Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

জওয়ানের জন্য মানুষের ঢল

তালিকায় নবতম সংযোজন বারামুলার পাট্টানে কংগোমডারা গ্রামের বাসিন্দা সিআরপিএফ জওয়ান মহম্মদ ইয়াসিন টেলি। কাল পুলওয়ামার পুলিশ লাইনে জঙ্গি হামলায় নিহত হন ইয়াসিন।

পাট্টানে মহম্মদ ইয়াসিনের শেষকৃত্যে। রবিবার। —নিজস্ব চিত্র।

পাট্টানে মহম্মদ ইয়াসিনের শেষকৃত্যে। রবিবার। —নিজস্ব চিত্র।

সাবির ইবন ইউসুফ
পাট্টান শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৭ ০৪:২২
Share: Save:

এক দিকে জঙ্গিদের শেষকৃত্যে মানুষের ঢল। অন্য দিকে জঙ্গিদের সঙ্গে লড়াইয়ে নিহত অফিসার বা জওয়ানের জাতীয় পতাকায় মোড়া দেহকে সম্মান জানাতে হাজির হাজার হাজার মানুষ। কোনটা সত্যি? কোনটা আসল কাশ্মীর? আজ বারামুলার পাট্টানে সিআরপিএফ জওয়ান মহম্মদ ইয়াসিন টেলির শেষকৃত্যের পরে এই প্রশ্নের জবাব দিতে পারছেন না বাহিনীর পোড়খাওয়া অফিসাররাও।

হিজবুল কম্যান্ডার বুরহান ওয়ানি খতম হওয়ার পর থেকেই অশান্ত কাশ্মীর। বছর ঘুরে গেলেও ছবিটা বিশেষ বদলায়নি। জঙ্গিদের পক্ষে সমর্থন বেড়েছে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা। তাদের খতম করতে গেলে বাহিনীকে লক্ষ করে পাথর ছুড়ছে স্থানীয়দের একাংশ। জঙ্গিদের শেষকৃত্যে ঢল নামছে মানুষের।

পাশাপাশি তরুণ সেনা অফিসার উমর ফয়েজ বা পুলিশ অফিসার ফিরোজ আহমেদ দারের মৃত্যুতেও জনতার ঢল দেখেছে কাশ্মীর। বিয়েবাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে উমর ফয়েজকে খুন করেছিল জঙ্গিরা। উমরকে এ ভাবে খুন করা নিয়ে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ জানিয়েছিলেন স্থানীয়দের একাংশ। পুলিশের টহলদারি দলের উপরে জঙ্গি হামলায় নিহত হন তরুণ অফিসার ফিরোজ আহমেদ দার। তাঁর শেষকৃত্যেও ঢল নেমেছিল মানুষের।।

তালিকায় নবতম সংযোজন বারামুলার পাট্টানে কংগোমডারা গ্রামের বাসিন্দা সিআরপিএফ জওয়ান মহম্মদ ইয়াসিন টেলি। কাল পুলওয়ামার পুলিশ লাইনে জঙ্গি হামলায় নিহত হন ইয়াসিন। আজ কংগোমডারার স্থানীয় খেলার মাঠে তাঁর দেহ নিয়ে আসে সিআরপিএফ ও পুলিশ। আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারা সকাল থেকেই ভিড় জমান ইয়াসিনের শেষকৃত্যে সামিল হতে। বিচ্ছিন্নতাবাদী হুরিয়তের গড় হিসেবে পরিচিত পাট্টান শহরও ছিল কার্যত জনশূন্য। শেষকৃত্যে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতি দেখে অবাক হয়ে যান সিআরপিএফের অফিসাররাও।

স্ত্রী ও দু’বছরের ছোট্ট ছেলে আছে ইয়াসিনের। আছেন অসুস্থ বাবা-মা, চার ভাই, চার বোন। দু’ভাই কাজ করেন সিআরপিএফ ও সেনায়। চোখের জল মুছে ইয়াসিনের স্ত্রী শাহমিমা বললেন, ‘‘ওর জন্য আমি গর্বিত। জীবন দিয়ে ও প্রমাণ করে গেল সন্ত্রাসকে মুছে ফেলতে সকলকেই এগিয়ে আসতে হবে।’’

জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের এক প্রবীণ অফিসার বলছেন, ‘‘মনে রাখতে হবে কোনও কাশ্মীরির প্রাণ গেলে আমাদেরই ঘরের ছেলে বা মেয়ে মারা যায়। সে জন্যই সন্ত্রাসের পথ থেকে স্থানীয় যুবকদের ফেরানোর চেষ্টা চালাচ্ছি আমরা। ঘরের ছেলের প্রাণ গেলে আপনজন পথে নামবেন, এটাই স্বাভাবিক নয়?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE