রাহুল গাঁধী। নিজস্ব চিত্র।
২০১৪ লোকসভায় তাঁকে মুখ করেই নির্বাচনে লড়েছিল কংগ্রেস। সবাই ভেবেছিলেন ইউপিএ সরকার টানা তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় এলে তিনিই হবেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু নির্বাচনে ভরাডুবির পরে কংগ্রেস সভাপতি পদ ছাড়েন রাহুল গাঁধী। তারপর থেকে একাধিক বার তাঁকে ফের সভাপতি হওয়ার অনুরোধ জানানো হলেও তিনি দায়িত্ব নেননি। বরং বলেছেন, গাঁধী পরিবারের বাইরে কারও উচিত এই দায়িত্ব নেওয়া। এ হেন রাহুল যদি প্রধানমন্ত্রী হতেন তা হলে তাঁর প্রধান লক্ষ্য কী হত? এক আলোচনাসভায় সেটাই জানালেন ওয়েনাডের সাংসদ।
হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলের অধ্যাপক নিকোলাস বার্নসের সঙ্গে একটি অনলাইন আলোচনা সভায় রাহুলকে এই প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমি বিকাশ কেন্দ্রিক অর্থনীতির তুলনায় চাকরি কেন্দ্রিক অর্থনীতির দিকে বেশি নজর দিতাম। আমাদের বিকাশ প্রয়োজন। কিন্তু আমরা চাকরি তৈরি করা ও উৎপাদন বাড়ানোর দিকেই বেশি নজর দিতাম।’’
বর্তমান সরকার তরুণ প্রজন্মের চাকরির জন্য কিছু করছে না বলেও অভিযোগ করেছেন রাহুল। তিনি বলেন, ‘‘যদি বর্তমান সময়ে আমাদের বিকাশ ও চাকরির বাজারের দিকে লক্ষ্য করা যায় তা হলে দেখা যাবে দুটোর মধ্যে কোনও সম্পর্ক নেই। চিনের নেতাদের দেখুন। কোনও চিনা নেতাকে দেখবেন না তাঁরা বলছেন তাঁদের দেশে চাকরি সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে। ৯ শতাংশ আর্থিক বিকাশ নিয়ে আমি কিছু করতে পারব না, যদি না আমি চাকরির বাজার তৈরি করতে পারি।’’
এই আলোচনাসভাতেই রাহুল অভিযোগ করেন, ভারতের গণতান্ত্রিক কাঠামো বর্তমান সরকারের হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছে। গণতন্ত্রে সব রাজনৈতিক দলের সমান অধিকার থাকা উচিত। সেটাই এখন হচ্ছে না দাবি করেছেন তিনি। রাহুল বলেন, ‘‘অসমে আমাদের নির্বাচনী প্রচার যে নেতা পরিচালনা করছেন তিনি আমাকে ভিডিও পাঠিয়েছেন। সেখানে দেখা যাচ্ছে বিজেপি প্রার্থী নিজের গাড়িতে ইভিএম মেশিন নিয়ে ঘুরছেন। আমাদের নেতা চিৎকার করে সবাইকে এটা দেখানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু সংবাদমাধ্যমে তার বিশেষ কিছুই দেখানো হচ্ছে না।’’
শুধুমাত্র কংগ্রেসের সঙ্গেই এই সমস্যা হচ্ছে তা নয়, সব বিরোধী দলেরই এক অবস্থা বলে মত রাহুলের। অনলাইন আলোচনাতে তিনি বলেন, ‘‘শুধুমাত্র কংগ্রেস নয়, বিএসপি (বহুজন সমাজ পার্টি) নির্বাচনে জেতেনি, এসপি (সমাজবাদী পার্টি) নির্বাচনে জেতেনি, এনসিপি-ও (ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি) নির্বাচনে জেতেনি। নির্বাচনে লড়ার জন্য একটা গণতান্ত্রিক কাঠামো দরকার, আইনের সুরক্ষা দরকার, সংবাদমাধ্যম ও বিরোধীদের স্বাধীনতা দরকার। কিন্তু সেগুলো কিছুই বর্তমানে ভারতে নেই।’’
রাহুল জানিয়েছেন, যে ভাবে বিজেপি সব কিছু গায়ের করে দখল করে নিচ্ছে তাতে সমস্ত রাজনৈতিক দল ও মানুষ তাদের বিরোধী হয়ে উঠছে। সবাইকে এক জায়গায় জড়ো করাটাই তাদের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত বলে মনে করেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy