Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

জামাত নেতা মীর কাসেমের ফাঁসিই বহাল

মানবতা-বিরোধী অপরাধে জামাতে ইসলামির নেতা মীর কাসেম আলির প্রাণদণ্ডের সাজাই বহাল রাখল বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট।

মীর কাসেম আলি

মীর কাসেম আলি

কুদ্দুস আফ্রাদ
ঢাকা শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৬ ০৪:১৭
Share: Save:

মানবতা-বিরোধী অপরাধে জামাতে ইসলামির নেতা মীর কাসেম আলির প্রাণদণ্ডের সাজাই বহাল রাখল বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্রকুমার সিন্হার নেতৃত্বে ৫ সদস্যের বেঞ্চ আজ জনাকীর্ণ আদালতে এই রায় ঘোষণা করেন। সঙ্গে সঙ্গে উল্লাসে ফেটে পড়েন সারা দেশের মানুষ। আপিল বিভাগের এ রায়ে আসামির সর্বোচ্চ সাজা বহাল থাকা নিয়ে আওয়ামি লিগের একটি মহলে সংশয়ে থাকলেও আজ রায় ঘোষণার পরেই দলের তরফ থেকে সন্তোষ জানানো হয়েছে। বিরোধী দল বিএনপি এই রায়ের ব্যাপারে মুখ বন্ধ রাখলেও তাদের শরিক জামাতে ইসলামি বুধবার সারা দেশে হরতাল ডেকেছে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে রাজধানী ঢাকায় পুলিশের পাশাপাশি সীমান্তরক্ষী বাহিনীকেও মোতায়েন করা হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগিতায় ইসলামি ছাত্র সংঘের বাছাই করা সদস্যদের নিয়ে গড়া হয় সশস্ত্র আল বদর বাহিনী। এই বাহিনীর চট্টগ্রাম অঞ্চলের কমান্ডার ছিলেন মীর কাসেম আলি। পাথরঘাটার ডালিম হোটেল দখল করে তাতে মুক্তিকামী মানুষদের নির্যাতনের ঘাঁটি বানিয়ে ছিলেন তিনি। অসংখ্য যুবককে ভয়াবহ নির্যাতনের পর খুন ও মহিলাদের তুলে এনে ধর্ষণ করা হতো এই হোটেলে। তাঁর নৃশংসতার জন্য পাক সেনারা মীর কাসেম আলিকে ‘বাঙালি খান’ নামে ডাকত। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে ১৯৭৭ সালে ইসলামি ছাত্র শিবির নামের উগ্র ছাত্র সংগঠন গড়ে তুলে সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন
এই জামাত নেতা। বর্তমানে জামাতে ইসলামির প্রধান অর্থ জোগানদাতা হিসাবেও মীর কাসেম পরিচিত ছিলেন। মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত থাকার অভিযোগ দায়েরের পর আন্তর্জাতিক আদালতের আদেশে ২০১২ সালের ১৭ জুন মীর কাসেম আলিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আদালত এর আগে ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর মীর কাসেম আলিকে প্রাণদণ্ড দেয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে তিনি সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন। আজ সেই মামলার রায়ে সুপ্রিম কোর্ট ১০টির মধ্যে
সাতটি অভিযোগে মীর কাসেমের সাজা বহাল রাখা হয়। একটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডের সাজা রদ করা হয়েছে।

এ দিন রায় ঘোষণার আগে থেকেই শাহবাগ চত্বরে জমায়েত হয়েছিলেন গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা। রায় ঘোষণার পর উল্লাসে ফেটে পড়েন তাঁরা। চট্টগ্রামেও মিছিল বের হয়। মীর কাসেম আলির ছবিতে জুতো পেটা করেন মানুষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE