নয়াদিল্লিতে নিকি হ্যালি। —পিটিআই
২০১৫ সালের চুক্তি থেকে বেরিয়ে ইরান থেকে তেল আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে আমেরিকা। একই ভাবে ইরান থেকে তেল আমদানি বন্ধ করতে অন্য দেশগুলিকেও আর্জি জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু ভারত তাতে রাজি নয়। কূটনৈতিক চাপ বাড়াতে এবার ভারতকেও কার্যত ঘুরিয়ে ইরান থেকে তেল আমদানি বন্ধের পরামর্শ দিলেন ভারত সফররত রাষ্ট্রপুঞ্জের মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি।
দু’দিনের ভারত সফরে এসে বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘‘ভারতের উচিত ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনর্বিবেচনা করা। কোন দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নতি বা অবনতি করবে নয়াদিল্লি, তা আরও একবার ভেবে দেখা দরকার। ইরানের হাতে পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। সেই অস্ত্র দিয়ে কী করতে পারে, তা সবাই বুঝতে পারছে। সারা বিশ্ব এ নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং সহমত। তাই ভারতেরও উচিত এই বিষয়টি মাথায় রেখেই ইরানের সঙ্গে তেল বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করা। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও আমার কথা হয়েছে। সদর্থক আলোচনা হয়েছে।’’
২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে তেল আমদানি নিয়ে আমেরিকা, ভারত-সহ ছ’টি দেশ একটি চুক্তি করে। মঙ্গলবারই সেই চুক্তি থেকে বেরিয়ে এসেছে আমেরিকা। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সেই ঘোষণা করে সারা বিশ্বের কাছেই ইরান থেকে তেল আমদানি বন্ধ করতে আর্জি জানিয়েছেন। কিন্তু সেই আর্জি খারিজ করে নয়াদিল্লি জানিয়ে দিয়েছে, ২০১৫ সালের ওই চুক্তি মেনেই চলবে নয়াদিল্লি।
আরও পড়ুন: সুইস ব্যাঙ্কে ভারতীয়দের গচ্ছিত অর্থ বেড়েছে ৫০ শতাংশেরও বেশি
ইরান থেকে তেল আমদানীকারী দেশগুলির মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে চিন। তার পরেই ভারতের স্থান। এই পরিস্থিতিতে মার্কিন রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে নয়াদিল্লির এই ‘ঔদ্ধত্য’ ভাল চোখে নেয়নি হোয়াইট হাউস। হুমকি দেওয়া হয়েছে, নভেম্বরের মধ্যে আমদানি বন্ধ না করলে আর্থিক নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়বে ভারত।
ঘটনাচক্রে বৃহস্পতিবারই ভারত-মার্কিন ‘টু প্লাস টু’ বৈঠক বাতিল করেছে আমেরিকা। ৬ জুলাই ওই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। বৈঠকে যোগ দিতে আমেরিকা যাওয়ার কথা ছিল বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীর। সেখানে মার্কিন বিদেশ সচিব মাইক পম্পেয়ো ও প্রতিরক্ষা সচিব জেমস মাটিসের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ওই বৈঠক বাতিল করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: হেলসিঙ্কিতে ১৬ জুলাই শীর্ষ বৈঠকে বসছেন ট্রাম্প, পুতিন
বৈঠক বাতিল নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের যুক্তি, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ঐতিহাসিক বৈঠকের পরবর্তী পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে সোল যাচ্ছেন মাইক পম্পেয়ো। সেই কারণেই ওই বৈঠক বাতিল করা হয়েছে। হোয়াইট হাউসের তরফে বার্তা দেওয়া হয়েছে, বৈঠক বাতিল হলেও দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে কোনও প্রভাব পড়বে না। যদিও বৈঠক বাতিলের কারণ হিসাবে ভারতের তেল আমদানি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত থাকতে পারে, এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না কূটনৈতিক মহলের একাংশ।
এই পরিস্থিতিতে নিকি হ্যালির এই ‘পরামর্শ’ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল। অনেকেই আবার হ্যালির এই পরামর্শকে ভারতের উপর মার্কিন কূটনৈতিক চাপ হিসাবেও মনে করছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy