Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

আশিতে এসে আইএসে, জেহাদে যোগ চিনা বৃদ্ধের

কালো জোব্বায় ঢাকা তাঁর আপাদমস্তক। এক হাতে কালো পতাকা, অন্য হাতে এ কে ৪৭। আর মুখের হাসিতে যেন পৈশাচিক একটা উল্লাস। নেহাত পাক ধরেছে চুল আর দাড়িতে। না হলে, কার সাধ্যি যে বোঝে তাঁর বয়স ৮০ ছাড়িয়েছে! বন্দুক হাতে নিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে এ যেন বৃদ্ধের দ্বিতীয় ইনিংসের ইঙ্গিত।

জঙ্গিগোষ্ঠীর প্রকাশ করা ভিডিওয় বৃদ্ধ জেহাদি।

জঙ্গিগোষ্ঠীর প্রকাশ করা ভিডিওয় বৃদ্ধ জেহাদি।

সংবাদ সংস্থা
বেইরুট শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৫ ০২:৫৮
Share: Save:

কালো জোব্বায় ঢাকা তাঁর আপাদমস্তক। এক হাতে কালো পতাকা, অন্য হাতে এ কে ৪৭। আর মুখের হাসিতে যেন পৈশাচিক একটা উল্লাস। নেহাত পাক ধরেছে চুল আর দাড়িতে। না হলে, কার সাধ্যি যে বোঝে তাঁর বয়স ৮০ ছাড়িয়েছে! বন্দুক হাতে নিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে এ যেন বৃদ্ধের দ্বিতীয় ইনিংসের ইঙ্গিত।

সম্প্রতি একটি ভিডিও প্রকাশ করে এ ভাবেই জেহাদ যুদ্ধে নিজেদের নয়া সৈনিককে বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছে পশ্চিম এশিয়ার জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া (আইএসআইএস)।

কিন্তু দাদুর হাতে যে বন্দুক! আইএসের এই ভিডিও দেখেই আঁতকে উঠেছে ইন্টারনেট দুনিয়ার একটা বড় অংশ। কে এই প্রবীণ জঙ্গি?

ভিডিওতে নিজেকে মহম্মদ আমিন বলে পরিচয় দিয়েছেন বৃদ্ধ। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, জঙ্গি দলে নাম লেখানোর আগে চিনের জিংজিয়াং প্রদেশের উইঘুর সম্প্রদায়ের ইমাম ছিলেন তিনি। ভিডিওতে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘তুর্কিস্তানে কী যে যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে গত ৬০ বছরে, বলে বোঝানো যাবে না। মুসলিমদের ওখানে মানুষ বলেই গণ্য করা হয় না।’’ কিন্তু এত দিন তা সহ্য করার পর হঠাৎ কেন আইএসে মতি? বৃদ্ধের কথায়, ‘‘জেহাদে অংশ নিতে বহু বছর আগেই ছোট ছেলেটা বাড়ি ছাড়ে। কিছু দিন আগেই সিরিয়ায় ওকে মেরে ফেলে সেনা। সেই ভিডিও দেখার পরেই মনস্থির করে ফেলি।’’

ভাবা মাত্রই বৃদ্ধ নেমে পড়েন যুদ্ধের ময়দানে। চিন থেকে সপরিবার আজ তিনি জঙ্গি শিবিরের বাসিন্দা। ভিডিওতে এ কে ৪৭-এর মতো বেশ কিছু অস্ত্র নিয়েও ‘পোজ’ দিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। আশি বছরেও যে তিনি জঙ্গিদের থেকে সব ধরনের অস্ত্রচালনার প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, জানিয়েছেন নিজের মুখেই।

প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার পর তাঁর হাতেও বন্দুক তুলে দেওয়া হয়। তবে সরাসরি যুদ্ধে নামার অনুমতি মেলেনি। কিছুটা হতাশ ভঙ্গিতেই তাই তিনি জানালেন, ‘‘যুদ্ধে যেতে পারছি না বটে, তবে বেসক্যাম্প সামলানোও কম কথা নয়।’’

মনে করা হচ্ছে, সিরিয়ার কোনও একটা জায়গায় এই ভিডিওটি তোলা হয়েছে। ভিডিওতে বেশ কিছু দৃশ্যে জঙ্গি পাঠশালার ছবিও মিলেছে। তবে এই ভিডিওর উদ্দেশ্য যে নিছকই নয়া সৈনিকের পরিচয় জানানো নয়, পরোক্ষে চিনকে হুমকি দিয়ে তাও স্পষ্ট করেছে আইএস। সিরিয়া এবং ইরাকে ‘ধর্মরাজ্য’ স্থাপন করেছে আগেই। এ বার জিংজিয়াং প্রদেশেও হামলার ইঙ্গিত মিলেছে ভিডিওতে।

ভিডিওটির সত্যতা পুরোপুরি যাচাই করা না গেলেও, উড়িয়ে দেওয়াও যাচ্ছে না। কারণ জিংজিয়াং প্রদেশ থেকে উইঘুর মুসলিমদের একটা বড় অংশ আইএসে নাম লেখাচ্ছে, তা জানিয়ে চলতি বছরের শুরুতেই আশঙ্কা প্রকাশ করে বেজিং। আইএসের সাম্প্রতিক হুমকিতে তাই সিঁদুরে মেঘ দেখছে প্রশাসনের একাংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE