Advertisement
১০ ডিসেম্বর ২০২৪

বাঁধের হাল নিয়ে রাজ্যওয়াড়ি তথ্য বিনিময়ের প্রস্তাব

বাংলায় বন্যা হলে ঝাড়খণ্ডের ঘাড়ে দোষ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! এ নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি।

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৮ ০২:১৩
Share: Save:

বাংলায় বন্যা হলে ঝাড়খণ্ডের ঘাড়ে দোষ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! এ নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। দামোদর, অজয় কিংবা ময়ূরাক্ষীতে ঝাড়খণ্ডের ছাড়া জল এ রাজ্য ভাসিয়ে দিচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রীর আনা সেই যুক্তি মেনে এ বার নড়েচড়ে বসছে কেন্দ্র। দেশের বিভিন্ন বাঁধ বা জলাধার থেকে আগাম কিছু না জানিয়ে চাইলেই জল ছেড়ে দেওয়ার প্রবণতা বন্ধ করতে চায় কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রক। কেরলের ভয়াবহ বন্যা থেকে অন্তত তেমন শিক্ষাই মিলেছে বলে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে রাজ্যগুলিকে।

কেন্দ্রীয় জলসম্পদ সচিব ইউ পি সিংহ সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্যসচিব মলয় দে’কে চিঠি দিয়ে এ ব্যাপারে প্রস্তাব দিয়েছেন। তাতে বলা হয়েছে, ন্যাশনাল হাইড্রোলজি প্রোজেক্ট-এর অধীনে দেশের সমস্ত জলাধারের রক্ষণাবেক্ষণ এবং সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে ‘রিয়েল টাইম’ তথ্য রাজ্যগুলির মধ্যে আদানপ্রদান করা হবে। তার জন্য একটি পৃথক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। রাজ্যস্তরে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য জলাধার সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য যাতে হাতে থাকে সেই কারণেই এমন ব্যবস্থা বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় সচিব। পাশাপাশি রাজ্যগুলির কাছে এ নিয়ে মতামতও চাওয়া হয়েছে।

গত অগস্টে কেরলের বন্যার ৩০০ জনের বেশি মানুষ মারা যান। হাজার হাজার বাড়িঘরে জল ঢুকে বিপর্যস্ত হন অনেকে। এই বিপর্যয়ের সময়ে সাধারণ মানুষ থেকে বিশেষজ্ঞদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে কেরলের ৪৪টি জলাধারের প্রসঙ্গ। উঠে আসে পেরিয়ার নদীর উপরে পশ্চিমঘাট পর্বতে মুল্লাপেরিয়ার বাঁধ নিয়েও। পেরিয়ার বাঁধ নিয়ে বিবাদ গড়ায় পড়শি দুই রাজ্য তামিলনাড়ু এবং কেরলেও। কেরলের অভিযোগ ছিল মুল্লাপেরিয়ার বাঁধের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব তামিলনাড়ুর হাতে থাকায় তারা বাড়তি জল ছেড়েছে। ফলে কেরলের চারটি জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা ভেসে গিয়েছে। আবার কেরলের ৪৪টি জলাধার থেকে পর পর জল ছাড়ার ফলেও ভেসে যায় কেরলের বহুলাংশ।

কেন্দ্রীয় সচিব সেই অভিজ্ঞতা থেকেই রাজ্যগুলির কাছে একটি জাতীয় প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে চেয়েছেন। কেন্দ্র মনে করছে, দেশে বন্যার মূলত চারটি কারণ। প্রবল বৃষ্টিপাত, মজে যাওয়া নদী ও খালের বহনক্ষমতা কমে যাওয়া, বন্যার আগাম সতর্কতা জারির ব্যবস্থা না হওয়া এবং দেশের জলাধারগুলির ব্যবস্থাপনার কোনও প্রক্রিয়া শুরু না হওয়া। বৃষ্টিপাতের মতো প্রাকৃতিক কারণে প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ না থাকলেও বাকিগুলি নিয়ে সরকারের অনেক কিছুই করার আছে বলে মনে করেন কেন্দ্রীয় সচিব। মুখ্যসচিবকে লেখা চিঠিতে তিনি জানান, ন্যাশনাল হাইড্রোলজি প্রোজেক্ট-এ দেশের জলাধারগুলির অবস্থা নিয়ে রিয়েল টাইম তথ্য দেওয়া-নেওয়া করার নির্দিষ্ট প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে।

কেন্দ্রের প্রস্তাব মেনে রাজ্যও কিছু মত জানাচ্ছে। রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের এক কর্তা জানান, যদি সত্যিই জলাধারগুলির অবস্থা সব রাজ্য জানতে পারে, তা হলে আগাম ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। সঠিক তথ্য দেওয়া-নেওয়া হয় না বলেই বন্যার সময় সবচেয়ে বেশি ভুল বোঝাবুঝি হয়। যদি সবার জলাধারের খবর সব রাজ্যের কাছে থাকে, তা হলে ঝাড়খণ্ডের অবস্থা নবান্ন থেকে বসেই জানা যাবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Information Dam State Government
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy