তিন তালাক নিয়ে দায়ের হওয়া মামলার শুনানি আর ঝুলিয়ে রাখতে নারাজ দেশের সর্বোচ্চ আদালত। —ফাইল চিত্র।
তিন তালাকের মামলা আর ফেলে রাখা হবে না। পাঁচ বিচারপতিকে নিয়ে গঠিত সাংবিধানিক বেঞ্চ গরমের ছুটিতেই তিন তালাক মামলার শুনানি গ্রহণ করবে। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি জেএস খেহর নিজেই এ কথা জানিয়েছেন। তিন বার তালাক বলেই স্ত্রীয়ের থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার যে প্রথা মুসলমিদের মধ্যে প্রচলিত রয়েছে, সেই প্রথার আইনি বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এক গুচ্ছ আবেদন জমা পড়েছে আদালতে। অন্যতম প্রধান মামলাকারী হল মুসলিম মহিলাদের সংগঠন। সম্পূর্ণ ভাবে পুরুষের ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল এই বিবাহ বিচ্ছেদ প্রক্রিয়া আসলে নারীর অধিকারের অমর্যাদা, মনে করছেন মামলাকারীরা। দেশের সর্বোচ্চ আদালতও মনে করছে, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই গরমের ছুটিতেই এই মামলার শুনানি গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: রেখা-সচিন কোথায়, ক্ষোভ রাজ্যসভায়
১১ মে সুপ্রিম কোর্টে তিন তালাক মামলার শুনানি শুরু হবে বলে এ দিন দেশের প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন। এত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ফেলে রাখার সম্ভব না বলেই তাঁর পর্যবেক্ষণ। সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন প্রখ্যাত আইনজীবী তথা দেশের প্রাক্তন আইন মন্ত্রী কপিল সিব্বল। আপত্তি তুলেছিলেন আরও কয়েকজন। কিন্তু প্রধান বিচারপতি জেএস খেহর বলেন, ‘‘গরমের ছুটি চলাকালীন যে তিনটি বিষয় উঠবে, সেই তিনটিই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই মামলাগুলো ঝুলে রয়েছে এবং যদি আপনারা না চান যে মামলাগুলো উঠুক, তা হলে সুপ্রিম কোর্টে বিপুল সংখ্যক মামলা ঝুলে থাকে বলে আর অভিযোগ করবেন না।’’ মামলাগুলো যদি এখনও না তোলা হয়, তা হলে বছরের পর বছর সেগুলি ঝুলে থাকবে বলেও প্রধান বিচারপতি এ দিন মন্তব্য করেন।
তিন তালাকের বিরুদ্ধে মুসলিম মহিলাদের সংগঠনই সক্রিয় হয়েছে। ওই প্রথা নারীর অধিকারকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বলেই মনে করছে সংগঠনটি। —ফাইল চিত্র।
তিন তালাক প্রথার বিরুদ্ধে অনেকগুলি আবেদন জমা পড়েছে। ফেসবুকে বা হোয়াটসঅ্যাপে তিন বার তালাক বলেও আজকাল কেউ কেউ স্ত্রীকে ছেড়ে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, নির্দিষ্ট কয়েকটি ঘটনার বিচার নয়, বরং তিন তালাক এবং বহু বিবাহের প্রথাকে আদৌ আইনের চোখে বৈধ বলা যায় কি না, সে বিষয়েরই বিচার করা হবে। তিন তালাক, নিকাহ্ হালালা এবং চারটি করে বিয়ে করার যে প্রথা মুসলিমদের মধ্যে রয়েছে, ধর্মাচরণের অধিকারের নামে সে ধরনের প্রথা চলতে দেওয়া যায় কি না, সুপ্রিম কোর্ট সেই বিষয়টিই বিচার করবে। যদি সর্বোচ্চ আদালত মনে করে এই প্রথার অবসানের প্রয়োজন রয়েছে, তা হলে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির প্রচলন ঘটিয়ে এই প্রথার অবসান ঘটানো হবে নাকি অন্য কোনও প্রক্রিয়ায়, তা আইনসভার উপরেই ছেড়ে দেওয়া হবে বলে সুপ্রিম কোর্ট এ দিন জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: পশ্চিমের প্রথম দেশ হিসেবে মহিলাদের ঋতুকালীন ছুটি মঞ্জুর করতে চলেছে ইতালি
ভারত সরকারই সুপ্রিম কোর্টের সামনে তিন তালাক ও অন্য বিষয়গুলি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তার প্রেক্ষিতেই দ্রুত এর বিচার করতে চাইছে সর্বোচ্চ আদালত। দেশের আইন মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন যে সরকার নীতিগত ভাবে তিন তালাকের অবসানই চায়। অতএব, আদালত যদি তিন তালাক প্রথার বিরুদ্ধে রায় দেয়, তা হলে যে কেন্দ্র অবশ্যই এর অবলুপ্তি ঘটাতে আইন আনবে, তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই।
মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড অবশ্য বলছে, তিন তালাক বা বহু বিবাহের প্রথা বহাল থাকবে কি না, তা আইনসভা স্থির করবে। বিচার বিভাগ এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতেই পারে না বলে বোর্ডের মত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy