Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

জামিন অধরা দু’বছর, তিহাড়েই সুব্রত

ব্যাঙ্কের দেনা শোধ না করে বিজয় মাল্যর বিদেশে চলে যাওয়া নিয়ে গোটা দেশ তোলপাড়। বিরোধীরা মোদী সরকারের বিরুদ্ধে মাল্যকে পালিয়ে যেতে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৬ ০৪:০২
Share: Save:

ব্যাঙ্কের দেনা শোধ না করে বিজয় মাল্যর বিদেশে চলে যাওয়া নিয়ে গোটা দেশ তোলপাড়। বিরোধীরা মোদী সরকারের বিরুদ্ধে মাল্যকে পালিয়ে যেতে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। কিন্তু দেশের আর এক বহুচর্চিত ব্যবসায়ী, সহারার কর্ণধার সুব্রত রায় তিহাড় জেলে দু’বছর কাটিয়ে ফেললেন। যাকে এক কথায় বিরল ঘটনা বলেই দাবি করছেন সহারার আইনজীবীরা।

দু’বছর আগে, ২০১৪-র মার্চ মাসে সুপ্রিম কোর্ট সুব্রত রায়-সহ সহারার দুই শীর্ষ কর্তাকে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিল। সুব্রত রায় বিদেশে যাননি। জেলে বসেই আদালতের নির্দেশ মতো জামিনের অর্থ জোগাড় করার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন। সহারার বিরুদ্ধে সেবি-র অভিযোগ ছিল, বাজার থেকে বেআইনি ভাবে ২৪ হাজার কোটি টাকা তুলেছে ওই গোষ্ঠী। সহারা জানায়, ৯৫ শতাংশ টাকা তারা লগ্নিকারীদের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছে। যার অঙ্ক প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকা।

কিন্তু টাকা ফেরতের সেই দাবি সেবি মানতে চায়নি। এ অবস্থায় সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, সহারাকে ২৪ হাজার কোটি টাকা সেবি-র কাছেই জমা দিতে হবে। সেবি লগ্নিকারীদের পাওনা মেটাবে। তার ১০ হাজার কোটি টাকা জমা দেওয়ার পরেই সুব্রত রায় জামিন পাবেন।

সহারার পক্ষে এখন দাবি করা হচ্ছে, এখনও পর্যন্ত তারা সেবি-র কাছে ৩,৮০০ কোটি টাকা জমা দিয়েছে। অন্যান্য খাতে সেবি-র কাছে তাদের আরও ১২ হাজার কোটি টাকা জমা আছে। শুধু তাই নয়, সহারার ৪০ হাজার কোটি টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পত্তির নথিপত্রও সেবির কাছেই জমা রয়েছে। অথচ, চার বছরে সেবি মাত্র ৫০ কোটি টাকা লগ্নিকারীদের ফিরিয়ে দিতে পেরেছে। লগ্নিকারীদের এগিয়ে আসার জন্য চার বার সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়েও আর কারও সন্ধান মেলেনি।

গত মাসে সুপ্রিম কোর্টকে সহারা জানিয়েছে, জামিনের টাকার বন্দোবস্ত করতে তাদের মালিকানাধীন লন্ডনের গ্রসভেনর হাউস হোটেলটি কাতার সরকারকে বেচে দেওয়া হয়েছে। প্রাপ্য অর্থ সেবি-র কাছে জমা করা হবে। নিউইয়র্কে সহারার দু’টি হোটেল, প্লাজা ও ড্রিম ডাউনটাউনও বিক্রি করা হচ্ছে। মুম্বইয়ের সহারা স্টার হোটেল, ফোর্স ইন্ডিয়া ফর্মুলা ওয়ান টিমে সহারার মালিকানা ও চারটি বিমান বিক্রির জন্য আদালতের অনুমতি চেয়েছে ওই গোষ্ঠী। এ বিষয়ে সেবি-র বক্তব্য জানতে চেয়েছে শীর্ষ আদালত।

বিরোধীদের দাবি, শাসক দলের মদতেই রাজ্যসভার সাংসদ বিজয় মাল্য ব্রিটেনে চলে যেতে পেরেছেন। সহারার আইনজীবীদের দাবি, সুব্রত রায় কোনও রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতাও পাননি। দু’বছর জেলে থেকে বরং ‘লাইফ মন্ত্রাস’ নামে একটি বই লিখে ফেলেছেন। এর পরে তিহাড় জেলের অভিজ্ঞতা নিয়ে আরও দু’টি বই লিখবেন বলেও ঠিক করেছেন সহারার কর্ণধার। এরই মধ্যে আদালতের অনুমতি নিয়ে জামিনের অর্থ জোগাড়ের জন্য নিজের সম্পত্তি বিক্রি করতে ক্রেতাদের সঙ্গে তিহাড় থেকে বৈঠক করেছেন। সহারা-পরিবার এখন সুপ্রিম কোর্টে ২৯ মার্চের শুনানির দিকেই তাকিয়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

subrata roy tihar jail bail
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE