লখিমপুর খেরি জেলার নানপাড়া, মাখরোনিয়া, পালিয়াকালা গ্রামগুলিতে হরিষে বিষাদ। যে কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলন এবং আন্দোলনে নেমে এখানকার ভূমিপুত্রদের মৃত্যু— সেই দাবি আজ মুখে মেনে নিয়েছে সরকার। কিন্তু লখিমপুর ভুলতে পারছে না, যাঁদের প্রাণ গিয়েছিল গাড়ির ধাক্কায় ও গুলিতে, তাঁদের পরিবার চিরতরে নিষ্প্রদীপ। লখিমপুরের অভিযোগ, তাঁদের সন্তানদের হত্যাকারীর বাবা এখনও বহাল তবিয়তে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায়। অপরাধীদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত তাই শান্তি নেই এখানকার গ্রামবাসীর।
সকালে লখনউয়ে সাংবাদিক বৈঠকে প্রথমেই খেরির হত্যাকাণ্ডের কথা মনে করিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা বঢরা। তাঁর কথায়, “মোদী যখন আজ বক্তৃতা দিচ্ছিলেন, তা দেখতে দেখতে আমার লখিমপুরের শহিদ পরিবারের কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল। আমি তাঁদের পরিবারের কাছে গিয়েছি, কথা বলেছি। তাঁরা ভীত। স্বামী মারা গিয়েছেন, স্ত্রী বলছেন কী করে বাচ্চাদের বড় করবেন। অথচ প্রধানমন্ত্রী তার আগের দিন লখনউ এসেছিলেন। কোনও আশ্বাস তাঁর কাছ থেকে গ্রামবাসীরা পাননি।”
লখিমপুরে ৩ অক্টোবর মন্ত্রীর গাড়ির ধাক্কায় আখের খেতের ধারে ছটফট করতে করতে মারা গিয়েছিলেন কৃষক-সাংবাদিক-শিক্ষক রমন কাশ্যপ। ভাই পবন কাশ্যপ আজ ফোনে বললেন, “কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনি যতক্ষণ না ইস্তফা দিচ্ছেন, আমাদের শান্তি নেই। টেনি-ই তো বয়ান দিয়েছিলেন, দু’মিনিটে সব কৃষকদের সিধে করে দেবেন! তার প্রতিবাদেই তো আমার দাদা-সহ অন্যান্য কৃষকেরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে যায়। উনি কিছু না বললে তো যেত না এবং বেঘোরে মরতেও হত না।” আজকের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর মন্তব্য, “সুপ্রিম কোর্ট অপশাসনের গাছের গোড়া ধরে টান মেরেছে। কিন্তু গাছটা এখনও শুকিয়ে যায়নি। আইন প্রত্যাহারের কথা উঠল। এ বার নজর রাখতে হবে এবং অপেক্ষা করতে হবে, কখন গাছটা পড়ে যায়।”