Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

মায়ানমারে ফিরে গেল পাঁচ জনের রোহিঙ্গা পরিবার

বাংলাদেশের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবর্তন কমিশনার মহম্মদ আবুল কালাম জানিয়েছেন, পরিবারটির ফিরে যাওয়া বাংলাদেশ ও মায়ানমারের মধ্যে স্বাক্ষরিত প্রত্যাবর্তন চুক্তির আওতায় হয়নি।

ফেরা: মায়ানমারের তংপেলিও-য় রোহিঙ্গা পরিবারটি। ছবি: ফেসবুক

ফেরা: মায়ানমারের তংপেলিও-য় রোহিঙ্গা পরিবারটি। ছবি: ফেসবুক

সংবাদ সংস্থা
ইয়াঙ্গন শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৮ ০২:৩৮
Share: Save:

ফেরার জন্য এখনও একেবারেই নিরাপদ নয় দেশটা। রাষ্ট্রপুঞ্জ বার বার সতর্ক করছে সে ব্যাপারে। সে সতর্কতা উড়িয়েই মায়নমারে ফিরলেন দেশ ছেড়ে যাওয়া সাত লক্ষ রোহিঙ্গা মুসলিমদের মধ্যে একটি পরিবারকে। অন্তত সে রকমই দাবি করেছে এ দেশের সরকার। তবে এই পরিবার সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশ পৌঁছতে পারেনি। বান্দরবন সীমান্তে ‘জিরো পয়েন্ট’-এ আটকে থাকা প্রায় ৭ হাজার রোহিঙ্গার অন্যতম ছিল এই পরিবারটি।

মায়ানমারের সেনবাহিনীর নৃশংস অত্যাচারের মুখে গত বছরের ২৬ অগস্ট থেকে রোহিঙ্গা মুসলিমদের একটা বড় অংশ বাংলাদেশে পাড়ি দিয়েছিলেন। রাষ্ট্রপুঞ্জ সেই নির্যাতনকে তুলনা করেছিল ‘জাতি নিধনের’ সঙ্গে। যদিও সে অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছিল মায়ানমার সরকার।

এ বছরের জানুয়ারি থেকেই রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরানো নিয়ে তৎপরতা শুরু হয় বাংলাদেশ এবং মায়ানমারে। কিন্তু দু’দেশের সরকারই পরস্পরকে দুষেছে প্রস্তুতির অভাব নিয়ে। তাই ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করা যায়নি। মায়ানমার সরকার শনিবার ফেসবুকে এক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ‘‘একটি পরিবারের পাঁচ সদস্য আজ সকালে রাখাইনের তংপেলিওর বিশেষ শিবিরে এসে পৌঁছেছেন।’’ ফেসবুকে পরিবারটিকে মুসলিম বলে উল্লেখ করা হয়েছে। দেশের সরকার যে হেতু রোহিঙ্গাদের অস্তিত্ব স্বীকার করে না, তাই রোহিঙ্গা শব্দটির উল্লেখ নেই ফেসবুকে।

বাংলাদেশের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবর্তন কমিশনার মহম্মদ আবুল কালাম জানিয়েছেন, পরিবারটির ফিরে যাওয়া বাংলাদেশ ও মায়ানমারের মধ্যে স্বাক্ষরিত প্রত্যাবর্তন চুক্তির আওতায় হয়নি।

ওই পরিবারটিকে পরিচয় যাচাইয়ের জাতীয় পত্র (ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড) দেওয়া হয়েছে। এই পরিচয়পত্র নাগরিকত্ব প্রমাণ করবে না, অভিযোগ করে রোহিঙ্গা নেতারা এই কার্ড বয়কট করছেন। তাঁরা চান পূর্ণ নাগরিক অধিকার। যে পরিবারটিকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে, তারা আদতে রাখাইন প্রদেশের বাসিন্দা ছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছে মায়ানমার প্রশাসন। ফেসবুক পোস্টে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যাচ্ছে, পরিবারটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন সরকারি প্রতিনিধিরা। পরিচয়পত্রও দেওয়া হচ্ছে। এই পরিবারটিকে সাময়িক ভাবে মওঙ্গদও শহরে আত্মীয়দের বাড়িতে থাকতে বলা হয়েছে। আরও কোনও পরিবারকে ফেরানো হবে কি না, তা নিয়ে অবশ্য কিছু বলা হয়নি ফেসবুকে।

যদিও এ মাসের গোড়াতেই রাখাইন প্রদেশ ঘুরে এসে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার দফতরের সহ সচিব দাবি করেছেন, ‘‘ঐচ্ছিক, মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন এবং ভবিষ্যতে থেকে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি এখনও রাখাইন প্রদেশে নেই।’’ তাঁর মতে, ‘‘স্বাধীনতা আন্দোলন, ঐক্যবদ্ধ হয়ে থাকা, দৈনন্দিন জীবনযাপন এবং পরিষেবা পাওয়া সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে নজর দিতে হবে মায়ানমারকে।’’ কারণ রোহিঙ্গাদের মধ্যে বেশির ভাগ মানুষই বলেছেন, তাঁরা দেশে ফিরতে ভয় পাচ্ছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Myanmar Rohingyas Bangladesh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE