Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

রাজ্যে রাজ্যে জয়রথ ছোটাতে নয়া অঙ্ক অমিত-মোদী জুটির

লোকসভার রেশ ধরে এ বারে হিন্দি বলয়ের বাইরে পশ্চিমবঙ্গ-সহ অন্য রাজ্য জয়ে নামছে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ জুটি। লোকসভায় সাফল্যের সূত্র ধরেই সে জন্য নতুন করে অঙ্ক কষতে শুরু করেছেন দু’জনে। বাজপেয়ী-আডবাণী যুগের অবসান ঘটিয়ে বিজেপিতে যে মোদী যুগ শুরু হয়েছে, তাতে আজ সিলমোহর পড়ল। যখন দলের জাতীয় পরিষদ সভাপতি হিসেবে অমিত শাহের নামে অনুমোদন দিল।

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৪ ০২:৫৩
Share: Save:

লোকসভার রেশ ধরে এ বারে হিন্দি বলয়ের বাইরে পশ্চিমবঙ্গ-সহ অন্য রাজ্য জয়ে নামছে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ জুটি। লোকসভায় সাফল্যের সূত্র ধরেই সে জন্য নতুন করে অঙ্ক কষতে শুরু করেছেন দু’জনে।

বাজপেয়ী-আডবাণী যুগের অবসান ঘটিয়ে বিজেপিতে যে মোদী যুগ শুরু হয়েছে, তাতে আজ সিলমোহর পড়ল। যখন দলের জাতীয় পরিষদ সভাপতি হিসেবে অমিত শাহের নামে অনুমোদন দিল। আর সেখানেই মোদী ও অমিত শাহের সম্পর্কের স্বাচ্ছন্দ্য ও ঘনিষ্ঠতা কারও নজর এড়াল না। এই জুটিই একযোগে পেশ করল পরবর্তী যুদ্ধজয়ের নকশা। যেখানে বিহারে সামনের উপনির্বাচন থেকে চার রাজ্যে বিধানসভা জয়ের কৌশল বলা হল। আর হিন্দি বলয়ের বাইরে পশ্চিমবঙ্গ থেকে তামিলনাড়ু হয়ে কেরল পর্যন্ত রাজ্যগুলিতে কী করে দলের শক্তি বাড়ানো হবে, তারও রূপরেখা পেশ করলেন দু’জনে। নতুন যুদ্ধে জয়ের ব্যাপারেও আত্মবিশ্বাসী প্রধানমন্ত্রী কারও নাম না করেই ঠুকলেন দলের সেই নেতাদের, যাঁরা লোকসভার আগে তাঁকে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, মোদীর পক্ষে তিনশো আসন আনা সম্ভব নয়। গুজরাতের বাইরে মোদীর কোনও অস্তিত্ব নেই। মোদী বুঝিয়ে দিলেন, দলে অনেকের বিরোধিতা সত্ত্বেও লোকসভা ভোটে তিনি যা বলেছেন, তা করে দেখিয়েছেন। এ বারে বাকি রাজ্যেও সমান ভাবে সফল হবে অমিত শাহের সঙ্গে তাঁর জুটি। বিদায়ী সভাপতি রাজনাথ সিংহকে ‘ক্যাপ্টেন’ বললেও আজ অমিত শাহকেই লোকসভা ভোটের ‘ম্যান অফ দ্য ম্যাচের’ শিরোপা দিলেন মোদী। মোদী এবং অমিত শাহ মিলেই যে এ বারে সরকার ও সংগঠনের মধ্যে সমন্বয় রচনা করে এগোবেন, তা আজ স্পষ্ট করে দিলেন দু’জনেই। মোদী বলেন, “এক পিএম-এ কাজ হবে না। সব বুথে ১৫০-২০০ জন করে পিএম লাগবে। এই পিএম আসলে প্রাইমারি মেম্বার (প্রাথমিক সদস্য)।” অমিত-মোদীর যুদ্ধজয়ের কৌশল কী?

এক, লোকসভা ভোটে বিপুল জয় নিয়ে আত্মতুষ্ট হলে চলবে না। দুই, নির্বাচনে জয়কে অভ্যাস করে ফেলতে হবে। জেতার খিদে চাই। তিন, পঞ্চায়েত থেকে লোকসভা সব ভোট জেতার মানসিকতা নিয়েই লড়তে হবে। চার, দলের নেতা-কর্মীরা কাজ করবেন সরকার ও দলের সেতু হিসেবে। সরকারের কাজ পৌঁছে দিতে হবে মানুষের কাছে। মানুষের প্রত্যাশা জানাতে হবে সরকারকে। পাঁচ, ১ নভেম্বর থেকে শুরু করতে হবে সদস্য সংগ্রহ অভিযান। ছয়, সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ই-রেজিষ্ট্রেশন করতে হবে। যুবকরা যেন দলের টানে আসে। সাত, এমন কোনও রাজ্য যেন না থাকে, যেখানে বিজেপি ক্ষমতা দখলের অবস্থায় নেই। সব রাজ্যেই বুথকে শক্তিশালী করতে হবে। প্রতিটি জেলা পরিষদ, পুরসভা ও স্থানীয় কর্পোরেশনে দলের উপস্থিতি শক্ত করতে হবে। আট, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, হিমাচল, বিহার, ওড়িশা, উত্তরাখণ্ড, অরুণাচল ও মেঘালয়ে বিজেপি অতীতে ক্ষমতা দখল করেছে। সেগুলি ফের দখল করতে হবে।

এই প্রসঙ্গেই অমিত শাহ, “উত্তরপ্রদেশে এই অঙ্ক নিয়েই আমি সাফল্য পেয়েছি। বাকি রাজ্যেও সেই সমীকরণ মেনে চলা হবে। পশ্চিমবঙ্গে ভোট বেড়েছে। দরকার সেটিকে আসনে পরিবর্তিত করা। তার জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।” সভা শেষে বিজেপির এক শীর্ষ নেতা বলেন, “লোকসভার রেশ থাকতে থাকতেই বাকি রাজ্যও দখল করা প্রয়োজন। শুধু রাজনৈতিক স্বার্থে নয়, উন্নয়নের স্বার্থেও। এখনও রাজ্যসভায় দুর্বল বিজেপি। আটকে যাচ্ছে সংস্কারের বিলগুলি। রাজ্যে দল যত শক্তিশালী হবে, রাজ্যসভার অঙ্কও বদলাবে।” তিনি বলেন, “এক যুদ্ধ জয়ের পর এখন মোদী-শাহ জুটি ফের নেমে পড়েছেন পরের লক্ষ্যপূরণে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE