কাজের চাপে আত্মহত্যা করলে ‘বস’কে দোষী করা যাবে না, রায় সুপ্রিম কোর্টের।
‘থ্রি ইডিয়েটস’ সিনেমায় জয়ের আত্মহত্যার জন্য পড়াশোনায় অতিরিক্ত চাপ দেওয়ার অভিযোগ তুলে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রিন্সিপ্যাল ‘ভাইরাস’কে দূষেছিলেন র্যাঞ্চো। কিন্তু প্রিন্সিপ্যাল তা মানতে চাননি। রিল লাইফের ‘ভাইরাস’-এর পক্ষেই রিয়েল লাইফেও কার্যত মত দিল সুপ্রিম কোর্ট। তবে স্কুল কলেজে নয়, কর্মক্ষেত্রে। শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিল, কর্মক্ষেত্রে কাজের চাপে কেউ আত্মহত্যা করলে তার জন্য ‘বস’কে দায়ী করা যাবে না। এটাকে আত্মহত্যার প্ররোচনা হিসাবে গণ্য করা যায় না। বম্বে হাইকোর্টের ঔরঙ্গাবাদ বেঞ্চের একটি রায় খারিজ করে এই রায় দিয়েছেন বিচারপতি অরুণ মিশ্র এবং বিচারপতি ইউ ইউ ললিতের বেঞ্চ।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ঔরঙ্গাবাদে মহারাষ্ট্র সরকারের শিক্ষা দফতরের কাজ করতেন কিশোর পরাশর নামে এক কর্মী। ২০১৭ সালের অগস্টে আত্মহত্যা করেন তিনি। এরপরই তাঁর স্ত্রী অভিযোগ তোলেন, অফিসের কাজের চাপেই তাঁর স্বামী আত্মহত্যা করেছেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, স্বামীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রচণ্ড কাজের চাপে দিতেন। বাড়িতে ফিরেও অনেক রাত পর্যন্ত কাজ করতে হত তাঁকে। এমনকি, ছুটির দিনেও তাঁকে কাজের জন্য ডেকে নিয়ে যাওয়া হত। কিন্তু তারপরেও এক মাসের বেতন বন্ধ করে দেন এবং পদোন্নতি ও বেতন বৃদ্ধি বন্ধ করে দেবেন বলে হুমকি দেন ঊর্ধ্বতন ওই অফিসার।
এরপরই পুলিশ এফআইআর দায়ের করে মামলা শুরু করে। ওই এফআইআর বাতিলের দাবিতে বম্বে হাইকোর্টের ঔরঙ্গাবাদ বেঞ্চের দ্বারস্থ হন ওই অফিসার। কয়েক মাসের শুনানি শেষে গত ২৩ জানুয়ারি ঔরঙ্গাবাদ বেঞ্চ ওই অফিসারের আর্জি খারিজ করে দেয়। একই সঙ্গে বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ ছিল, সরাসরি আত্মহত্যা করার জন্য চাপ দিতেই যে মামলাকারী অফিসার কাজের কিশোর পরাশরকে চাপ দিয়েছিলেন, এটা বলা যায় না। তবে অফিসারের দেওয়া প্রচুর কাজের চাপেই যদি আত্মহত্যা করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়, তাহলে সেটা আত্মহত্যায় প্ররোচনা হিসাবে গণ্য করা হবে।
আরও পড়ুন: কাজে, বেতনে নারী-বৈষম্য বেশি ভারতে, বলছে সমীক্ষা
ঔরঙ্গাবাদ বেঞ্চের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন ওই অফিসার। সেই মামলাতেই ঔরঙ্গাবাদ বেঞ্চের রায় খারিজ করে সোমবার শীর্ষ আদালত রায় দেয়, ইচ্ছাকৃতভাবে আত্মহত্যার মতো পরিস্থিতি তৈরি করার উদ্দেশ্য থাকলে তা ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার শামিল। কিন্তু এই মামলার তথ্য-প্রমাণ ৩০৬ ধারা দেওয়ার পক্ষে অনুপযুক্ত ও অপর্যাপ্ত।
আরও পড়ুন: আর ওভারটাইমের টাকা পাবেন না কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy