Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

দুর্ঘটনায় মৃত্যু ১৩ শরণার্থীর, অস্ট্রিয়া ঢুকলেন ১০ হাজার

তুরস্ক থেকে গ্রিস যাওয়ার সময় মৃত্যু হল ১৩ জন শরণার্থীর। তুরস্কের সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, তুরস্কের কানাক্কালে বন্দর থেকে গ্রিসের লেসবস দ্বীপে যাওয়ার উদ্দেশে ৪৬ জন শরণার্থীকে নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল ওই ডিঙি।

অপেক্ষায়। রবিবার অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি সীমান্তে শরণার্থীরা। ছবি: রয়টার্স।

অপেক্ষায়। রবিবার অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি সীমান্তে শরণার্থীরা। ছবি: রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
আঙ্কারা শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:০২
Share: Save:

তুরস্ক থেকে গ্রিস যাওয়ার সময় মৃত্যু হল ১৩ জন শরণার্থীর। তুরস্কের সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, তুরস্কের কানাক্কালে বন্দর থেকে গ্রিসের লেসবস দ্বীপে যাওয়ার উদ্দেশে ৪৬ জন শরণার্থীকে নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল ওই ডিঙি। কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছনোর আগেই ডিঙির সঙ্গে একটি ফেরির সংঘর্ষে প্রাণ হারালেন তাঁদের মধ্যে ১৩ জন। এঁদের মধ্যে রয়েছে চারটি শিশুও। এখনও পর্যন্ত ২০ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। নিখোঁজ ১৩ জন। এ দিকে, মার্কিন বিদেশসচিব জন কেরি আজ জানিয়েছেন, আমেরিকা আগামী বছর ৮৫,০০০ শরণার্থীকে আশ্রয় দেবে। আর ২০১৭ সালে আশ্রয় দেওয়া হবে এক লক্ষ শরণার্থীকে।

গ্রিসের উপকূলবর্তী এলাকা থেকে শনিবারই এক সিরীয় শিশুকন্যার দেহ উদ্ধার হয়। তুরস্ক থেকে লেসবস যাওয়ার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ওই শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এ দিকে, নিখোঁজ ২৬ জন শরণার্থীকে খুঁজে বের করার জন্য রবিবার লেসবস দ্বীপে তল্লাশি চালিয়েছে গ্রিসের উপকূলরক্ষী বাহিনী। উপকূলরক্ষী বাহিনী সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার ভোরে লেসবসের কাছে কিছু মানুষকে দেখতে পায় লিথুয়ানিয়ার একটি হেলিকপ্টার। এর পরেই সেখানে তল্লাশি চালিয়ে ২০ জনকে উদ্ধার করেছে গ্রিসের উপকূলরক্ষী বাহিনীর দু’টি জাহাজ। তাঁদের থেকেই জানা গিয়েছে যে ৪৬ জন যাত্রী নিয়ে ডুবে গিয়েছিল তাঁদের নৌকা।

শরণার্থী সমস্যায় নাজেহাল সমগ্র ইউরোপ। শরণার্থীদের কে আশ্রয় দেবে, তা নিয়ে একে অন্যের উপর দায় চাপাতে ব্যস্ত ক্রোয়েশিয়া, হাঙ্গেরি, স্লোভেনিয়া। এরই মধ্যে রবিবার ভোররাত পর্যন্ত ভিড়ে ঠাসা বাস এবং ট্রেনে করে দলে দলে শরণার্থী ঢুকছেন অস্ট্রিয়ায়। হাঙ্গেরির দিক থেকে এখনও পর্যন্ত ১০,০০০-এরও বেশি শরণার্থী ঢুকেছেন অস্ট্রিয়ায়।

প্রথম দিকে অভ্যর্থনা জানালেও, পরে শরণার্থীদের চাপ ক্রমশ বাড়তে থাকায় তাঁদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে ক্রোয়েশিয়াও। ক্রোয়েশিয়া স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তারা আর শরণার্থী সমস্যার মোকাবিলা করতে পারছে না। তাই বেশির ভাগ শরণার্থীদেরই হাঙ্গেরির দিকে পাঠিয়ে দিয়েছে তারা।

অস্ট্রিয়ার পুলিশ সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত প্রায় ৬৭০০ জন শরণার্থীকে বাসে করে সীমান্তে পাঠিয়ে দিয়েছে হাঙ্গেরি। শরণার্থী সমস্যা সামাল দিতে ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে তাদের সীমান্তে ৪১ কিলোমিটারের একটি কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার কাজ শেষ করে ফেলেছে হাঙ্গেরি। হাঙ্গেরির প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, শুক্রবারই এই কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

এক দেশ থেকে আর এক দেশ। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে যাযাবরের মতোই ঘুরে বেড়াচ্ছেন শরণার্থীরা। হাঙ্গেরির সীমান্তে পৌঁছনো এমনই এক শরণার্থীর কথায়, ‘‘এখন আমার একমাত্র চাওয়া, আমার সাত মাসের বাচ্চাটা যেন বড় হয়ে উঠতে পারে।’’ এক মাস আগে ইরাক ছেড়ে আসা বছর ষাটের প্রৌঢ় এখন শুধু নিশ্চিন্তে ঘুমোতে চান। তাই হয়তো বলে ওঠেন, ‘‘এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছি। খিদে সহ্য করতে পারি। কিন্তু ঘুম নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE