‘দ্য গার্ডিয়ান’ পত্রিকার সম্পাদকীয়তেও এই পদক্ষেপকে বাঁকা চোখেই দেখা হচ্ছে। সেখানে বলা হচ্ছে, ৩৭০ অনুচ্ছেদ তুলে দেওয়ার মধ্য বিজেপির গেরুয়াকরণ রাজনীতি আরও একবার মুখ দেখাল। ‘গার্ডিয়ান’-এর মতে, কাশ্মীর ইস্যুতে মোদী সরকারের পদক্ষেপ ‘আইনানুগ নয় বরং নিজেদের অবস্থানকেই স্পষ্ট করা।’ এই পত্রিকার মতে, এর মধ্যে কোনও লুকোচুরি নেই। ভোটের সময়েই বিজেপি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করার বিষয়ে। ভোটপ্রচারেই কংগ্রেসের ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শকে চ্যালেঞ্জ করা হয়। গার্ডিয়ানের অনুমান, এই প্রক্রিয়ায় কাশ্মীরের রক্তপাত আর হানাহানি থামবে না।
একই সুরে মত দিচ্ছে জার্মান গণমাধ্যম ‘ডি ডব্লিউ’। তাদের শিরোনাম বলছে, ‘আগুন নিয়ে খেলছে সরকার’। ‘ডি ডব্লিউ’-এর এশিয়া মহাদেশ বিভাগের সম্পাদক রডিন এব্বিগহসেন লিখছেন,‘কাশ্মীরের মুসলিম জনতা এবং এই উপত্যকার রাজনৈতিক প্রতিনিধিদের এই সিদ্ধান্তে আরও বিক্ষুব্ধ করে তুলবে। অতীতে সতর্কতা অবলম্বন করে কাশ্মীরে শান্তি আনার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমান সরকারের সিদ্ধান্তের ফলে যা দাঁড়াল তাতে কাশ্মীরে শান্তি আনা অসম্ভব। ’
কাশ্মীরের ক্ষমতা হ্রাস, তাকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার প্রক্রিয়াকে সমর্থন করছে না ‘আল জাজিরাও’। এই সংবাদমাধ্যমটি বিরুদ্ধস্বরগুলিকে উদ্ধৃত করেছে। তাদের শিরোনামে এই দিনটিকে অন্ধকারতম বলা হয়েছে। বলাই বাহুল্য ভারত সরকারের এই পদক্ষেপে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। আল জাজিরা বিশদে পাকিস্তানের প্রতিচ্ছবিও তুলে ধরেছে। কংগ্রেসের সুরেই ‘আল জাজিরা’ বলছে, ৩৭০ ধারা তুলে দিয়ে কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা কেড়ে নিয়ে তাকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করা একটি শ্বাসরোধকারী পদক্ষেপ।
উল্লেখ্য পাকিস্তানের অন্যতম সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ডন’বলছে, এই পদক্ষেপ ‘বলপ্রয়োগ’। ‘কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল বানিয়ে দেওয়া সমস্ত প্রতিশ্রুতির অবমাননা এমনকী রাষ্ট্রপুঞ্জেরও অবমাননা’, এমনটাই মত ‘দ্য ডন’-এর। কাশ্মীরের অন্য একটি সংবাদমাধ্যম ‘দ্য নিউজ’-এর মতে, এই ঘটনায় কাশ্মীরে অন্ধকার যুগের সূচনা হল। তাদের অনুমান, ভারত সরকার কাশ্মীরে মুসলিম জনগোষ্ঠীর সংখ্যাগরিষ্ঠতা হ্রাস করতে এই পদক্ষেপ নিয়েছে।