‘ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভাঙে’।
জঙ্গিডেরায় বন্দি হয়েও তাদেরই নীতি শিক্ষা পড়ান শিক্ষক ইকবাল তৌফিক! গারো পাহাড়ের মিশনারি স্কুলের শিক্ষক তৌফিককে ১ ফেব্রুয়ারি মানচাকর থেকে অপহরণ করে জঙ্গিরা। গত বৃহস্পতিবার তিনি মুক্তি পান। স্কুলছুট জঙ্গিদের নীতি শিক্ষার ‘ক্লাস’ নেন অপহৃত শিক্ষক। পঁয়তাল্লিশ বছরের তৌফিক ইংরেজি পড়ান। মুক্তির পর সেই অভিজ্ঞতার কথা জানান তৌফিক। জানান, জঙ্গিরা প্রথমে তাঁকে ডামালগ্রে গ্রামে নিয়ে যায়। তার পর অজ্ঞাত কোনও পাহাড়ি নালার কাছে।
তৌফিক বলেন, “অপহরণকারীরা ছিল কমবয়সী। ওদের বলি, তোমরা আমার ছাত্রের মতো। কেন বিপজ্জনক জীবন বেছে নিয়েছ? লেখাপড়া করে বাঁচার চেষ্টা করো।” জীবনের ইতিবাচক দিকের কথা তাদের শোনান তৌফিক। জঙ্গিরা তাঁকে জানায়, প্রত্যন্ত গ্রামে শিক্ষা পরিকাঠামোর অভাবেই পড়াশোনা করতে পারেনি। ওই শিক্ষক বলেন, “হেলমেটে মুখ ঢাকা এক জঙ্গি সেখানে আসত। আমাকে সে পুলিশ বা সিআইডির চর ভেবেছিল। ভাবত, আমার অনেক সম্পত্তি। মুক্তির জন্য মোটা টাকা চেয়েছিল।” তৌফিক জঙ্গিদের বোঝান, তিনি স্কুলশিক্ষক। সামান্য বেতন। বেশি টাকা দেওয়া সম্ভব নয়।
আটক থাকার পাঁচ দিন, অপহরণকারীদের পড়াতেন তৌফিক। তৌফিক বলেন, “ওরা গরিব। আমার ব্যাগ থেকে আড়াই হাজার টাকা পায়। সেটাই ওদের কাছে অনেক।” তৌফিকের মুক্তিপণ হিসেবে ৫ কোটি টাকা চাওয়া হয়। শেষে ৫ লাখে রফা হয়। চার জঙ্গি টাকা নিতে আসে। পুলিশ হাতেনাতে এক জনকে পাকড়াও করে। উদ্ধার হয় মুক্তিপণের টাকাও। তৌফিকের দাবি, মুক্তির আগে তাঁকে ১০০ টাকা গুজে দেয় জঙ্গিরা। তৌফিক বলেন, “ টাকাটা ধার হিসেবে নিচ্ছি। পরে ঠিক ফেরত দেব। ওরা দুঃখপ্রকাশ করেছিল।”
ফের স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের পড়াতে প্রস্তুত তৌফিক। আশা, অপহরণকারীরা দ্রুত জীবনের মূলস্রোতে ফিরবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy