Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
International

ট্রাম্পের হাতে যৌন হেনস্থা, এ বার সরব দুই প্রাক্তন মডেল

আবার ডোনাল্ড ট্রাম্পের কেচ্ছা-কেলেঙ্কারির ‘ঝাঁপি’ খুলল! আর সেই ‘ঝাঁপি’ খুলে বেরিয়ে এলেন দুই প্রাক্তন মডেল। সামার জারভোস ও ক্রিস্টিন অ্যান্ডারসন। টেলিভিশনে দ্বিতীয় পর্বের ‘প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটে’ ট্রাম্পকে ‘ডাহা মিথ্যে’ বলতে দেখে একেবারে প্রকাশ্যেই ‘ফণা’ তুলে ট্রাম্পকে ‘ছোবল’ মারতে পিছপা হননি দু’জনের কেউই। দু’জনেই বলেছেন, ‘‘হাঙরের মতো গিলে খাওয়া স্বভাব ট্রাম্পের!’’

দুই প্রাক্তন মডেল সামার জারভোস (বাঁ দিকে) ও ক্রিস্টিন অ্যান্ডারসন।

দুই প্রাক্তন মডেল সামার জারভোস (বাঁ দিকে) ও ক্রিস্টিন অ্যান্ডারসন।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৬ ১৮:১০
Share: Save:

আবার ডোনাল্ড ট্রাম্পের কেচ্ছা-কেলেঙ্কারির ‘ঝাঁপি’ খুলল! আর সেই ‘ঝাঁপি’ খুলে বেরিয়ে এলেন দুই প্রাক্তন মডেল। সামার জারভোস ও ক্রিস্টিন অ্যান্ডারসন। টেলিভিশনে দ্বিতীয় পর্বের ‘প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটে’ ট্রাম্পকে ‘ডাহা মিথ্যে’ বলতে দেখে একেবারে প্রকাশ্যেই ‘ফণা’ তুলে ট্রাম্পকে ‘ছোবল’ মারতে পিছপা হননি দু’জনের কেউই। দু’জনেই বলেছেন, ‘‘হাঙরের মতো গিলে খাওয়া স্বভাব ট্রাম্পের!’’ দুই প্রাক্তন মডেলেরই দাবি, তাঁরা বিপদে পড়েই শরণাপন্ন হয়েছিলেন কোটিপতি ট্রাম্পের। আর ‘সমুদ্রে রক্তের স্বাদ পেলে যেমন হাঙরকে রোখা যায় না’, তেমনই এক সময় তাঁদের শিকার হতে হয়েছিল ট্রাম্পের। রিপাবলিকান প্রার্থী অবশ্য সব অভিযোগই ‘একেবারে ভুয়ো’, ‘আজগুবি’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। প্রচারে গিয়ে বলেছেন, ‘‘আমাকে ফাঁসানোর চক্রান্ত চলছে।’’

ট্রাম্প যা-ই বলুন, পুরনো কেচ্ছা কিছুতেই পিছু ছাড়তে চাইছে না তাঁকে। ভোট যতই এগিয়ে আসছে, আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প ততই বেশি করে ডুবে যাচ্ছেন তাঁর পুরনো কেচ্ছা-কেলেঙ্কারির ‘জালে’। গত বৃহস্পতিবার দুই মহিলার প্রকাশ্য অভিযোগের পর শুক্রবার ‘বোমা’ ফাটিয়েছেন দুই প্রাক্তন মডেল সামার জারভোস ও ক্রিস্টিন অ্যান্ডারসন।

কী বলেছেন তাঁরা?

প্রথমে তুলে ধরা যাক প্রাক্তন মডেল সামার জারভোসের কথা। অনেক দিন আগে মার্কিন টেলিভিশনে একটি রিয়্যালিটি শো চালাতেন ট্রাম্প। কোটিপতি ট্রাম্পের সেই রিয়্যালিটি শো’য়ে আসতেন সব দামি দামি মডেল। ডলারের টানে। আর ট্রাম্পও তাঁর খেয়ালখুশি মতো মডেল বদলে বদলে চালাতেন তাঁর ওই রিয়্যালিটি শো ‘দ্য অ্যাপ্রেন্টিস’। ফলে দামি দামি মডেলরাও হঠাৎ করেই কাজ খুইয়ে বেকার হয়ে পড়তেন। সেই সময়ের ডাকাবুকো মডেল সামার জারভোসও তেমনই এক দিন কাজ খুইয়ে ফেলেন ট্রাম্পের রিয়্যালিটি শো’য়ে।

জারভোস একেবারে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকেই বলেছেন, ‘‘কাজ খোয়ানোর পরেও আমি যোগাযোগ রেখে চলতাম ট্রাম্পের সঙ্গে। প্রভাবশালী মানুষ। কোনও দিন যদি ওর মাধ্যমে আবার আমার একটা ভাল কাজ জুটে যায়। ২০০৭ সালে এক দিন ট্রাম্পই আমাকে ডেকে নেয় বেভারলি হিল্‌সের একটি হোটেলে, ডিনারে। নিজের জন্য একটা ভাল কাজ জোটানোর আশাতেই ওর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। দু’-চার কথার পরেই ট্রাম্প আমাকে জোর করে চুমু খেতে শুরু করে। হাত দিতে শুরু করে আমার শরীরের সর্বত্র। আমার কোমর জড়িয়ে ধরে আমাকে আধশোয়া করে ফেলে আমাকে হাঙরের মতো গিলতে চেষ্টা করে। আমি ওকে ঠেলে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। বলি, তুমি তাড়াতাড়ি সুস্থ, স্বাভাবিক হে ওঠো। তাতে ও আমাকে আরও বিপর্যস্ত করে দিয়ে বলে, ‘এটাই সুস্থতা, স্বাভাবিকতা। আমি এত দিন এ সব কিছু প্রকাশ্যে বলতে চাইনি। কোটিপতি মানুষ। ওর বিরুদ্ধে কিছু বলতে ভয় পেয়েছি। এখন টেলিভিশনে ওকে ডাহা মিথ্যে বলতে দেখে আর থাকতে পারলাম না। এখন আর কিছুর পরোয়া করি না। তাই সব কিছু বলে দিলাম। এই লোকটাকে প্রেসিডেন্ট হিসাবে আমার দেশের মানুষ বিশ্বাস করতে যাচ্ছে? এটা আমি কিছুতেই মন থেকে মেনে নিতে পারছি না।’’

দ্বিতীয় ‘বোমা’টি শুক্রবারই ফাটিয়েছেন আরেক প্রাক্তন মডেল ক্রিস্টিন অ্যান্ডারসন। প্রথম সারির মার্কিন দৈনিক ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্রিস্টিন বলেছেন, ‘‘সেটা ৯০/৯১ সালের কোনও একটা রাতের কথা। ট্রাম্প আমাকে নিয়ে গেল একটা নাইটক্লাবে। ঢুকেই কোনও সুযোগ না দিয়ে একেবারে ঝাঁপিয়ে পড়ল আমার ওপর। আমার একেবারেই ভাল লাগছিল না। অসহ্য লাগছিল। কিন্তু কিছুই করার ছিল না। গলায় ফাঁসের মতো ট্রাম্প আমার শরীরের ওপর চেপে বসেছিল। আমাকে কোনও জামাকাপড়ই পরে থাকতে দেয়নি।’’

শুক্রবারই মার্কিন দৈনিক ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’ একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। ভিডিওটি শুট করা হয়েছিল ট্রাম্পের তিন নম্বর বিয়ের কিছু আগে। ২০০৪ সালে। তাতে দেখা যাচ্ছে ট্রাম্প বেশ রসিয়ে রসিয়ে এক জনকে বলছেন, তাঁর দ্বিতীয় বিয়ের ঠিক আগেকার কথা। কী অসম্ভব নিষ্ঠুর ভাবে! ট্রাম্প সেখানে বলছেন, ‘‘আমি আমার স্ত্রী (প্রথম স্ত্রী ইভানা ট্রাম্প) আর যাকে বিয়ে করব সেই মহিলাকে (ট্রাম্পের দ্বিতীয় স্ত্রী মার্লা ম্যাপলস) নিয়ে গেলাম একটা পাহাড়ে। সেখানে একটা রেস্তোরাঁয় বসে মজা দেখছিলাম। আমাকে দেখিয়ে দু’জনেই ‘ওকে ভালবাসি, ওকে ভালবাসি, তুমি কি ডাইনি’ বলে নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করতে শুরু করল! আমার খুব ভাল লাগছিল! এই ওদের স্বভাব!’’

আরও পড়ুন- জঙ্গি সংগঠন নিষিদ্ধ করুক পাকিস্তান, ফের চড়া সুর আমেরিকার

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE