Advertisement
E-Paper

দুই বাংলাদেশি জেহাদি আটক পুলিশের ফাঁদে

ফাঁদটা যে তার জন্য সাজানো হয়েছিল তা ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি আব্দুল আজিজ। বাংলাদেশের বাসিন্দা এই জেহাদি ভারতে ঢুকেছিল মাস কয়েক আগে। ঘাঁটি গেড়েছিল উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুরে। উদ্দেশ্য ছিল ভারতে নাশকতা ও জেহাদি ভাবধারা প্রচার। ঠিক ছিল সেই কাজে সাহায্য করতে দিল্লির কাছে নয়ডায় এসে তাঁর সঙ্গে দেখা করবে আর এক বাংলাদেশি মহম্মদ বরকতুল্লা।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৫৪

ফাঁদটা যে তার জন্য সাজানো হয়েছিল তা ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি আব্দুল আজিজ।

বাংলাদেশের বাসিন্দা এই জেহাদি ভারতে ঢুকেছিল মাস কয়েক আগে। ঘাঁটি গেড়েছিল উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুরে। উদ্দেশ্য ছিল ভারতে নাশকতা ও জেহাদি ভাবধারা প্রচার। ঠিক ছিল সেই কাজে সাহায্য করতে দিল্লির কাছে নয়ডায় এসে তাঁর সঙ্গে দেখা করবে আর এক বাংলাদেশি মহম্মদ বরকতুল্লা। বরকতুল্লা যে প্রথম থেকেই বাংলাদেশ ও ভারতীয় গোয়েন্দাদের নজরে রয়েছে, তা একেবারেই বুঝতে পারেনি আব্দুল আজিজ। ঠিক ছিল, ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে নয়ডায় আজিজের সঙ্গে দেখা করবে বরকতুল্লা। বাংলাদেশ থেকে সেই নির্দেশ দিয়েই পাঠানো হয়েছিল বরকতুল্লাকে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে ঢোকার সময়েই পুলিশের জালে ধরা পড়ে যায় সে। তার কাছে একটি ল্যাপটপ ও কিছু জেহাদি লিফলেট মেলে।

জেরায় বরকতুল্লা জানায়, নয়ডায় গিয়ে আজিজের হাতে ল্যাপটপটি তুলে দিতেই সে ভারতে এসেছে। ৩০ ডিসেম্বর বরকতুল্লাকে বনগাঁ মহকুমা আদালতে পেশও করে পুলিশ। কেন্দ্রীয় ইনটেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি)-র এক অফিসারের কথায়, “সন্দেহজনক সরঞ্জাম ও তথ্যসম্ভার নিয়ে এক বাংলাদেশি ধরা পড়ে বনগাঁয়। তাকে জেরা করে উত্তরপ্রদেশের আর এক জনের হদিস মিলেছে। সে বাংলাদেশের নাগরিক হলেও ভুয়ো ভারতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে এ দেশে বসবাস করছে।”

এ দিকে বরকতুল্লার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যকে হাতিয়ার করেই আজিজকে ফাঁদে ফেলার পরিকল্পনা নেন গোয়েন্দারা। যৌথ ভাবে পরিকল্পনা রচনায় নামে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ, উত্তরপ্রদেশের অ্যান্টি টেরারিস্ট স্কোয়াড (এটিএস) ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তা আজ জানান, সিদ্ধান্ত হয়, দু’জনের যে ভাবে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে তা হবে। পরিকল্পনা মাফিক পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ বরকতুল্লাকে নিয়ে আসে নয়ডায়। তাকে দিয়ে ফোন করানো হয় আজিজকে। ঠিক হয় নয়ডার একটি বিশেষ জায়গায় বরকতুল্লার সঙ্গে দেখা করতে আসবে আজিজ। এর পর আজিজ দেখা করতে এলে আটক করা হয় তাকেও।

বরকতুল্লার বাড়ি ফরিদপুরের শালথা থানার কানাইর গ্রামে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পুলিশ জানিয়েছে, তার সঙ্গে থাকা ল্যাপটপে প্রচুর ফাইল রয়েছে। রয়েছে জঙ্গি প্রশিক্ষণের নানা নথিপত্রও। উর্দুতে জেহাদি বক্তৃতার বেশ কিছু ভিডিও ফুটেজও মিলেছে। তবে অনেক ফাইলই পুলিশ খুলতে পারেনি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বক্তব্য, এ দেশে জেহাদি ভাবধারা প্রচারের দায়িত্বে ছিল তারা।

ধৃত ব্যক্তিদের ভারতে পাঠানোর পিছনে মূল চক্রী কারা ছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের সাহায্যও নেওয়া হচ্ছে।

তবে ধৃতরা কোন জঙ্গি গোষ্ঠীর সদস্য, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এখনই তা জানাতে চাইছে না। তাদের বক্তব্য, তদন্ত চলছে। একটি বিষয় স্পষ্ট, ওই দুই ব্যক্তি কোনও জঙ্গি গোষ্ঠীর স্লিপার সেলের সদস্য, যাদের কাজ ভারতে জেহাদি নিয়োগ করে সংগঠন বাড়ানো। খাগড়াগড় বিস্ফোরণের তদন্তে নেমে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা জেনেছেন, কেবল পশ্চিমবঙ্গেই অন্তত ৫০টি সন্ত্রাসের মডিউল কাজ করছে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের বক্তব্য, এমনকী খাগড়াগড় কাণ্ডের সঙ্গেও ওই দুই যুবকের যুক্ত থাকার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কেন না খাগড়াগড় কাণ্ডের তদন্তেও দেখা গিয়েছে, ধৃতদের অনেকেই এ দেশের বিভিন্ন ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জেহাদি ভাবধারার প্রচার চালাত। এ ক্ষেত্রেও ওই দুই যুবককেও যে সেই দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা।

bangladeshi jihadist nabbed
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy