Advertisement
E-Paper

পাক ছাউনিতে সইদ, সন্দেহ বিএসএফের

জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তে পাক রেঞ্জারের ছাউনিতে লস্কর-ই-তইবার প্রধান হাফিজ মহম্মদ সইদ বা তাঁর কম্যান্ডারেরা যাতায়াত করছেন বলে সন্দেহ করছে বিএসএফ। এ ব্যাপারে কেন্দ্রকে রিপোর্ট দিয়েছে তারা। ৩১ ডিসেম্বরের রাত থেকে দফায় দফায় সংঘর্ষ বিরতি লঙ্ঘন করে চলেছে পাক রেঞ্জার। গত সন্ধে থেকে অবশ্য আর গুলি চালায়নি তারা। তবে বিএসএফের দাবি, রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ সাম্বা সেক্টরে সীমান্তের ও-পারে কয়েকটি গাড়ি এসে থামে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৪৯

জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তে পাক রেঞ্জারের ছাউনিতে লস্কর-ই-তইবার প্রধান হাফিজ মহম্মদ সইদ বা তাঁর কম্যান্ডারেরা যাতায়াত করছেন বলে সন্দেহ করছে বিএসএফ। এ ব্যাপারে কেন্দ্রকে রিপোর্ট দিয়েছে তারা।

৩১ ডিসেম্বরের রাত থেকে দফায় দফায় সংঘর্ষ বিরতি লঙ্ঘন করে চলেছে পাক রেঞ্জার। গত সন্ধে থেকে অবশ্য আর গুলি চালায়নি তারা। তবে বিএসএফের দাবি, রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ সাম্বা সেক্টরে সীমান্তের ও-পারে কয়েকটি গাড়ি এসে থামে। গাড়ি থেকে নেমে আসে সাধারণ পোশাক পরা ২৫-৩০ জন। পাক রেঞ্জারের ছাউনিতে ঢোকে তারা। পাকিস্তানের সুখমাল এলাকার ওই ছাউনিতে তারা আধ ঘণ্টা ছিল। তারা বেরোনোর সময় ‘হাফিজ সইদ জিন্দাবাদ’ স্লোগান ওঠে। বড়জোর ৫০০ মিটার দূরে বিএসএফের ছাউনি থেকে তা স্পষ্ট শোনা যায়।

এর পরেই কেন্দ্রকে রিপোর্ট দিয়ে গোটা বিষয়টি জানিয়েছে বিএসএফ। তাদের দাবি, সীমান্তের কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য লস্করের ‘বর্ডার অ্যাকশন টিম’ আগে থেকেই ছিল। তার উপর গত রাতের স্লোগান শুনে মনে হয়েছে, সম্ভবত হাফিজ সইদ নিজে অথবা তাঁর শীর্ষ কম্যান্ডারদের কেউ পাক রেঞ্জারের ছাউনিতে এসেছিলেন। এই জঙ্গি নেতারাই ভারতীয় বাহিনীকে লক্ষ করে হামলা চালাতে পাক রেঞ্জারদের উদ্বুদ্ধ করছে বলে দাবি করা হয়েছে রিপোর্টে। দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে এখনও ফ্ল্যাগ মিটিং হয়নি। ফলে সাম্বার জেলা প্রশাসনও গোলাগুলিতে ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরাতে ভরসা পাচ্ছে না। অবশ্য ভারতীয় গোয়েন্দারা আগে থেকেই বলছেন, সীমান্তে-নিয়ন্ত্রণরেখায় গুলি ছুড়ে সেনা ও বিএসএফ-কে ব্যস্ত রেখে জঙ্গি ঢোকানোর চেষ্টা চালাচ্ছে পাকিস্তান। পাশাপাশি ২৬/১১-র কায়দায় জলপথেও অনুপ্রবেশের চেষ্টা চলছে, ৩১ ডিসেম্বরের রাতে আরব সাগরে ট্রলারে বিস্ফোরণ তার প্রমাণ।

যদিও সেই ট্রলারে বিস্ফোরণ নিয়ে আজ তীব্র চাপান-উতোর শুরু হয়েছে কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে। কংগ্রেসের দাবি, ওই ট্রলারের আরোহীরা সত্যিই সন্ত্রাসবাদী ছিল কি না, তার প্রমাণ দিক মোদী সরকার। পাল্টা বিজেপি বলেছে, ‘পাক সন্ত্রাসকে অক্সিজেন দিয়ে আরও নীচে নামল কংগ্রেস।’

জ্বলন্ত ট্রলারের ছবি প্রকাশ করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক দাবি করে, সাগরপথে বড় ধরনের জঙ্গি হানার ছক রুখেছে গোয়েন্দা ও উপকূলরক্ষী বাহিনী। বলা হয়, করাচির কন্ট্রোলরুম থেকে ওয়্যারলেসে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছিল ট্রলারটিকে। ভারতীয় গোয়েন্দারা তা শুনে ফেলেন। উপকূলরক্ষী বাহিনীর জাহাজ ট্রলারটিকে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে তাড়া করার পর সেটি বিস্ফোরণে উড়ে যায়। জঙ্গিরাই সেটিকে উড়িয়ে দিয়েছিল বলে গোয়েন্দাদের দাবি।

এই বিস্ফোরণ-তত্ত্ব নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র অজয় কুমার আজ বলেন, পাক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কংগ্রেস কেন্দ্রের পাশে রয়েছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কিছু সন্দেহ রয়েছে। যেমন ট্রলারে যে জঙ্গিরাই ছিল তার কী প্রমাণ? ট্রলারে বিস্ফোরক ছিল বলা হচ্ছে। হয়তো ওই লোকগুলি ছিল ছিঁচকে চোরাকারবারি, যারা সমুদ্রে ডিজেল বা মৎস্যজীবীদের মদ বিক্রি করে। হতে পারে আগুনটা সেখানেই লেগেছিল। ট্রলারে জঙ্গি থাকলে পাল্টা গুলি চালাত উপকূলরক্ষী বাহিনীর দিকে! কিন্তু তা হয়নি। এ ছাড়া, বড়জোর আশি অশ্বশক্তির ছোট্ট ট্রলারকে উপকূল রক্ষীর অত্যাধুনিক জাহাজ দেড় ঘণ্টা ধরে তাড়া করল, তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দাবি, আবহাওয়া খারাপ থাকায় ট্রলারের আরোহীদের কাউকে উদ্ধার করা যায়নি। কিন্তু সে দিন ওই এলাকায় খারাপ আবহাওয়ার পূর্বাভাস ছিল না বলে কংগ্রেসের দাবি।

কংগ্রেসের বিরুদ্ধে পাল্টা সরব হয় বিজেপি। তাদের মুখপাত্র সম্বিত পাত্র বলেন, “কংগ্রেস জাতীয়তাবাদের প্রশ্নে জঘন্য রাজনীতি করছে। উপকূলরক্ষী বাহিনী ও গোয়েন্দারা যে ভাবে হামলার ছক ভেস্তে দিয়েছেন, সে জন্য তাঁদের প্রশংসা প্রাপ্য। কিন্তু কংগ্রেস পাকিস্তানের হাত শক্ত করছে।”

কেন এই প্রশ্ন তুলছে কংগ্রেস?

ঘরোয়া আলোচনায় এক কংগ্রেস নেতা বলেন, “মোদী গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন সোহরাবুদ্দিন শেখ, ইসরাত জহান-দের জঙ্গি তকমা দিয়ে ভুয়ো সংঘর্ষে মেরেছিল তাঁর সরকার। জঙ্গি দমনের কৃতিত্ব নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার উদ্দেশ্যেই তা করা হয়েছিল।” কংগ্রেসের মতে, সন্ত্রাস দমনে মোদীর ভূমিকা কখনওই সন্দেহের ঊর্ধ্বে ছিল না। এ বারের ট্রলার-তত্ত্ব নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরাও সম্পূর্ণ বিশ্বাস করছেন না।

কংগ্রেসের যুক্তি, এটা রাজনীতির প্রশ্ন নয়। ভারত যখন পাক-যোগের অভিযোগ তুলেছে, তখন ইসলামাবাদ প্রমাণ চাইবে। অসঙ্গতি দেখা দিলে আন্তর্জাতিক স্তরে মুখ পুড়বে। তাই ট্রলারটির সঙ্গে করাচির ওয়্যারলেস-কথোপকথনের রেকর্ড প্রকাশ করা হোক। তা হলেই সন্দেহের নিরসন হবে বলে তাদের দাবি।

hafiz saeed bsf rangers hafiz shahid
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy