Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

আরও অবারিত হচ্ছে উচ্চশিক্ষার রুশ দরজা

আর পাঁচ বছর! ভ্লাদিমির পুতিনের প্রশাসন পণ করেছে, এর মধ্যেই রাশিয়ার অন্তত এক ডজন বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বের প্রথম সারিতে তুলে আনবে! রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় এ দিকে লাগাতার আক্ষেপ করে চলেছেন, শিক্ষাগত উৎকর্ষে বিশ্বের প্রথম দু’‌শোটির মধ্যে ভারতের একটিও বিশ্ববিদ্যালয় নেই! গত আড়াই বছরে অন্তত ৫০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে গিয়ে এই একটিই বিষয় তুলে ধরেছেন তিনি। কিন্তু এই দুই ছবির মাঝে কোনও সেতুবন্ধ হতে পারে কি?

রাশিয়ার ডিপ্লোম্যাটিক আকাদেমি রাষ্ট্রপতিকে ডক্টরেট ডিগ্রি দিল শুক্রবার। প্রণব মুখোপাধ্যায়ই প্রথম ভারতীয় যাঁকে এই মর্যাদা দিল ক্রেমলিন। ঢাকা ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পর এই নিয়ে তৃতীয় কোনও প্রতিষ্ঠান থেকে ডক্টরেট গ্রহণ করলেন প্রণববাবু। — নিজস্ব চিত্র।

রাশিয়ার ডিপ্লোম্যাটিক আকাদেমি রাষ্ট্রপতিকে ডক্টরেট ডিগ্রি দিল শুক্রবার। প্রণব মুখোপাধ্যায়ই প্রথম ভারতীয় যাঁকে এই মর্যাদা দিল ক্রেমলিন। ঢাকা ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পর এই নিয়ে তৃতীয় কোনও প্রতিষ্ঠান থেকে ডক্টরেট গ্রহণ করলেন প্রণববাবু। — নিজস্ব চিত্র।

শঙ্খদীপ দাস
মস্কো শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৫ ০৩:৩৯
Share: Save:

আর পাঁচ বছর! ভ্লাদিমির পুতিনের প্রশাসন পণ করেছে, এর মধ্যেই রাশিয়ার অন্তত এক ডজন বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বের প্রথম সারিতে তুলে আনবে!

রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় এ দিকে লাগাতার আক্ষেপ করে চলেছেন, শিক্ষাগত উৎকর্ষে বিশ্বের প্রথম দু’‌শোটির মধ্যে ভারতের একটিও বিশ্ববিদ্যালয় নেই! গত আড়াই বছরে অন্তত ৫০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে গিয়ে এই একটিই বিষয় তুলে ধরেছেন তিনি।

কিন্তু এই দুই ছবির মাঝে কোনও সেতুবন্ধ হতে পারে কি?

রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পাঁচ দিনের রাশিয়া সফরকালে সেই সেতুবন্ধ রচনারই চেষ্টা করল মস্কো-নয়াদিল্লি। এ দেশের প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সঙ্গে ৮টি চুক্তি সই করল বম্বে ও মাদ্রাজ আইআইটি-সহ ভারতের বেশ কিছু উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষা ক্ষেত্রে ভারত-রুশ সহযোগিতার মানচিত্রে রয়েছে কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও খড়্গপুর আইআইটি-সহ ৭টি প্রতিষ্ঠানও। মূল উদ্দেশ্য, বিদেশসচিব জয়শঙ্করের কথায়, ‘‘রাশিয়ার প্রযুক্তিগত শিক্ষার সুযোগ ভারতীয় ছাত্রছাত্রীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া। ও মিলিত ভাবে দু’‌দেশের বিজ্ঞান গবেষণার বিকাশ ঘটানো।’’ জয়শঙ্কর জানাচ্ছন, এই সহযোগিতায় সামিল হবে রাশিয়ার টমস্ক বিশ্ববিদ্যালয়, স্কলকোভা ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স, লমনসভ মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়, উরাল ফেডারেল ইউনিভার্সিটি, হায়ার স্কুল অব ইকনমিক্স অব মস্কো-সহ কমবেশি ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আবার ২০১৫ সালে ভারত-রাশিয়া ৩৩টি নতুন গবেষণার বিষয়ও নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে সারাটভ স্টেট টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের সঙ্গে যৌথ গবেষণা করবে কলকাতার আইএসআই। মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটি গর্বিত অনেক নোবেল পুরস্কারজয়ীকে নিয়ে। তাদের সঙ্গে যৌথ গবেষণা করবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়।’’

ক্রেমলিনের তরফে বলা হচ্ছে, রাশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উচ্চশিক্ষার মান বাড়াতে ৫০০০ কোটি রুবেল বরাদ্দ করেছে পুতিন প্রশাসন। সাউথ ব্লকের মতে, এটাই নয়াদিল্লির সামনে সুযোগ এনে দিয়েছে। যৌথ গবেষণার সুযোগ যেমন বাড়বে, তেমনই প্রচুর মেধাবী ছাত্রছাত্রী বিদেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাবেন। অর্থসঙ্কট বড় হয়ে উঠবে না। বিদেশ মন্ত্রক জানাচ্ছে এ ক্ষেত্রে অনুঘটকের ভূমিকা নিয়েছেন স্বয়ং রাষ্ট্রপতি। ‘উপমহাদেশে শান্তি কায়েম রাখা ও ভারত-রাশিয়ার বন্ধুত্বকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অন্যতম কান্ডারি হিসেবে রুশ ডিপ্লোম্যাটিক আকাদেমি আজ প্রণববাবুকে সাম্মানিক ডক্টরেট দিল। পরে মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটিতে এক আলোচনাচক্রে অংশ নেন রাষ্ট্রপতি। তাঁর কথায়, ‘‘ভারতের রাষ্ট্রপতির প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নেই। কিন্তু এই পদের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই আমি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মানোন্নয়নের চেষ্টা করছি।’’ শুধু কথায় নয়, প্রণববাবু কাজেও তা করে দেখাচ্ছেন, বলে
পরে মন্তব্য করেন বিদেশসচিব জয়শঙ্কর। সাম্প্রতিককালে প্রণববাবুর সব ক’টি বিদেশ সফরে সঙ্গী হয়েছেন দেশের প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের প্রতিনিধিরা। তাঁর উদ্যোগে বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে শিক্ষাক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার পথে পা বাড়াচ্ছে নয়াদিল্লি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE