মহুয়ার নিশানায় রাহুলের সমালোচক নিশিকান্ত দুবে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে ‘দেশকে অপমান’ করার অভিযোগ তুলে লোকসভা থেকে তাঁকে বরখাস্ত করার জন্য শুক্রবার দাবি তুলেছিলেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। শনিবার তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র অভিযোগ করলেন, নিশিকান্তের পিএইডি এবং এমবিএ ডিগ্রি জাল!
২০০৯ থেকে টানা তিনটি লোকসভা ভোটে ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা থেকে নির্বাচিত নিশিকান্ত তাঁর নির্বাচনী হলফনামায় সঙ্গে শিক্ষাগত যোগ্যতা সংক্রান্ত যে নথিগুলি পেশ করেছিলেন, তার প্রতিলিপি এবং এ সংক্রান্ত নথি পোস্ট করে ৩টি টুইট করেছেন মহুয়া। প্রথম টুইটে লিখেছেন, ‘‘মাননীয় সদস্য ২০০৯ এবং ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের হলফনামায় নিজেকে ‘দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের আংশিক সময়ের এমবিএ’ বলে উল্লেখ করেছেন। মনে রাখবেন, ২০১৯ সালের আগে শিক্ষাগত যোগ্যতার পুরো বিবরণ দেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল।’’
দ্বিতীয় টুইটে মহুয়ায় মন্তব্য, ‘‘দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় একটি প্রশ্নের জবাবে লিখিত ভাবে জানিয়েছে, মাননীয় সদস্যের (নিশিকান্ত) নামের কোনও ব্যক্তি ১৯৯৩ সাল থেকে সেখানে এমবিএ পাঠক্রমে ভর্তি হননি বা ডিগ্রি পাননি। তথ্যে অধিকার আইনে করা প্রশ্নেও একই জবাব মিলেছে।’’
Hon’ble Member in his 2009 and 2014 Lok Sabha affidavit claimed to be “part time MBA from Delhi University”. Please note- prior to 2019 full list of educational qualifications was required to be listed.
— Mahua Moitra (@MahuaMoitra) March 17, 2023
(1/3) pic.twitter.com/dcI3FaAuFa
এর পরের টুইটে নিশিকান্তকে নিশানা করে মহুয়ার মন্তব্য ‘‘২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের হলফনামায় মাননীয় সদস্য এমবিএর কোনও উল্লেখই করেননি! শুধু জানিয়েছেন, তিনি ২০১৮ সালে রাজস্থানের রানা প্রতাপ বিশ্ববিদ্যালয় পিএইচডি করেছেন। অনুগ্রহ করে মনে রাখুন, বৈধ মাস্টার্স (স্নাতকোত্তর) ডিগ্রি ছাড়া ইউজিসি স্বীকৃত কোনও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করতে পারেন না।’’
ঘটনাচক্রে, শুক্রবার কালীঘাটে তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠক এবং সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদবের আগমনের পরেই কংগ্রেস এবং রাহুলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে তৃণমূল। এমনকি, দলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘এ রাজ্যে কংগ্রেস এবং বিজেপি হাত মিলিয়ে চলছে। কেন্দ্রেও বিজেপি চাইছে রাহুল গান্ধীই বিরোধী শিবিরের মুখ হোন। কারণ, তাতে নরেন্দ্র মোদীর জিততে সুবিধা হবে!’’ তৃণমূল নিজের শক্তিতে অকংগ্রেস বিরোধী দলগুলিকে একজোট করার চেষ্টা চালাবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সুদীপের ওই মন্তব্যের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রাহুলের সাংসদ পদ খারিজের দাবি তোলা বিজেপি সাংসদকে মহুয়ার এই আক্রমণ ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে তৃণমূলের একটি অংশ মনে করছে। সেই সঙ্গে তাঁরা মনে করিয়ে দিচ্ছে, ২০০৮ সালে রাহুলের ডাকে সাড়া দিয়েই একটি বিদেশি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদের চাকরি ছেডে় যুব কংগ্রেসের ‘আম আদমি কা সিপাহি’ কর্মসূচিতে শামিল হয়েছিলেন মহুয়া। তৃণমূলে যাওয়ার পরেও ধারাবাহিক ভাবে বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ।
শুধু ডিগ্রি জালের অভিযোগ নয়। নিশিকান্তের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর ফৌজদারি মামলা রয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে গায়ের জোরে দেওঘর বিমানবন্দরের এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের সপুত্র ঘরে ঢুকে পড়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর-ও করেছিলেন।
নিশিকান্ত সংসদে বলেছিলেন, ‘‘লন্ডনে গিয়ে রাহুল গান্ধী যে মন্তব্যগুলি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে, তার সত্যতা যাচাই করতে একটি কমিটি গড়া হোক। কমিটির রিপোর্টে ভিত্তিতে প্রয়োজনে রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ করতে হবে।’’ এ বার বিজেপি সাংসদের ডিগ্রির সত্যতা যাচাইয়ের দাবি তুলে দিলেন, একদা রাহুলের ‘সিপাহি’ মহুয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy