খোঁজ চলছে আর্জেন্তিনার নিখোঁজ ডুবোজাহাজ ‘আরা-সান হুয়ান’-এর।
সপ্তাহ কেটে গেলেও খোঁজ মেলেনি আর্জেন্তিনার নিখোঁজ ডুবোজাহাজ ‘আরা-সান হুয়ান’-এর। নিখোঁজ দেশের প্রথম মহিলা সাবমেরিন অফিসার-সহ মোট ৪৪ জন কর্মীও। উদ্ধারকাজে ইতিমধ্যেই হাত লাগিয়েছে ১১টি দেশের নৌসেনা। তোলপাড় চলছে আটলান্টিক মহাসাগরের বিশাল এলাকা জুড়ে। তবু আশার আলো মেলেনি। এর মধ্যে আশঙ্কা বাড়িয়েছে বিস্ফোরণের তত্ত্ব।
তবু হাল ছাড়ছেন না কেউই। গত কাল থেকে তল্লাশি অভিযানে হাত লাগিয়েছে রাশিয়াও। তল্লাশি চালাতে দক্ষিণ আর্জেন্তিনার কমোডরো রিভাডাভিয়া শহরে সে দিনই এসেছে রুশ বিমান আন্তনভ। সেখান থেকে উসুআইয়ায় যায় বিমানটি। সেখান থেকেই যাত্রা করেছিল নিখোঁজ ডুবোজাহাজ ‘আরা-সান’।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিমান এই ‘আন্তনভ’। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের মহাকাশ ফেরি-যান বহন করার জন্য তৈরি হয়েছিল এটি। এটিতে করেই পাঠানো হয়েছে একটি ‘ইলেক্ট্রোসাবমেরিন’ যেটি সমুদ্রের ৬ হাজার মিটার গভীর পর্যন্ত তল্লাশি চালাতে সক্ষম। তবে এত গভীরে কোনও রকম উদ্ধারকাজ চালানো সম্ভব নয় এটির পক্ষে। কিছু পাওয়া গেলে উদ্ধারের কাজটি করবে আমেরিকার একটি জাহাজ।
‘আন্তনভ’ ছাড়াও ‘ইয়ন্তর’ নামে আরও একটি জলযানও পাঠিয়েছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। সমুদ্রের নীচে ৬ হাজার মিটারের চেয়েও বেশি গভীরে তল্লাশি চালাতে সক্ষম এই ভেসেলটি।
গত ১৫ নভেম্বর শেষ বারের মতো যোগাযোগ করা গিয়েছিল ‘আরা-সান’-এর সঙ্গে। এমনিতেই দেরি করে তল্লাশি শুরু করার অভিযোগ রয়েছে আর্জেন্তিনার নৌবাহিনীর উপরে। তার উপর বৃহস্পতিবারই তারা সাংবাদিক বৈঠকে ঘোষণা করেছে, শেষ বার যোগাযোগের সময়ে সমুদ্রের ঠিক যে অংশে ডুবোজাহাজটি ছিল, সেখানে বড়সড় একটি বিস্ফোরণের খবর মিলেছে। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, ব্যাটারির সমস্যার জেরেই ঘটে থাকতে পারে ওই ধরনের বিস্ফোরণ। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যদি সত্যিই তেমন বড় ধরনের কোনও বিস্ফোরণ হয়ে থাকে, তবে ডুবোজাহাজের ভিতরে কারও বেঁচে থাকার আশা প্রায় নেই বললেই চলে। পরিজনেরা তবু আশায় আশায় প্রহর গুনছেন। প্রার্থনা করছেন, ঘরের মানুষটা যেন ঘরে ফিরে আসে।
নিখোঁজ ডুবোজাহাজ কর্মীদের পরিবারের অভিযোগ, এমনিতেই ডুবোজাহাজটি ৩৪ বছরের পুরনো। সেটিতে বেশ কিছু যান্ত্রিক ত্রুটিও ছিল। সেগুলি না সারিয়েই কেন সেটিকে ফের অভিযানে পাঠানো হল তা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তাঁরা। এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন আর্জেন্তিনার প্রেসিডেন্ট মরিশিও মাকরি। তাঁর দাবি, ঠিক অবস্থাতেই পাড়ি দিয়েছিল ডুবোজাহাজটি।
মাকরি গত কালই জানিয়ে দিয়েছেন, তদন্তে আসল সত্য বেরিয়ে না আসা পর্যন্ত কারও উপরে দায় চাপানো ঠিক হবে না। তাঁর কথায়, ‘‘কী ঘটেছে, কী ভাবে ঘটেছে, তা জানতে তদন্ত প্রয়োজন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy