Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

প্রতিবাদের রং ইরাকের রাস্তায়

বাগদাদের সাদুন টানেল ও তার চারপাশ। টাইগ্রিস নদীর ধারে এই এলাকাটি এখন বিক্ষোভকারীদের দখলে। অক্টোবর থেকে বিক্ষোভে উত্তাল যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে শতাধিকের মৃত্যু হয়েছে, আহত কয়েক হাজার।

আমরাও পারব: বাগদাদের সাদুন টানেলের গায়ে গ্রাফিটি। এপি

আমরাও পারব: বাগদাদের সাদুন টানেলের গায়ে গ্রাফিটি। এপি

সংবাদ সংস্থা
বাগদাদ শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৫৯
Share: Save:

গারদ ভেঙে বেরিয়ে আসছে একটা লোক। নীচে লেখা, ‘আমাদের একটা দেশ চাই, কারাগার নয়।’ আর একটা ছবি এক দঙ্গল বিক্ষোভকারীর। ‘ভি’ চিহ্ন দেখাচ্ছেন তাঁরা। ছবির নীচে লেখা— ‘বিপ্লবের বীজ পুঁতে দাও, রাষ্ট্রের জন্ম হবে।’ একটা দেওয়াল-লিখনের বার্তা আরও স্পষ্ট, ‘দেখো আমেরিকা, তোমাদের জন্যই আমাদের এই হাল।’

বাগদাদের সাদুন টানেল ও তার চারপাশ। টাইগ্রিস নদীর ধারে এই এলাকাটি এখন বিক্ষোভকারীদের দখলে। অক্টোবর থেকে বিক্ষোভে উত্তাল যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে শতাধিকের মৃত্যু হয়েছে, আহত কয়েক হাজার। আজও চার জনের মৃত্যু হয়েছে। বিক্ষোভ আগেও দেখেছে এ দেশ। তবে সেই বিক্ষোভের থেকে এ বারের প্রতিবাদের চেহারাটি আলাদা। এ বার বিক্ষোভকারীরা কোনও রাজনৈতিক নেতার পদত্যাগ বা রাজনৈতিক দলের গদি ছাড়ার দাবি তুলছে না। তারা চাইছে, দেশের রাজনৈতিক কাঠামো এবং শাসন ব্যবস্থাতেই আমূল পরিবর্তন আসুক। ২০০৩-এ মার্কিন হানা ও সাদ্দাম হুসেনের পতনের পর থেকে যে ভাবে সরকার চলছে, তা নিয়েই প্রবল আপত্তি রয়েছে বিক্ষোভকারীদের। এখন সরকারি আধিকারিকদের সব পদ-ই শিয়া, সুন্নি ও কুর্দদের জন্য সংরক্ষিত। এবং এই সব আধিকারিকের অধিকাংশই দুর্নীতিগ্রস্ত। গত বছর ক্ষমতায় এসে প্রধানমন্ত্রী আদেল আবদেল মাহদি আশ্বাস দিয়েছিলেন, দুর্নীতি রুখতে কড়া পদক্ষেপ করবেন তিনি। দেশের অর্থনৈতিক কাঠামোও ঢেলে সাজানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। বলেছিলেন, অতি ধনীদের সঙ্গে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠদের এই আকাশ-পাতাল তফাত থাকবে না।

কিন্তু সে সব আশ্বাস বাস্তবায়িত হয়নি। আর তারই ফলে অসন্তোষ দানা বাঁধতে বাঁধতে বিশাল বিক্ষোভের আকার ধারণ করেছে। সেই বিক্ষোভের নতুন প্রকাশ, সাদুন টানেলের গা-জোড়া গ্রাফিটি। এই টানেলটি আসলে বিশাল এক আন্ডারপাস। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ সেখান দিয়ে যাতায়াত করেন। সেই প্রাচীরের গায়েই অসংখ্য ছবি ও গ্রাফিটি এঁকেছেন ছাত্রছাত্রীরা, যাঁদের অধিকাংশই মেডিক্যাল পড়ুয়া। হায়দার মহম্মদ নামে এক ছাত্রের কথায়, ‘‘আমরা হয় তো পথে নেমে বিক্ষোভে অংশ নিতে পারছি না। কিন্তু এই ছবি এঁকে আমাদের আন্দোলনকারী ভাইদের বার্তা দিতে চাই যে, আমরা সবাই আপনাদের পাশে আছি। আমরাও পরিবর্তন চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tunnel Graffiti Iraq
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE