ক’দিন আগেই রাজ্যসভার সাংসদ রাজ বব্বরকে উত্তরপ্রদেশে দলের সভাপতি করা হয়েছে। আজ আরও এক ধাপ এগিয়ে দলের প্রচার কমিটি ও সমন্বয় কমিটিও ঘোষণা করা হল। সদ্য হওয়া বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে দলের অনেকে যখন রাহুলকে সভাপতি করে নতুন মুখ এনে সংগঠনের আমূল পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন, আজ উত্তরপ্রদেশের টিম ঘোষণার সময়ও প্রবীণতন্ত্র ও নবীনতন্ত্রের মধ্যে ভারসাম্যের পথেই হাঁটতে হল সনিয়া-রাহুলকে। প্রমোদ তিওয়ারি, মহসিনা কিদওয়াই, সলমন খুরশিদ, রীতা বহুগুণা, শ্রীপ্রকাশ জয়সবালদের মতো পুরনো ব্রিগেডকে রাখা হল সমন্বয় কমিটিতে। আর প্রচার কমিটির প্রধান করা হল ‘অমেঠীর রাজা’ সঞ্জয় সিংহকে। যদিও কংগ্রেস সূত্রের দাবি, সঞ্জয় সিংহকে প্রচারের প্রধান করার নেপথ্য কারিগর প্রিয়ঙ্কা। রাহুল ব্রিগেডের জিতিন প্রসাদ, আর পি এন সিংহদের রাখা হয়েছে কমিটিতে।
আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশের ভোটে শীলাকেই মুখ করল কংগ্রেস
ধাপে ধাপে সব কমিটি ঘোষণার পর এখন শুধু বাকি রইল নির্বাচন কমিটি। সেটি আরও পরে ঘোষণা করা হবে। কিন্তু কংগ্রেস নেতৃত্ব আজ স্পষ্ট করে দিলেন, প্রিয়ঙ্কা তাঁর মা ও দাদার নির্বাচনী কেন্দ্রের বাইরে রাজ্যের অন্যত্র প্রচার করলেও কোনও দায়িত্বে আর থাকছেন না। উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের পুরনো উচ্চবর্ণ ভোটব্যাঙ্ক ফের বিজেপি ও মায়াবতীর ঝুলি থেকে কেড়ে নেওয়ার জন্য প্রশান্ত কিশোর অনেক দিন ধরেই একজন ব্রাহ্মণ মুখ চাইছিলেন। উমাশঙ্কর দীক্ষিতের পুত্রবধূ ও উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন সাংসদ শীলা এই বলে ‘না’ করে দিয়েছিলেন, হাতে তেমন সময় নেই। আর এ বারে কংগ্রেসের লখনউয়ের মসনদ দখলেরও সম্ভাবনা নেই। কিন্তু শীলা ‘না’ করে দেওয়ার পরেও হাল ছাড়েননি সনিয়া। দলের স্বার্থেই এই ‘অনুগত সৈনিক’ আজ বলেন, ‘‘এটি গুরুদায়িত্ব। দল নিশ্চয়ই ভাল ফল করবে।’’
কংগ্রেসের এক শীর্ষনেতার মতে, ‘‘শীলা দীক্ষিতের মতো ব্রাহ্মণ মুখ, সঞ্জয় সিংহের ঠাকুর মুখ, রাজ বব্বরের মতো ওবিসি নেতার পাশাপাশি গোটা টিমে সব ধর্ম ও জাতের অংশীদারিত্ব রয়েছে। ফলে শুধুমাত্র ব্রাহ্মণ মুখের ভরসায় আমরা ভোটে লড়ছি না।’’ উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন, ‘‘দিল্লিতে শীলা দীক্ষিতের ভাল কাজ ও তাঁর অভিজ্ঞতার জন্যই তাঁকে বাছা হয়েছে।’’ এরই মধ্যে দিল্লির দুর্নীতি-দমন শাখা ট্যাঙ্কার-কেলেঙ্কারিতে শীলাকে জেরা করার জন্য এ মাসের শেষে ডেকে পাঠিয়েছে। আজাদের মতে, ‘‘এই অভিযোগ ভুল। আগে বিজেপির রমণ সিংহ, বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া, শিবরাজ সিংহ চৌহানের মতো মুখ্যমন্ত্রীরা তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে ইস্তফা দিন। তা হলে আমাদের মুখ্যমন্ত্রী-মুখ শীলা দীক্ষিতের নাম প্রত্যাহার করে নেব।’’