Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ভোটে নেই নিহত জঙ্গির পরিবার

ছেলের মৃত্যুশোক কাটিয়ে উঠতে পারেননি মা ফরিদা। হৃদ্‌রোগে দীর্ঘদিন ধরে ভুগছেন তিনি।

ছবি: এপি।

ছবি: এপি।

সাবির ইবন ইউসুফ
হাজিন (বান্দিপোরা) শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:০৬
Share: Save:

গত ডিসেম্বরে মুদাসির রশিদ পারের হত্যার পর থেকে নিয়মিত খাওয়া জোটে না তার পরিবারের। বাড়িতে অসুস্থ বাবা-মা, প্রতিবন্ধী ভাই ও ছোট বোন। হাজিনের হানকা মহল্লার বাসিন্দা রশিদই ছিল একমাত্র রোজগেরে। মাস চারেক আগে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছে ১৪ বছরের এই জঙ্গি। সেই ভার এখনও বুক থেকে না নামায় ভোট থেকে দূরেই রয়েছে রশিদের পরিবার।

রশিদের বাবার কথায়, ‘‘আমার ছেলের রক্ত এখনও মাটিতে লেগে রয়েছে। তা ভুলে গিয়ে কী ভাবে আমরা ভোট দিতে যাব? আমার ছেলের রক্ত পেরিয়ে মানুষ ভোট দিতে যাক আমরা চাই না। কাশ্মীরের মানুষের জন্য ও জীবন দিয়েছ। ওর স্বপ্নের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের স্বপ্নও শেষ হয়ে গিয়েছে।’’ বান্দিপোরার হাজিনে ১৮০০ ভোটদাতার মধ্যে তিনটি ভোটকেন্দ্রে মাত্র দু’জন ভোট দিয়েছেন।

ছেলের মৃত্যুশোক কাটিয়ে উঠতে পারেননি মা ফরিদা। হৃদ্‌রোগে দীর্ঘদিন ধরে ভুগছেন তিনি। অসুস্থ স্বামী, প্রতিবন্ধী ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে অথৈ জলে তিনি। বলেছেন, ‘‘রশিদ শুধু আমার ছেলে ছিল না। আমার আশা-ভরসা ছিল ও। আমার আর এক ছেলে কাজ করতে পারেনা। ছোট ছেলে ঠিকাশ্রমিকের কাজ করে সংসার চালাত।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

গত ৩১ অগস্ট হাজিন শহরে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে জঙ্গিদের গুলির লড়াইয়ে নিহত হয় তিন জন বিদেশি জঙ্গি। এর পর পরই স্থানীয় কিশোর ১৬ বছরের সাকিব বিলালের সঙ্গে নিখোঁজ হয়ে যায় রশিদ। ৫ ডিসেম্বর সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি ভাইরাল হয়। এক হাতে এ কে ৪৭, অন্য হাতে ছুরি নিয়ে দাঁড়িয়ে ১৪ বছরের এক কিশোর। সেই ছবি ছড়িয়ে পড়ার পাঁচ দিন বাদে শ্রীনগরের মজগুন্দে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হয় দু’জনের। পুলিশ জানায়, উপত্যকার ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ জঙ্গি রশিদ ভিড়েছিল লস্কর ই তইবায়।

২০১৬ সালে পাথর ছোড়ার ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছিল রশিদ। এক সপ্তাহের বেশি থানায় আটক ছিল সে। পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সোপোরে সেনা-জঙ্গি সংঘর্ষে ঘনিষ্ঠ আত্মীয় আবিদ মিরের হত্যার পরে জঙ্গি দলে যোগ দিয়েছিল ওই কিশোর। সে কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে রশিদের বোন মইমুনা। সামান্য রোজগারে বোনের টুকিটাকি বায়না রাখত ভাই-ই। রশিদের বুলেটবিদ্ধ দেহের সঙ্গে চাপা পড়ে গিয়েছে সে সব আবদার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2019 Mudasir Rashid Terrorist
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE