নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
কেরলে বন্যার অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চাইছেন অবিলম্বে দেশের সমস্ত গ্রাম ও শহরকে জিপিএস নেটওয়ার্ক-এর আওতায় নিয়ে আসতে। তা হলে বিপর্যয়ের সময়ে কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা বা গোষ্ঠীর অবস্থান সহজে চিহ্নিত করা যাবে|
কেন্দ্রীয় টেলিকমমন্ত্রী মনোজ সিংহ জানিয়েছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে খুব শীঘ্রই এই ব্যবস্থা চালু হবে। তবে বিষয়টি নিয়ে প্রতিটি রাজ্যের সঙ্গে কথা বলব। তাদের মতামত নেব।’’ কেরলের উদাহরণ দিয়ে সরকার বলছে, বন্যায় একটা গোটা বাড়ি ডুবে গিয়ে শুধু ছাদটা দেখা যাচ্ছিল। এ অবস্থায় জিপিএস-এর সাহায্যেই জানা গিয়েছে, ছাদের নীচে কারা রয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী নিজে কেরলের বন্যা মোকাবিলা নিয়ে আজ শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক ডাকেন। বৈঠকে স্বরাষ্ট্রসচিব, স্বাস্থ্যসচিব, টেলিকম সচিব ছাড়াও বিপর্যয় মোকাবিলা মন্ত্রকের সচিবও ছিলেন। সেই বৈঠকে সব রাজ্যগুলির কাছে প্রধানমন্ত্রীর আরও নির্দেশ— সব ক’টি রাজ্যে প্লাস্টিক ব্যবহার সম্পূর্ণ ভাবে বর্জন করতেই হবে।
মহারাষ্ট্র ইতিমধ্যেই প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের বক্তব্য, যদি মহারাষ্ট্র পারে, তা হলে অন্য রাজ্য পারবে না কেন? মনোজ বলেন, কেরলে জলের প্রকোপ কমার পর দেখা যাচ্ছে জল নিকাশি ব্যবস্থা আটকে আছে। কারণ প্লাস্টিক সমস্ত নালাগুলোর মুখ বন্ধ করে রেখেছে। এই পরিস্থিতিতে আজকের বৈঠকে উত্তরপ্রদেশ জানিয়েছে, তারাও প্লাস্টিক বর্জন করবে। দিল্লিতে আপ সরকারও এ কাজে অনেকটা এগিয়েছে।
কেরলের পর পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে আলাদা করে উদ্বিগ্ন পিএমও। তাদের বক্তব্য, কলকাতা শহরটা একটা গামলার মতো। অল্প জলেই ভেসে যায়। কেরলে ৭২ ঘণ্টায় ৬২০ মিলিমিটার বৃষ্টিতে যা পরিস্থিতি হয়েছে, তার চেয়ে অনেক কম বৃষ্টিতে কলকাতা ভেসে যেতে পারে। ফলে পিএমও-র মতে, সবার আগে কলকাতায় প্লাস্টিক ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ হওয়া প্রয়োজন|
প্লাস্টিকে রাশ টানা যে দরকার, সে ব্যাপারে দ্বিমত বিশেষ নেই। কিন্তু জিপিএস ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক আছে| যেমন কেরলেরই বাম সরকার মনে করে, গুগল স্যাটেলাইটের মাধ্যমে জিপিএস নেটওয়র্ক নিয়ন্ত্রণ করে মার্কিন সেনাবাহিনী। তাই এ ব্যাপারে চোখ বুজে ওদের সাহায্য নেওয়া উচিত নয়। এর চেয়ে ইসরোকে কাজে লাগানো ভাল।
কিন্তু প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এবং টেলিকম মন্ত্রকের বক্তব্য, ইসরো-ও দ্রুত এই ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাইছে ঠিকই। কিন্তু এর জন্য এখনও আরও বহু স্যাটেলাইট পাঠানো প্রয়োজন।
ইতিমধ্যে কলকাতা এবং আরও কিছু শহরে হ্যাম রেডিয়ো বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। নীতি আয়োগ এবং প্রধানমন্ত্রী সচিবালয় হ্যাম রেডিয়োর ভূমিকাকেও গুরুত্ব দিচ্ছেন। মোবাইল না থাকলেও হ্যাম রেডিয়োর মাধ্যমে যোগাযোগ গড়ে তোলা সম্ভব। কলকাতার হ্যাম রেডিয়ো-ম্যান আর্য ঘোষ নিজে বলছেন, ‘‘তামিলনাড়ু এবং কেরলে আমরা কাজ করেছি। তবে জিপিএস ব্যবস্থা কাজে লাগানোই শ্রেষ্ঠ পথ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy