কেটে গিয়েছে পাঁচ মাস। তবু পঠানকোট বায়ুসেনা ঘাঁটির ফস্কা গেরোকে বজ্র আঁটুনি করার ব্যবস্থা হয়নি বলে জানাল সংসদীয় কমিটি। পঠানকোট হামলায় পঞ্জাব পুলিশের ভূমিকা নিয়েও বড়সড় প্রশ্ন তুলেছেন কমিটির সদস্যেরা। কমিটির রিপোর্ট খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে কেন্দ্র।
চলতি বছরের দ্বিতীয় দিনে পঠানকোট ঘাঁটিতে হামলা চালায় পাক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের সদস্যেরা। তার এক দিন আগে গুরদাসপুরের পুলিশ সুপার সলবেন্দ্র সিংহের গাড়ি ছিনতাই করেছিল জঙ্গিরা। সেই গাড়িতেই তারা বায়ুসেনা ঘাঁটির দিকে এগোয় বলে মনে করেন গোয়েন্দারা। সলবেন্দ্রর গাড়ি ছিনতাই হওয়ার পরে জঙ্গি হামলা নিয়ে পঠানকোট ঘাঁটিকে সতর্কও করা হয়। তা সত্ত্বেও কেন জঙ্গিরা ঘাঁটিতে ঢুকে দীর্ঘ লড়াই চালাতে পেরেছিল তা নিয়ে তখনই প্রশ্ন উঠেছিল।
সম্প্রতি পঠানকোট ঘাঁটি পরিদর্শনে যান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যেরা। আজ সেই পরিদর্শনের ভিত্তিতে রিপোর্ট দিয়েছে কমিটি। তারা সাফ জানিয়েছে, এখনও ঘাঁটির নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য কিছুই করা হয়নি। কমিটির চেয়ারম্যান প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পরিস্থিতি আগেও যা ছিল এখনও তাই আছে।’’
প্রদীপবাবু জানিয়েছেন, ঘাঁটির আশপাশের জঙ্গলে লুকিয়ে জঙ্গিদের লড়াই চালাতে সুবিধে হয়েছিল। পাঁচ মাস কেটে গেলেও সেই জঙ্গল সাফ করা হয়নি। আবার সীমান্ত সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে কমিটির সদস্যদের মনে হয়েছে সেখানেও সুরক্ষা ব্যবস্থার বড় কোনও পরিবর্তন হয়নি।
রিপোর্ট অনুযায়ী, যে ভাবে জঙ্গিরা বায়ুসেনা ঘাঁটিতে ঢুকেছিল তা গোটা দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। আবার তাদের পিছনে স্থানীয় মদত থাকার সম্ভাবনাও প্রবল। এই প্রসঙ্গেই উঠে এসেছে গুরদাসপুরের সুপার সলবেন্দ্র সিংহের কথা। সলবেন্দ্র, তাঁর বন্ধু রাজেশ বর্মা এবং রাঁধুনি মদনগোপালকে জঙ্গিরা মেরে গাড়ি থেকে ফেলে দেয় বলে দাবি পঞ্জাব পুলিশের। কিন্তু সেই দাবি নিয়ে সন্দেহ ছিল এনআইএ-রও। সলবেন্দ্রকে বেশ কয়েক বার জেরাও করে তারা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ক্লিনচিট পান তিনি। কিন্তু তাঁর ভূমিকা যথেষ্ট সন্দেহজনক বলে রিপোর্টে জানিয়েছেন স্থায়ী কমিটির সদস্যেরা। তাঁদের মতে, সলবেন্দ্রর গাড়ি ছিনতাই হওয়ার পরেও পঞ্জাব পুলিশ ঘটনার গুরুত্ব বুঝতে অনেক বেশি সময় নিয়েছে। বিষয়টি যে সাধারণ অপরাধ নয় জঙ্গি হানার প্রস্তুতি তা তাদের অনেক আগেই বোঝা উচিত ছিল।
পাকিস্তানের সঙ্গে তদন্তে সহযোগিতার খাতিরে সে দেশের গোয়েন্দাদের একটি দলকে সম্প্রতি পঠানকোট ঘাঁটি ঘুরে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। কিন্তু তার পরে ভারতীয় গোয়েন্দাদের আর পাকিস্তান যাওয়ার অনুমতি দেয়নি ইসলামাবাদ। ফলে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছে কেন্দ্র। এই বিষয়ে সরকারকে বিঁধেছে স্থায়ী কমিটিও। তাদের প্রশ্ন, জইশ ই মহম্মদ যে হামলার পিছনে রয়েছে তা ভারতীয় গোয়েন্দারা জানতেন। পাক সেনার মদতেই যে তারা সীমান্ত পেরিয়ে আসতে পেরেছিল তাও জানা গিয়েছিল। তাহলে পাক গোয়েন্দাদের ঘাঁটিতে আসতে দেওয়া হল কেন?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy