে পা রাখা শুরু দেশের প্রথম মহিলা সিরিয়াল কিলার কেডি কেম্পাম্মার।

কর্নাটকের কগ্গলীপুরার বাসিন্দা সে। আসল নাম কেডি কেম্পাম্মা হলেও অপরাধ জগতে সে সায়ানাইড মল্লিকা নামেই পরিচিত। এক সাধারণ মহিলা থেকে সিরিয়াল কিলার হয়ে ওঠার কাহিনির শুরু এখান থেকেই। বেছে বেছে বিত্তশালী মহিলাদের শিকার বানাত কেম্পাম্মা। বিশেষ করে যাঁদের অর্থ থাকলেও কোনও মানসিক সুখ ছিল না, এমন মহিলাদের নিজের শিকার বানাত সে। প্রথমে তাঁদের সঙ্গে আলাপ জমাত, তার পর তাঁদের টাকা, গয়না সব লুট করে সায়ানাইড খাইয়ে খুন করত।

আরও টাকা চাই, আরও ধনী হওয়ার নেশায় একের পর এক খুন করে গিয়েছে কেম্পাম্মা। আর টাকা, গয়না লুঠ করেছে। প্রতিটি খুনে সায়ানাইড ব্যবহার করায় তার নাম হয়েছিল ‘সায়ানাইড মল্লিকা’।

পুলিশ জানিয়েছে, সমস্যা সমাধান করে দেওয়ার নামে পুজাপাঠের অছিলায় মহিলাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াত কেম্পাম্মা। তার প্রথম শিকার ১৯৯৯ সালে। বেঙ্গালুরুর বাইরে মমতা রাজন নামে বছর তিরিশের এক মহিলাকে খাবারের সঙ্গে সায়ানাইড মিশিয়ে খুন করে সে। তার পর তাঁর গয়না, টাকা লুট করে পালায়। ২০০৬ সালে এক মহিলাকে খুন করে লুট করার চেষ্টা করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়। সেই ঘটনায় কেম্পাম্মা ধরা পড়ে যায়। ছ’মাসের জন্য জেল হয় তার। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে তার এই কাজের গতি আরও বাড়ায় কেম্পাম্মা। এ বার অন্য কৌশল নেয় সে। কার সন্তান হচ্ছে না, কার বিয়ে, কার সংসারে অশান্তি— এ সব সমস্যা ঠিক করার নামে মহিলাদের নিজের শিকার বানাতে শুরু করে সে। সাত বছরে সাতটা খুন করে সে। প্রতিটি খুনের ক্ষেত্রে তদন্তকারীরা একই ধরন দেখতে পেয়েছিল। খুনের ধরনের সূত্র ধরে এগোতেই কেম্পাম্মার অপরাধের সঙ্গে মিল খুঁজে পাচ্ছিলেন তাঁরা। ২০০৮ সালে নাগবেণী নামে এক মহিলাকে সায়ানাইড দিয়ে খুন করার পর যখন টাকা গয়না নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে, তখনই পুলিশ কেম্পাম্মাকে গ্রেফতার করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE