Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

টালবাহানা চলছে, পিছোল রানির বক্তৃতা

আন্তর্জাতিক উন্নয়নমন্ত্রীর পদেই থাকছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত এমপি প্রীতি পটেল। বিদেশমন্ত্রীর পদে রয়ে যাচ্ছেন বরিস জনসন। যদিও জল্পনা ছিল, কনজারভেটিভের ভোট ব্যাঙ্কে ধস নামার পর মে-র নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবেন বরিস।

বৈঠকে: ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে বরিস জনসন। সোমবার। এপি

বৈঠকে: ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে বরিস জনসন। সোমবার। এপি

শ্রাবণী বসু
লন্ডন শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৭ ০২:২১
Share: Save:

জোট সরকার গঠন নিয়ে ডিইউপি-র সঙ্গে এখনও আলোচনা চলছে কনজারভেটিভ পার্টির। আর তাই নতুন সরকারের পরবর্তী নীতি নিয়ে ব্রিটেনের রানি প্রথামাফিক যে বক্তৃতা দেন, নজিরবিহীন ভাবে পিছিয়ে গেল তা। সাধারণত, সরকার গঠনের ১০ দিনের মাথায় বক্তৃতা দেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। বর্তমানে যা পরিস্থিতি, তাতে ১৯ জুন পার্লামেন্টে বক্তৃতা দিচ্ছেন না রানি। কবে হবে এই বক্তৃতা, তা এখনও ঘোষণা করা হয়নি।

নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের আগে মেপে পা ফেলছেন টেরেসা মে। রবিবার তিনি জানান, মন্ত্রিসভায় ফিরছেন তাঁর প্রাক্তন আইনমন্ত্রী মাইকেল গোভ। গত জুলাইয়ে কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্ব নিয়ে মে-র সঙ্গে লড়াইয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়েন ব্রেক্সিটপন্থী এই নেতা। ক্ষমতায় আসার পর যে কারণে গোভকে বরখাস্ত করেছিলেন মে। সেই গোভই এ বার ফিরছেন পরিবেশমন্ত্রীর পদে। সাধারণ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর পরে কনজারভেটিভ পার্টির একাংশ মে-র ইস্তফা চাইলেও, দলের অনেকে আবার চাইছেন মে-র হাত ধরেই আগামী ১৯ জুন শুরু হোক ব্রেক্সিট আলোচনা। হাউস অব কমন্সে ৩১৮টি আসন পাওয়ার পরে উত্তর আয়ারল্যান্ডের দল ডিইউপি-র সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করবেন বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘গোটা দলের ভিতর থেকে প্রতিভাবানদের বেছে এনে মন্ত্রিসভা তৈরি করব। আমরা এমন এক দেশ চাই, যেখানে কেউ পিছিয়ে থাকবেন না।’’ মন্ত্রিসভায় বেশ কিছু পুরনো আমলা রয়ে গেলেও, মে বদল আনছেন বেশ কিছু পদে।

আন্তর্জাতিক উন্নয়নমন্ত্রীর পদেই থাকছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত এমপি প্রীতি পটেল। বিদেশমন্ত্রীর পদে রয়ে যাচ্ছেন বরিস জনসন। যদিও জল্পনা ছিল, কনজারভেটিভের ভোট ব্যাঙ্কে ধস নামার পর মে-র নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবেন বরিস। গত জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েও পারেননি বরিস। তাঁকে বিদেশমন্ত্রীর পদে বসিয়েছিলেন মে। গত কাল বরিস নিজেই জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রিত্বের লড়াইয়ে তিনি আর নেই। এই পরিস্থিতিতে দলের বাকি সদস্যদেরও মে-র পাশে দাঁড়ানোর আর্জি জানিয়েছেন এই নেতা।

তবে ব্রেক্সিট নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে দর কষাকষিতে যে ভাবে কড়া অবস্থান নিতে চেয়েছিলেন মে, এখন হয়তো তা আর সম্ভব নয়। তাঁর একাধিক মন্ত্রী এমনকী অর্থমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ডও চান, ব্রেক্সিট নিয়ে কড়া নীতি থেকে সরে আসুন মে। একই মত স্কটল্যান্ডের কনজারভেটিভ পার্টির নয়া তারকা রুথ ডেভিডসনের। ব্রেক্সিট বাণিজ্য-বান্ধব হোক, চাইছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মাইকেল ফ্যালনও। ইস্তাহারে মে সামাজিক সুরক্ষা ও বার্ধক্য ভাতায় বরাদ্দ ছাঁটার কথা বলেছিলেন। সরে আসতে হতে পারে তা থেকেও।

এই সব চাপ সামলে ক্ষমতায় টিকে থাকাই এখন বিদায়ী প্রধানমন্ত্রীর কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। দলের হারের দায় কাঁধে নিয়ে ইতিমধ্যেই ইস্তফা দিয়েছেন মে-র ঘনিষ্ঠ দুই উপদেষ্টা ফিয়োনা হিল ও নিক টিমোথি। তাঁদের দু’জনেরই মত, নেত্রী হিসেবে মে অত্যন্ত উদ্ধত। বাকিদের মতামতের বিশেষ তোয়াক্কা করেন না। ক্ষমতায় থাকতে হলে তাই এ বার যাবতীয় নিয়ন্ত্রণ একার হাতে না রেখে দায়িত্ব ভাগাভাগি করে দিতে হবে মে-কে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE