প্রতীকী ছবি
স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার কারণ, এক প্যাকেট নিমকি!
ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের কবি নগর এলাকায়। ২৬ বছরের এক মহিলার অভিযোগ, বাড়িতে দু’প্যাকেট নিমকি এনেছিলেন তাঁর স্বামী। শ্বশুরবাড়ির কাছেই তাঁর বাপেরবাড়ি। ওই দু’টি প্যাকেটের মধ্যে একটি তাঁর মাকে দিয়েছিলেন ওই মহিলা। বাড়ি ফিরে ওই এক প্যাকেট নিমকি না দেখতে পেয়ে রেগে যান স্বামী। এর পরেই তিনি স্ত্রীকে তিন তালাক দেন। রবিবার কবি নগরের বিধায়ক অতুল গর্গের দফতরে ওই মহিলা অভিযোগ জানান, তিন তালাক দেওয়ার পর জোর করে তাঁকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন স্বামী। এই মুহূর্তে তিন বছরের ছেলেকে নিয়ে কৈলা ভট্ট এলাকায় বাপেরবাড়িতেই রয়েছেন ওই মহিলা।
অষ্টম শ্রেণি পাশ করার পর হায়দরাবাদের এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তাঁর। অতুল গর্গের ‘জনতা দরবার’-এ তিনি অভিযোগ জানান, বিয়ের পর থেকেই ছোটখাটো কারণে তাঁকে মারধর করা হত। ওই মহিলার বাবা মহম্মদ সাবির জানান, ‘‘চার বছর আগে বিয়ে হয়েছিল মেয়ের। তিন বছরের একটি ছেলে রয়েছে তাঁদের। মাস কয়েক ধরে বাড়ি ভাড়া নিয়ে কবি নগর এলাকা থাকতে শুরু করে মেয়ে-জামাই। বিয়ের পর থেকেই পণের টাকা ও বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার জন্য চাপ দিত জামাই। মেয়েকে মারধরও করত। তবে এ দিন যা করেছে তা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করব।’’
আরও পড়ুন: অত্যাচারী স্বামীকে তালাক দিতে থানার দ্বারস্থ স্ত্রী
এর আগেও চিঠি, হোয়াটসঅ্যাপ, এসএমএস, কাগজে বিজ্ঞাপন ছাপিয়ে তিন তালাক দেওয়ার খবর জানা গিয়েছে। তবে নিমকির প্যাকেটের জন্য তালাক দেওয়ার ঘটনা সাম্প্রতিক অতীতে কখনও ঘটেনি।
কিছু দিন আগেই উত্তরপ্রেদেশের মেরঠে অত্যাচারী স্বামীকে তালাক দিতে থানার দারস্থ হয়েছিলেন স্ত্রী। থানায় গিয়ে আমরিন জানিয়েছিলেন, ‘‘কেন পুরুষরাই শুধু তিন তালাক দিয়ে বিচ্ছেদ পাবেন? খুব সহজেই পুরুষরা অপছন্দের মেয়েদের হাত থেকে মুক্তি পান। কিন্তু মেয়েদের তেমন কোনও অধিকার নেই।’’ তাই সকলের সামনেই তিন তালাক দিয়ে স্বামীর হাত থেকে মুক্তি চেয়েছিলেন তিনি। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ আইনি পথে তাঁকে সব রকম সাহায্যের আশ্বাসও দেয়।
দেশে তিন তালাক প্রথা নিয়ে বহু দিন ধরেই চলছে বিতর্ক। বার বার এ নিয়ে সরব হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। মুসলিম মহিলাদের অধিকার রক্ষা করতেই তিনি তিন তালাক উঠিয়ে দেওয়ার পক্ষে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। অন্য দিকে মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড জানিয়েছে, কোনও বৈধ কারণ ছাড়া তিন তালাকের মান্যতা দেওয়া হবে না। যাঁরা শরিয়তি আইন লঙ্ঘন করে তালাক দেবেন, তাঁদের সামাজিক ভাবে বয়কট করা হবে। বোর্ড জানায়, তিন তালাক নিয়ে অনেক ভ্রান্ত ধারণা আছে। এ বিষয়ে তারা একটা আচরণবিধি চালু করবে। তবে তিন তালাক নিয়ে তারা বাইরের কোনও হস্তক্ষেপে চায় না বলেই জানিয়েছে মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড।
তিন তালাক বন্ধের দাবিতে একাধিক সংগঠনের দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে আগামী ১১ মে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি শুরু হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy