প্রশ্নটা ছিল আর কত দিন স্তব্ধ রাখা হবে কাশ্মীরকে। কিন্তু সেই প্রশ্নের জবাব দেওয়ার দায় এড়িয়ে গেলেন হুরিয়ত নেতারা। উল্টে তা নিয়ে বল ঠেলে দিলেন ব্যবসায়ী, শিক্ষাবিদ আর ধর্মীয় নেতাদের কোর্টে।
হিজবুল নেতা বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর থেকে চলা বিক্ষোভে যে ব্যবসার প্রচুর ক্ষতি হয়েছে তা আগেই জানিয়েছিলেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। বিশেষ ভাবে ক্ষতি হয়েছে পরিবহণ ব্যবসার। আটকে রয়েছে আপেলের মতো অনেক পণ্য বাজারে পৌঁছনোর কাজও। পর্যটকরা কাশ্মীরমুখী না হওয়ায় বড় ক্ষতির আশঙ্কা করছেন হোটেল মালিকরাও।
সেই সঙ্গে স্কুল পোড়ানোর নয়া বিভ্রাট শুরু হয়েছে কাশ্মীরে। তার বিরুদ্ধে হুরিয়ত সে ভাবে রুখে না দাঁড়ানোয় ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। এই পরিস্থিতিতে বিক্ষোভের ভবিষ্যৎ স্থির করতে গত মঙ্গলবার বৈঠকে বসেন হুরিয়ত নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানি, মিরওয়াইজ ওমর ফারুক ও মহম্মদ ইয়াসিন মালিক। আগেও তাঁরা আলোচনায় বসতে চেয়েছেন। কিন্তু প্রশাসনের অনুমতি মেলেনি। কিন্তু মঙ্গলবারের বৈঠকে বাদ সাধেনি সরকার।
নেতাদের বৈঠকের পরে হুরিয়তের তরফে জানানো হয়, সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করা হবে। আজ সেই বৈঠকই বসে শ্রীনগরের হায়দরপোরায় হুরিয়ত অফিসে।
হুরিয়ত সূত্রে খবর, বৈঠকে ব্যবসায়ীরা সপ্তাহে অন্তত তিন দিন ব্যবসা ও যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখার দাবি তোলেন। শিক্ষাবিদরা জানান, চার মাসের মধ্যে স্কুল খোলা প্রয়োজন। পরীক্ষা নিতে হবে। তার পরেই হুরিয়তে জানায়, বিক্ষোভ কী ভাবে চলবে তা শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়ী আর ধর্মীয় নেতারাই স্থির করুন।
বৈঠকের সময়ে অফিসের বাইরে জড়ো হন শ’য়ে শ’য়ে যুবক। কাউকে কাশ্মীরের ভবিষ্যৎ বিক্রি করতে দেওয়া হবে না বলে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। রাজনীতিকদের মতে, পরিস্থিতির চাপে হুরিয়ত কিছুটা নরম হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে ঠিকই। কিন্তু সেই সঙ্গে সমর্থকদের জড়ো করে পাল্টা চাপ দেওয়ার ব্যবস্থাও করেছিল তারা। পরে বিবৃতিতে জানানো হয়, সকলেই ‘প্রতিবাদ’ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে।
অন্য দিকে স্কুল পোড়ানো নিয়ে জম্মু-কাশ্মীর হাইকোর্টে আজ প্রবল সমালোচনার মুখে পড়ে মেহবুবা সরকার। বিচারপতি এস রামলিঙ্গম ও বিচারপতি আলি মহম্মদ মাগরের বেঞ্চ প্রশ্ন তোলে, রবিবারও দু’টি স্কুল পোড়ানোর চেষ্টা হয়েছে। তখন রাজ্য সরকারের আধিকারিকরা কী করছিলেন? রাজ্য প্রশাসন এক হলফনামায় জানিয়েছে, স্কুল পোড়ানো রোখার ক্ষেত্রে স্থানীয় বাসিন্দারা সাহায্য করছেন। গত কয়েক দিনে ১১ বার স্কুলে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা হয়েছে। ৬ বারই সেই চেষ্টা রুখে দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ানরা। স্কুলের অস্থায়ী কর্মীদের দল তৈরি করে নজরদারি চালানোর পরামর্শ দিয়েছে হাইকোর্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy