Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বিজেপিকে বিঁধলেন প্রফুল্ল মহন্ত, সমালোচনা গগৈয়েরও

উত্তর-পূর্বকে কংগ্রেসমুক্ত করার লক্ষ্যে আঞ্চলিক দলের যৌথমঞ্চ গঠনের শুরুতেই অরুণাচলপ্রদেশ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে মুখ পুড়েছিল বিজেপির। আজ শরিক দলের নেতা তথা অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল মহন্তের মন্তব্যেও বেকায়দায় পড়ল গেরুয়া বাহিনী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৬ ০৩:৫৭
Share: Save:

উত্তর-পূর্বকে কংগ্রেসমুক্ত করার লক্ষ্যে আঞ্চলিক দলের যৌথমঞ্চ গঠনের শুরুতেই অরুণাচলপ্রদেশ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে মুখ পুড়েছিল বিজেপির। আজ শরিক দলের নেতা তথা অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল মহন্তের মন্তব্যেও বেকায়দায় পড়ল গেরুয়া বাহিনী। সুযোগ বুঝে বিজেপির সমালোচনায় সরব তরুণ গগৈও।

অরুণাচলে পিপিএ-র হাত ধরে ক্ষমতা দখলের লক্ষ্যে এগোচ্ছিল বিজেপি। বাইরে থেকে সমর্থন দেওয়া পিপিএ সরকারের সদস্যদের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ বাড়াচ্ছিলেন দলের সভাপতি অমিত শাহ। উত্তর-পূর্বে মণিপুর, মিজোরাম, মেঘালয় থেকেও কংগ্রেসকে সরাতে ৯টি আঞ্চলিক দলের সঙ্গে জোট (নেডা) গড়ে বিজেপি। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের রায়ে পিপিএর হাত থেকে ক্ষমতা চলে গিয়েছে। নেডা থেকেও ইতিমধ্যে সরে গিয়েছে মিজোরাম ও মেঘালয়ের দু’টি দল।

এমনই পরিস্থিতিতে এ দিন শরিক দল অগপর অন্যতম স্তম্ভ প্রফুল্ল মহন্তের তোপের মুখে পড়ে বিজেপি। নেডার সমালোচনা করে প্রফুল্ল বলেন, ‘‘বিজেপি আঞ্চলিক দলগুলিকে শক্তিহীন করে নিজেদের দখলে আনতে চাইছে। তারা উত্তর-পূর্বের সমস্যা বুঝতে ও সমাধান করতে সচেষ্ট নয়।’’ এর আগেও ভ্যাট বাড়ানো, তৈল ক্ষেত্র নিলামের মতো প্রসঙ্গ নিয়ে বিজেপির সমালোচনা করেছিলেন মহন্ত।

বিজেপির দিকে এ দিন তোপ দাগেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈও। তিনি বলেন, ‘‘বিভিন্ন রাজ্যে বেআইনি ভাবে ক্ষমতা দখল করতে গিয়ে ধাক্কা খাচ্ছে বিজেপি। সুপ্রিম কোর্টের গত কালের রায় গোটা দেশে প্রয়োগ হবে। আশা করি, বিজেপির বেআইনি আগ্রাসনও বন্ধ হবে।’’ তাঁর অভিযোগ, অমিত শাহ ও নরেন্দ্র মোদীর ‘স্বৈরতন্ত্র’ চলছে দেশে। বিজেপি গণতন্ত্র ধ্বংস করতে চাইছে।

নেডা-র প্রসঙ্গে গগৈ বলেন, ‘‘কংগ্রেস মুক্ত উত্তর-পূর্ব গড়তে চেয়ে যে পরিমাণ অর্থ-শ্রম অপচয় করছে

বিজেপি, তার চেয়ে আগে বিদেশি ও বন্যামুক্ত অসম গড়ে দেখাক তাঁরা।’’ অরুণাচলের প্রাক্তন রাজ্যপাল

জ্যোতিপ্রসাদ রাজখোয়ার সমালোচনা করে গগৈ বলেন, ‘‘তিনি এক সময় আইএমডিটি আইনের বিরোধিতা করেন। পরে কংগ্রেস এলে তিনিই ওই আইনের পক্ষে কথা বলেন।’’

বিজেপি গত বছর বাংলাদেশ থেকে আসা নাগরিকদের অসমে থাকার অধিকার ও নাগরিকত্বের অধিকার দেওয়া নিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলেও এখনও সেই সংক্রান্ত আইন সংশোধন করেনি। কিন্তু, কাল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা অন্যান্য রাজ্যে বাংলাদেশ থেকে আসা শরণার্থীদের নাগরিকত্ব, সম্পত্তির অধিকার ও দীর্ঘমেয়াদি ভিসার প্রসঙ্গে সিদ্ধান্ত নেয়।

গগৈ বলেন, ‘‘ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব বা অন্য সুবিধা দেওয়া উচিত নয়।’’ তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্র বিজ্ঞপ্তি দিয়ে অসমে থাকা হিন্দু বাংলাদেশিদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে বলে জানিয়েও তা নিয়ে আইন আনছে না। তাই ওই শরণার্থীদের এখনও জেলে যেতে হচ্ছে। ভোটের আগে ওই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে অনেক সমর্থন পেয়েছে বিজেপি। তা নিয়ে তাই তাঁদের আগে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল। তাঁর দাবি— অসমের নাগরিকত্ব সমস্যায় গুরুত্ব না দিয়ে বিজেপি দীর্ঘমেয়াদি ভিসা নিয়েই ব্যস্ত। কেন্দ্র অসমের সমস্যা নিয়ে স্পষ্ট করে আইন আনুক।

হাগ্রামা মহিলারি নেডা-য় অসমের সমস্যা নিয়ে কেন্দ্রের অবহেলা প্রসঙ্গে সরব হয়েছিলেন। প্রাক্তন জোট শরিকের বক্তব্যকে সমর্থন করে গগৈ বলেন, ‘‘হাগ্রামার অভিযোগ ঠিক। বড়োদের সমস্যা নিয়ে বিজেপি কিছুই করছে না।’’

তৈলক্ষেত্র নিলামের প্রসঙ্গে গগৈয়ের মত, ‘‘নিলামের সিদ্ধান্ত হঠকারি। যদি তৈলক্ষেত্র ফেলে রাখায় ক্ষতি হচ্ছিল, তা হলে মানুষকে বুঝিয়ে, সকলের মত নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল। দেশের তেল ও গ্যাস সংস্থাদের হাতে খননের ভার তুলে দিতে পারত কেন্দ্র।’’

অন্য দিকে, কার্বি আংলং জেলার বৈঠালাংশুর কংগ্রেস বিধায়ক মানসিংহ রংপি এ দিন বিধানসভার সচিব মৃগেন্দ্রকুমার ডেকার কাছে পদত্যাগপত্র পাঠান। তিনি বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন বলে জানিয়েছেন। রংপি এর আগে কংগ্রেস নেতৃত্বে বদলের দাবিতে সরব হয়ে বিক্ষোভ করেছিলেন। তিনি জানান, প্রয়োজনে ফের নির্বাচন লড়ে বৈঠালাংশুর বিধায়ক হতে তৈরি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Prafulla Mahanta BJP Tarun Gogoi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE