ইয়াকুব মেমনের ফাঁসি হওয়ার কথা ৩০ জুলাই। তার ঠিক তিন দিন আগে পঞ্জাবে আত্মঘাতী জঙ্গি হামলায় প্রশ্ন উঠল, মেমনের ফাঁসির জন্যই কি এই পরিস্থিতি?
১৯৯৩-এর মুম্বই-হামলার অন্যতম ষড়যন্ত্রী ইয়াকুব মেমন তার ফাঁসি রদের আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিল। আজ শীর্ষ আদালতে মামলার শুনানি হলেও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। আগামিকাল ফের শুনানি। কিন্তু এই ফাঁসির সঙ্গে গুরুদাসপুর কাণ্ডের কোনও যোগ আছে কি? স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তথা গোয়েন্দা বাহিনীর কর্তারা বলছেন, সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহকেও এ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। কিন্তু রাজনাথ বলেন, ‘‘এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়।’’ এখনই নির্দিষ্ট যোগাযোগের প্রমাণ না মিললেও গুরুদাসপুরের হামলার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক কোনও রকম ঝুঁকি নিচ্ছে না। মেমনের ফাঁসির জন্য এমনিতেই মহারাষ্ট্রে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছিল। গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে, ওই ফাঁসি নিয়ে বিভিন্ন স্তরে মতবিরোধের জেরে মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলে যথেষ্ট উত্তেজনা রয়েছে। আজ কেন্দ্রও মুম্বই, নাসিক, নাগপুর ও পুণেতে কড়া সতর্কতা জারি করেছে।
রাষ্ট্রপতি যখন প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ করেছেন, সে সময়ও আদালতে মেমনের প্রাণভিক্ষার আবেদনের ফয়সালা হয়নি। এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগির কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। মেমনের আইনজীবী রাজু রামচন্দ্রন অভিযোগ তোলেন, টাডা আদালত ৩০ এপ্রিল নির্দেশ দেয়, ৩০ জুলাই ইয়াকুবের ফাঁসি হবে। আদালত ফাঁসির নির্দেশ ও ফাঁসির দিনের মধ্যে ৯০ দিনের ব্যবধান রাখলেও ইয়াকুবকে গত ১৩ জুলাই আদালতের নির্দেশের কথা জানানো হয়। ফাঁসির দিনের মাত্র ১৭ দিন আগে।
গত কালই প্রায় ৩০০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কাছে মেমনের ফাঁসি মকুবের আর্জি জানিয়েছিলেন। এ বিষয়ে এখনও রাষ্ট্রপতি কোনও সিদ্ধান্ত নেননি বলেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর। বিচারপতি অনিল দাভে ও বিচারপতি কুরিয়ান জোসেফ অবশ্য স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ইয়াকুবের অপরাধে ফাঁসি যথোচিত শাস্তি কি না, সেই বিতর্কে তাঁরা ঢুকবেন না।
আজ অ্যাটর্নি জেনারেল রোহতগি যুক্তি দিয়েছেন, মেমনের সামনে সমস্ত আইনি পথ শেষ হয়ে গিয়েছে। তাই এখন আর তার প্রাণভিক্ষার আবেদন শোনার কোনও যুক্তি নেই। রাজ্য সরকারও দিনক্ষণ মেনেই মেমনের ফাঁসি দিতে চায়। কিন্তু মেমনের যুক্তি, মহারাষ্ট্রের রাজ্যপালের কাছে সে আবেদন করেছে। গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্ট তার আবেদন খারিজ করার পরেই রাজ্যপালের কাছে আবেদন করা হয়।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এইচ এল দাত্তূর নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ গত ২২ জুলাই মেমনের প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ করে দেয়। ওই বেঞ্চের যুক্তি ছিল, নিয়ম অনুযায়ী এখন আর মেমনের পক্ষে আবেদন করা সম্ভব নয়। মেমনের আর্জি ছিল, সে স্কিৎজোফ্রেনিয়ায় ভুগছে। গত ২০ বছর ধরে জেলবন্দি। অর্থাৎ, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের মেয়াদের থেকেও বেশি সময় ধরে সে জেলে রয়েছে। একই অপরাধের জন্য কারও একই সঙ্গে যাবজ্জীবন ও মৃত্যুদণ্ড হতে পারে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy