Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

কিশোরীকে নিয়মিত যৌন নির্যাতন দত্তক পিতার!

নতুন বাবা গোপাল দাস জলসম্পদ দফতরের জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার, মা লাকি কলিতা বিদ্যুৎ দফতরে চাকরি করেন। রত্নার অভিযোগ, মে মাসে ওই বাড়িতে যাওয়ার পরে মাস তিনেক সেখানে ছিল সে।

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

উত্তম সাহা
শিলচর শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০৫:০৫
Share: Save:

এ বার হয়তো জীবনের অনিশ্চয়তা কাটল। এমনটাই ভেবেছিল রত্না (নাম পরিবর্তিত)। হোম-এর অনাথ জীবন থেকে রাতারাতি ‘দত্তক’ বাবা-মায়ের আশ্রয়ে আসা। কিন্তু সেখানে অপেক্ষা করেছিল অন্য সমস্যা।

নতুন বাবা গোপাল দাস জলসম্পদ দফতরের জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার, মা লাকি কলিতা বিদ্যুৎ দফতরে চাকরি করেন। রত্নার অভিযোগ, মে মাসে ওই বাড়িতে যাওয়ার পরে মাস তিনেক সেখানে ছিল সে। পালক পিতা তাকে নানা ভাবে বিরক্ত করতেন। যখন-তখন জড়িয়ে ধরা, তেল মালিশের হুকুম। পরে যখন আরও বাড়াবাড়ি শুরু হয়, তখন বিদ্রোহ করে রত্না। চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির মাধ্যমে হোমে ফেরে সে।

হোমে শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা হতেই ধরা পড়ে, তার উপরে নিয়মিত যৌন অত্যাচার হয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে হোমের তরফে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হয়। গ্রেফতার করা হয় ওই দম্পতিকে।

এখন প্রশ্ন উঠেছে রত্নার বয়স নিয়ে। বয়স ১৮ পেরোলে ভারতীয় ফৌজদারি কার্যবিধিতে বিচার হবে, না পেরোলে পকসো আইন কার্যকর হবে। বয়স প্রমাণে তাই রত্নাকে পুলিশের সঙ্গে ছুটতে হচ্ছে মেডিক্যাল কলেজে। গোপাল দাসের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন হোমের সচিব দিবা রায়। সেখান থেকেই বয়স নিয়ে প্রশ্ন। করিমগঞ্জের পুলিশ সুপার গৌরব উপাধ্যায় জানান, চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির হিসেবে রত্নার আনুমানিক ১৩ বছর হলেও অস্থি পরীক্ষার পরে মেয়ের বয়স ১৮ থেকে ২০ বছর বলে উল্লেখ করেছেন মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। ওই রিপোর্টের ভিত্তিতেই অভিযুক্ত আদালত থেকে অন্তর্বর্তী জামিন আদায় করে নিয়েছেন।

আরও পড়ুন: পথ-কুকুরকে ইট, প্রতিবাদে আক্রান্ত প্রৌঢ়

এর পরেই হোম কর্তৃপক্ষ দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী মানেকা গাঁধীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ওই মন্ত্রকের অধীনস্থ সেন্ট্রাল অ্যাডপশন রিসোর্স এজেন্সি-র চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার দীপক কুমার জানিয়েছেন, করিমগঞ্জের জেলাশাসককে রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছে। করিমগঞ্জের জেলাশাসক প্রদীপকুমার তালুকদার অবশ্য জানান, এখনও ওই নির্দেশ তাঁর কাছে পৌঁছয়নি। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন দীপক কুমার। তাঁর প্রশ্ন, মূল অভিযোগকে গুরুত্ব না দিয়ে পুলিশ কেন মেয়েটির বয়স নির্ণয়ের জন্য অস্থির হয়ে উঠল? তিনি বলেন, ‘‘জেলাশাসকেরও চিঠি না পাওয়ার কারণ থাকতে পারে না। মন্ত্রীর অফিস থেকেও পৃথক চিঠি পাঠানো হয়েছে।’’

আরও পড়ুন: ‘ডারউইনের থেকে ভাল দশাবতার তত্ত্ব!’

পুলিশ সুপার অবশ্য গাফিলতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘মামলা শিলচর থেকে করিমগঞ্জ আসতেই এক জন ডিএসপি-কে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৩ জানুয়ারি অভিযুক্তকে ফের আদালতে হাজির হতে হবে। সে দিন অভিযুক্তকে পুলিশি হেফাজতে আনার চেষ্টা করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Sexual Harassment Father Girl
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE