সুষমাকে ‘ধন্যবাদ’ দিয়েছেন রাহুল। কিন্তু রাহুলের এই ধন্যবাদে রাজনৈতিক খোঁচাই দেখছেন বিশ্লেষকরা। ছবি: পিটিআই।
বিদেশ মন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে ‘ধন্যবাদ’ দিলেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত ভারত যতটা উন্নতি করেছে, তার পিছনে কংগ্রেস সরকারের অবদানকে সুষমা স্বরাজ অবশেষে স্বীকৃতি দিয়েছেন। টুইটারে এমনই মন্তব্য করলেন রাহুল। রাষ্ট্রপুঞ্জে ভাষণ দেওয়ার সময় পাকিস্তান আর ভারতের রাষ্ট্রীয় দৃষ্টিভঙ্গির ফারাক তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলেন সুষমা। বিদেশ মন্ত্রী বলেছিলেন, ভারত আইআইটি আর আইআইএম বানিয়েছে, পাকিস্তান এলইটি (লস্কর) আর জেইএম (জইশ) বানিয়েছে। সুষমার ভাষণের এই অংশকেই তুলে ধরে রাহুল মনে করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন, জওহরলাল নেহরুর সরকারই আইআইটি এবং আইআইএম গড়ার পরিকল্পনা করেছিল।
রাহুল গাঁধী টুইটারে লিখেছেন, ‘‘সুষমাজি, আইআইটি এবং আইআইএম বানানোর যে মহান লক্ষ্য কংগ্রেস সরকার নিয়েছিল, তাকে শেষ পর্যন্ত স্বীকৃতি দিলেন বলে আপনাকে ধন্যবাদ।’’
শনিবার রাষ্ট্রপুঞ্জ সাধারণ পরিষদের সভায় ভাষণ দেন সুষমা স্বরাজ। পাকিস্তানকে তীব্র আক্রমণ করেন তিনি। সুষমা বলেন, ‘‘আমরা বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি চর্চার জন্য আইআইটি এবং আইআইএম-এর মতো প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছি, যা গোটা বিশ্বের গর্ব। কিন্তু পাকিস্তান বিশ্বকে বা নিজের জনগণকে সন্ত্রাস ছাড়া আর কী দিয়েছে? আমরা পণ্ডিত, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারের জন্ম দিয়েছি। আপনারা কীসের জন্ম দিয়েছেন? আপনারা সন্ত্রাসবাদী তৈরি করেছেন। ডাক্তাররা মানুষকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচান, সন্ত্রাসবাদীরা মানুষকে মৃত্যুর কাছে পাঠায়।’’
রাষ্ট্রপুঞ্জে নিজের ভাষণে ভারতের উন্নতির সূচক হিসেবে আইআইটি এবং আইআইএম-এর কথা উল্লেখ করেছেন সুষমা। তাকেই অস্ত্র করছে কংগ্রেস। ছবি: এপি।
সুষমার এই ভাষণের কথা শোনার পরে কংগ্রেস সহ-সভাপতি আর সুযোগ হাতছাড়া করেননি। জওহরলাল নেহরুর প্রধানমন্ত্রিত্বে ১৯৫০ সালে দেশে প্রথম আইআইটি (ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি) তৈরি হয় পশ্চিমবঙ্গের খড়্গপুরে। ১৯৫৬ সালে আইআইটি-খড়্গপুরের প্রথম সমাবর্তনে নেহরু ভাষণ দেন এবং ভারতের ভবিষ্যতের জন্য এই প্রতিষ্ঠান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে বলে আশা প্রকাশ করেন। সে বছরই আইআইটি-খড়্গপুরকে ‘জাতীয় গুরুত্বের প্রতিষ্ঠান’ হিসেবে ঘোষণা করে সংসদ।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপুঞ্জের সভায় পাকিস্তানকে কী বলে খোঁচা দিলেন সুষমা?
১৯৬১ সালে দেশের প্রথম আইআইএম (ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট) তৈরি হয় কলকাতায়। তখনও প্রধানমন্ত্রী নেহরুই। পশ্চিমবঙ্গ সরকার, এমআইটি, ফোর্ড ফাউন্ডেশন এবং দেশের শিল্প মহলকে সঙ্গে নিয়ে আইআইএম তৈরি করেন নেহরু।
আরও পড়ুন: নিজের বিপদ ডেকে আনছে আমেরিকা, রাষ্ট্রপুঞ্জে হুঙ্কার উত্তর কোরিয়ার
পরবর্তী কালে দেশে আইআইটি এবং আইআইএম-এর সংখ্যা বেড়েছে। দেশে এখন ২৩টি আইআইটি এবং ২০টি আইআইএম রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলির সুনাম শুধু দেশে নয়, গোটা বিশ্বেই রয়েছে। আইআইটি এবং আইআইএম তৈরির যে পরিকল্পনা নেহরুর আমলে হয়েছিল, রাষ্ট্রপুঞ্জে তার প্রশংসা করে সুষমা স্বরাজ আসলে কংগ্রেস সরকারের সাফল্যকেই স্বীকৃতি দিয়েছেন বলে রাহুল গাঁধী মন্তব্য। এর জন্য সুষমাকে টুইটারে ধন্যবাদই দিয়েছেন রাহুল। কিন্তু সে ধন্যবাদে রাজনৈতিক খোঁচাই দেখছেন বিশ্লেষকরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy