Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

‘স্বৈরতন্ত্র’ ছেড়ে কংগ্রেসে শত্রুঘ্ন

বিজেপি নেতৃত্বকে অস্বস্তিতে ফেলতে প্রথম দিনে কংগ্রেসের মঞ্চ থেকেই নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের জমানায় বিজেপির অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন শত্রুঘ্ন।

আস্থা হাতে: বিজেপি থেকে বেরিয়ে কংগ্রেসে যোগ দিলেন শত্রুঘ্ন সিন্হা। শনিবার দিল্লিতে। পিটিআই

আস্থা হাতে: বিজেপি থেকে বেরিয়ে কংগ্রেসে যোগ দিলেন শত্রুঘ্ন সিন্হা। শনিবার দিল্লিতে। পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি ও পটনা শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:৩৭
Share: Save:

বিজেপির প্রতিষ্ঠা দিবসেই আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিলেন শত্রুঘ্ন সিন্‌হা। দেরি না-করে, এই দিনই পটনা সাহিব কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করে দিল কংগ্রেস। যে পটনা সাহিবে এ বার বিজেপি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদকে প্রার্থী করেছে।

আজ বিজেপির প্রতিষ্ঠা দিবসে নরেন্দ্র মোদী দাবি করেছিলেন, বিজেপি তার ‘গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ’-এর জন্যই মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে। বিজেপি নেতৃত্বকে অস্বস্তিতে ফেলতে প্রথম দিনে কংগ্রেসের মঞ্চ থেকেই নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের জমানায় বিজেপির অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন শত্রুঘ্ন। সরাসরি মোদী-অমিতকে নিশানা করে তাঁর অভিযোগ, বিজেপি এখন ‘ওয়ান ম্যান শো’ এবং ‘টু মেন আর্মি’-তে পরিণত হয়েছে। শত্রুঘ্ন বলেন, ‘‘ধীরে ধীরে গণতন্ত্রকে স্বৈরতন্ত্রে পরিণত হতে দেখলাম। ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দিনও শেষ। আমার এটাই দোষ হল যে, আমি সত্যি

কথা বলছিলাম।’’

দলে থেকেই ‘বাগী’ শত্রুঘ্ন কংগ্রেসে যোগ দিলে যে ‘খামোশ’ থাকবেন না, তা বিজেপি নেতৃত্বের জানাই ছিল। সেই আশঙ্কাকেই সত্যি করে, আজ কংগ্রেসের মঞ্চ থেকে বিজেপির অভ্যন্তরে লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলীমনোহর জোশী, যশবন্ত সিন্‌হা, অরুণ শৌরির মতো প্রবীণ নেতাদের অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শত্রুঘ্ন। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির সত্যিকারের মার্গদর্শকদের কোণঠাসা করে মার্গদর্শক মণ্ডলীতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। যার একটিও বৈঠক হয়নি।’’ নোট বাতিলের সিদ্ধান্তও নরেন্দ্র মোদী কারও সঙ্গে আলোচনা না-করেই নিয়েছেন বলে অভিযোগ তোলেন শত্রুঘ্ন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘যদি সত্যি কথা বলা বিদ্রোহ হয়, তা হলে আমি বিদ্রোহী।’’

পটনা সাহিবের দু’বারের সাংসদ দিল্লিতে কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পরে রবিবারই পটনা পৌঁছবেন। পটনা বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানাতে বিশেষ আয়োজন করছেন কংগ্রেস এবং আরজেডি কর্মীরা। এর পরে ৯ ও ১০ মার্চ বিহারে গয়া এবং কাটিহারে প্রচারে যাবেন রাহুল গাঁধী।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

২০১৪-য় মোদীর প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়াকে সমর্থন করেছিলেন বিজেপিতে আডবাণী-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত শত্রুঘ্ন। পটনা সাহিব থেকে মোদীর ইচ্ছেতেই টিকিট পান। তাঁর হয়ে পটনায় প্রচারও করেছিলেন মোদী। কিন্তু নির্বাচনের পরেই সমীকরণ বদলে যায়। সরকারে জায়গা মেলেনি শত্রুঘ্নের। আজ শত্রুঘ্ন বলেন, ‘‘আমি মুখ খুললে অভিযোগ ওঠে, মন্ত্রী না-করায় আমি ক্ষুব্ধ। যদি তা-ই হয়, তা হলে আমার প্রশ্ন, মন্ত্রী কেন করা হয়নি? আমার কি ব্যক্তিত্ব বা সততায় খামতি ছিল? দুর্নীতিগ্রস্ত ভাবমূর্তি ছিল?’’

শত্রুঘ্নের স্ত্রী পুনম সিন্‌হাকে লখনউয়ে রাজনাথ সিংহের বিরুদ্ধে প্রার্থী করা হতে পারে বলে জল্পনা তুঙ্গে। আজ এ নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে শত্রুঘ্ন বলেন, ‘‘আমি এখন শুধু বলব, কুছ ভি হো সকতা হ্যায়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE