নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’-এর প্রশংসায় আজ উচ্ছ্বসিত হলেন আরএসএস-প্রধান মোহন ভাগবত। সেই সঙ্গে বললেন, ‘‘উপদ্রবকারীদের শায়েস্তা করা ও দেশের সুরক্ষায় নরেন্দ্র মোদী সরকারের যে দৃঢ় সঙ্কল্প রয়েছে, এটা খুব ভাল কথা।’’ অটলবিহারী বাজপেয়ীর আমলে অনেক সময়েই সরকারের সমালোচনায় সরব হতে দেখা গিয়েছে সঙ্ঘকে। মোদীর জমানায় সেই সুরটি বদলে গিয়েছে। বদলে গিয়েছে সঙ্ঘ-সদস্যদের পোশাকও। নয় দশকের খাকি হাফপ্যান্ট ছেড়ে সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠা দিবসে আজ থেকে ফুলপ্যান্ট ধরলেন সঙ্ঘ-সদস্যরা। প্রতি বছরের রীতি মেনে বিজয়া দশমীর সকালে আরএসএস-প্রধান আজ যে ভাষণটি দিলেন, তার মূল বার্তাটি স্পষ্ট, মোদী সরকারের প্রতি পুরো আস্থা রয়েছে সঙ্ঘের। তা সে সেনা অভিযানের প্রশ্নেই হোক, কিংবা গোরক্ষকদের প্রসঙ্গে। উত্তরপ্রদেশে ভোটের মুখে যা বাড়তি বল বিজেপির।
প্রধানমন্ত্রী কিছু দিন আগে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন, গোরক্ষকদের আসল-নকল নিয়ে প্রশ্ন তুলে। গোরক্ষার নামে কিছু লোক গুন্ডামি করছে— এ কথা স্বীকার করে নিয়ে প্রশাসনকে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিতে বলেন। যা নিয়ে সঙ্ঘের বিভিন্ন শাখা সংগঠনের কিছু নেতা বিষোদ্গার শুরু করেন। আজ কিন্তু ভাগবত মনে করিয়ে দিয়েছেন, বহু ভাল লোক গোরক্ষার সঙ্গে যুক্ত। বিশেষ করে জৈনরা তো এর প্রতি পুরোপুরি দায়বদ্ধ। কিন্তু কিছু লোক গোরক্ষার নাম করে ঝামেলা পাকাচ্ছে। প্রকৃত গোরক্ষকদের সঙ্গে এদের এক করে দেখা চলবে না। গুজরাতের উনা ও অন্যত্র গোরক্ষার নামে দলিত ও সংখ্যালঘুদের নিগ্রহের যে সব ঘটনা ঘটেছে, সেগুলিকে লজ্জাজনক আখ্যা দিয়ে ভাগবত বলেন, ‘‘এ সব ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে সরকারের ব্যস্থা নেওয়া উচিত।’’
তবে পাক সন্ত্রাসের মোকাবিলায় সরকারের দৃঢ়তার প্রশংসা করলেও কাশ্মীর প্রশ্নে এখনও যে অনেক কিছু করার রয়েছে, সে কথা স্মরণ করিয়ে দিতে ভোলেননি সরসঙ্ঘচালক। সরকারি ও কূটনীতির কাঠামোয় থেকে কাশ্মীর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যা সরাসরি বলতে পারেননি, তা-ও স্পষ্ট করে বলেছেন। মোদী সম্প্রতি বারবার পাক অধিকৃত কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে সরব হয়েছেন। এক ধাপ এগিয়ে ভাগবত মনে করিয়ে দেন, নিয়ন্ত্রণরেখার ও-পারে কাশ্মীরের যে অংশ রয়েছে তা-ও ভারতেরই অংশ। কাশ্মীরি পণ্ডিতদের পুনর্বাসন ও ভোটাধিকার দেওয়ার প্রসঙ্গও তোলেন ভাগবত। পাক অধিকৃত কাশ্মীর থেকে যে সব হিন্দু এসেছিলেন, এখন রয়েছেন তাঁদের তৃতীয় প্রজন্ম। এখনও তাঁদের রেশন কার্ড বা চাকরি-বাকরি নেই। এঁদের জন্য জম্মু-কাশ্মীর সরকার ও কেন্দ্রকে একই দিশায় একযোগে কাজ করতে হবে। জাতীয়তাবাদী শক্তিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আর যারা সমস্যা তৈরি করছে, কঠোর হতে হবে তাদের প্রতি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy