মার্স-আতঙ্ক। এশিয়ার একটি বিমানসংস্থার উড়ানে চলছে জীবাণুমুক্তকরণ প্রক্রিয়া। বৃহস্পতিবার সোলে। ছবি: রয়টার্স।
বন্ধ করা হয়েছে ৯০০টি স্কুল। কোয়ারান্টাইন করা হয়েছে ১৩৬৯ জনকে। ‘মার্স’-এর ভয়ে এখন তটস্থ দক্ষিণ করিয়া। মার্স— যার পুরো নাম ‘মিডল ইস্ট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম’। ভাইরাস বাহিত এই রোগেই এখন ত্রাহি ত্রাহি রব দক্ষিণ কোরিয়ায়। এখনও পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫।
কী এই মার্স? সার্সের মতোই আর একটি ভাইরাস বাহিত রোগ মার্স। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আরএনএ ভাইরাসটি শ্বাসনালিতে প্রথম প্রভাব ফেলে। জ্বর, কাশি ইত্যাদি উপসর্গগুলি দেখে অনেক সময়েই চেনা যায় না মার্সকে। হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ভাইরোলজি বিশেষজ্ঞ বলেছেন, ‘‘গত ৩ বছর ধরে ভাইরাসটি মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে।’’
২০১২ সালে প্রথম মার্স আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া যায় সৌদি আরবে। তার পর সেখান থেকেই তা ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে ওমান, আলজেরিয়া, মালয়েশিয়ায়। কিন্তু কোথাও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো এত বড় মাত্রায় মার্স ছড়িয়ে পড়েনি।
দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রথম আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া যায় এ বছরের ২০ মে। ৬৮ বছরের এক বৃদ্ধ তিনি। গিয়েছিলেন সৌদি আরব, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং বাহরাইনে। সফরের সময় তাঁর শরীরে কোনও রকম উপসর্গের দেখা পাওয়া যায়নি। কিন্তু দেশে ফেরার প্রায় এক সপ্তাহ পরই অসুস্থ হন তিনি। প্রথমে কেউই বুঝতে পারেননি মার্স ভাইরাসে তাঁর শরীরে বাসা বেঁধেছে। তাই কোনও রকম সতর্কতা ছাড়াই তাঁর চিকিৎসা করা হয়। আর এ ভাবেই স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে এই রোগের ভাইরাস।
প্রাথমিক ভাবে এই গাফিলতি মেনে নিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টও। তিনি বলেছেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে মার্সের মতো সংক্রামক রোগ সম্পর্কে যতটা সচেতন হওয়া উচিত ছিল তা আমরা হতে পারিনি। এ বিষয়ে আমাদের গাফিলতি রয়েছে।’’ বুধবার এই নিয়ে তিনি জরুরি বৈঠকও করেন।
এখনও পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্স আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫। মৃতের সংখ্যা ৩। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) মনে করছে দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্স আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বাচ্চাদের মধ্যে যাতে রাতারাতি এই রোগ ছড়িয়ে না পড়ে— সেই ভয়ে প্রায় ন’শোটি স্কুল এখন ছুটি দিয়ে দিয়েছে।
হু জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত মোট ২৫টি দেশ মার্স ভাইরাস তার প্রভাব বিস্তার করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy