নমস্তে। বিদায়ের আগে পালাম বিমানবন্দরে মিশেল। মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই
বিমান থেকে নেমেই আড়াই দিনের ঠাসা কর্মসূচিতে ব্যস্ত ছিলেন বারাক ওবামা। কিন্তু তাঁর স্ত্রী মিশেলকে এ বারে তেমন সক্রিয় দেখা যায়নি। প্রজাতন্ত্র দিবসেও বেশির ভাগ সময়টা বসে ছিলেন মুখ গোমড়া করে।
মিশেলের এই ‘মুখ গোমড়া’ হওয়া নিয়ে দিল্লির অলিন্দে জল্পনাও নেহাত কম নয়। তবে কি কোনও কাজ না থাকায় বসে বসে বিরক্ত হলেন? নাকি বারাকের সঙ্গে কোনও বচসা হয়েছে? না কি প্রেমের সৌধ তাজমহলে যেতে না পারায় আক্ষেপ হল? সৌদি আরবের রাজা আবদুল্লার জীবনাবসানের পর ওবামা আগরা সফর কাটছাঁট করে যে রিয়াধে গেলেন, সেখানে গিয়েও মিশেলের নাকি বিশেষ কিছু করার নেই!
অথচ গত বার ভারতে এসে অনেক কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন মিশেল। দিল্লির ক্রাফট ভিলেজে গিয়ে কেনাকাটা করেছিলেন। গানের তালে পা মিলিয়ে নেচেওছিলেন।
আগরা সফর বহাল থাকলে এ বারে তাজমহলে যেতে পারতেন ওবামা দম্পতি। অতীতে বিল ক্লিন্টন-হিলারি গিয়েছিলেন তাজমহলে। ২০০০ সালে মেয়ে চেলসিকে নিয়েও তাজে ঘুরে গিয়েছেন ক্লিন্টন। প্রাক্তন ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি থেকে পারভেজ মুশারফ সকলেই গিয়েছেন। কিন্তু বারাক ওবামা মিশেল ওবামার তা হল না।
তাজমহলে যেতে না পাওয়ার আক্ষেপ যে মিশেলের মনে থেকে গিয়েছে, সেটি আজ ভারত ছাড়ার আগে স্পষ্ট করলেন তিনি। যেতে যেতে তিনি মিনিস্টার-ইন-ওয়েটিং পীযূষ গয়ালকে বলেছেন, “তাজমহলে যেতে না পাওয়ার আক্ষেপ থেকে গেল। পরের বার ব্যক্তিগত সফরে ভারতে এসে তাজমহলে অবশ্যই যাব। সে বারে মেয়েদেরও নিয়ে আসব।”
মিনিস্টার-ইন-ওয়েটিং হওয়ার সুবাদে সর্ব ক্ষণ বারাক ওবামার ছায়াসঙ্গী ছিলেন পীযূষ। তিনি বলেন, “এ বারে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ঠাসা কর্মসূচি ছিল। আমি নিজে তাঁর সঙ্গে ঘুরতে ঘুরতে তিন মিনিটের বেশি সময় পাইনি। কোনও রকমে মুখ ধুয়েছি ওই সময়টিতে। তা হলেই বুঝুন বারাক ওবামা কতটা ব্যস্ত ছিলেন। তবে এমন নয় মিশেল ওবামা একেবারেই হোটেলে চুপচাপবসে ছিলেন। তিনি এ দেশে মার্কিন দূতাবাসের কর্মচারীদের সঙ্গে দেখা করেছেন। রাষ্ট্রপতি ভবনেও গিয়েছেন। প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজও উপভোগ করেছেন।”
গত কাল প্রজাতন্ত্র দিবসের সকালে হঠাৎই বৃষ্টি শুরু হয়। অথচ মাথার উপরে কোনও শামিয়ানা ছিল না। ছাতা মাথায় দিয়েই সমস্ত ভিভিআইপিদের কুচকাওয়াজ দেখতে হয়। মিশেলকে পীযূষ জানান, “আমাদের দেশে বৃষ্টি ভাল লক্ষণ।” মিশেল বলেন, “এমন এক আবহাওয়ায় এমন সুন্দর কুচকাওয়াজ দেখছি। মেয়েদের নিয়ে এলেই ভাল হত। ওরা দেখতে পেল না।”
কুচকাওয়াজ নিয়ে অবশ্য বারাক ওবামার কৌতূহলও কম ছিল না। এক দিন আগে তিনি জিজ্ঞাসা করেছেন, কত জন লোক আসবে? কী কী দেখানো হবে? সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচি, বিভিন্ন রাজ্যের ট্যাবলো দেখে রীতিমতো অভিভূত তিনি। এ দেশে এত বৈচিত্র্য। বিভিন্ন ধরনের গান, নাচ, পোশাক মন কেড়েছে ওবামা দম্পতির। বিষয়গুলি পাশে বসা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর থেকে বুঝেও নিচ্ছিলেন তাঁরা।
বাকি রইল কেবল তাজ। পরের বার তা নিশ্চয় হবে, আশায় বুক বাঁধছে ওবামা পরিবার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy