মার্কিন গ্রিন কার্ড। ছবি- সংগৃহীত।
এইচ১বি ভিসাধারী অভিবাসীদের মতো গ্রিন কার্ডের আবেদনকারীদেরও আর রেয়াত করতে নারাজ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মার্কিন প্রশাসনের হোমল্যান্ড সিকিয়োরিটি বিভাগ ২১ সেপ্টেম্বর তাদের ওয়েবসাইটে নতুন আইনের খসড়া প্রকাশ করেছে। বলা হয়েছে, ভিসা বা গ্রিন কার্ডের জন্য আবেদন করতে হলে সংশ্লিষ্ট অভিবাসীকে আগে মুচলেকা দিতে হবে যে, তিনি স্বাস্থ্য, শিক্ষা, খাদ্য, আর্থিক সহায়তার মতো মার্কিন সরকারের কোনও প্রকল্পের সুবিধা নেবেন না। ষাট দিনের মধ্যে আমজনতাকে এই নতুন আইন নিয়ে মত দিতে বলা হয়েছে। তার পর সেটিকে মার্কিন কংগ্রেসে পেশ করার কথা। মার্কিন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির একাংশ ইতিমধ্যেই প্রস্তাবিত আইনের তীব্র বিরোধিতা করেছে।
দু’দিন আগেই আদালতে মার্কিন সরকার জানিয়েছে, এইচ১বি ভিসাধারীদের স্বামী-স্ত্রীরা (যাঁরা এইচ৪ ভিসা পান) যাতে আর আমেরিকায় চাকরি করতে না-পারেন, তিন মাসের মধ্যে তা নিশ্চিত করা
হবে। আতঙ্ক বেড়েছিল আমেরিকায় কর্মরত ভারতীয়দের। এপ্রিলের পরিসংখ্যান বলছে, মার্কিন প্রশাসনের কাছে ৬ লক্ষ ৩২ হাজার ২১৯ জন ভারতীয়ের গ্রিন কার্ডের আবেদন ঝুলে রয়েছে। খসড়া আইনটি পাশ হলে কোপ আসবে তাঁদের উপরেই।
আমেরিকায় যে বিদেশিরা স্থায়ী ভাবে বসবাস ও উপার্জনের অধিকার পান, তাঁদের ‘পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট কার্ড’ দেওয়া হয়। চলতি কথায় একেই বলে গ্রিন কার্ড। খসড়া আইনে বলা হয়েছে, ‘‘এ বার থেকে যাঁরা গ্রিন কার্ড চাইবেন বা ভিসার মেয়াদ পরিবর্তনের জন্য আবেদন করবেন অথবা যাঁরা আমেরিকায় আসতে চাইবেন, তাঁদের একটি বিষয়ে স্পষ্ট প্রমাণ দিতে হবে। সেটি হল— তাঁরা মার্কিন সরকারের কোনও সুবিধে নেননি, বর্তমানে নিচ্ছেন না, ভবিষ্যতেও নেবেন না।’’
ভারতীয়-সহ বহু বিদেশি দীর্ঘদিন ধরেই গ্রিন কার্ড নিয়ে বসবাস করছেন আমেরিকায়। প্রশ্ন হল, তাঁদের কী হবে? মার্কিন সরকারের বক্তব্য, পুরনো বাসিন্দাদের ক্ষেত্রে নয়া আইন প্রযোজ্য হচ্ছে না। যদিও আইনজ্ঞদের ধারণা, গ্রিনকার্ডধারী অভিবাসীদের অনেকেও এ বার সরকারি সুযোগ-সুবিধা নেওয়া ছেড়ে দেবেন, যাতে ভবিষ্যতে কোনও ঝামেলায় পড়তে না-হয়।
হোমল্যান্ড সিকিয়োরিটি সচিব কার্স্টেন নিয়েলসেনের যুক্তি, ‘‘মার্কিন করদাতাদের উপরে বোঝা কমানোই এই আইনের উদ্দেশ্য।’’ যদিও প্রবল অসন্তুষ্ট মার্কিন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি। মার্কিন অভিবাসী প্রকল্পগুলির সংস্কার চেয়ে ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জ়াকারবার্গ ইতিমধ্যেই ‘এফডব্লিউডি ডট ইউএস’ নামে একটি সংস্থা গড়েছেন। তাতে রয়েছে মাইক্রোসফট, ইয়াহু, গুগল-ও। সংস্থার প্রেসিডেন্ট টড শুলটে বলেছেন, ‘‘এই সিদ্ধান্ত যাতে পরিশ্রমী অভিবাসীদের ক্ষতি হবে, দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতি হবে আমাদের দেশেরও।’’ লস অ্যাঞ্জেলেসের ডেমোক্র্যাট মেয়র এরিক গারসেটি-ও বলেছেন, ‘‘অভিবাসীরা কঠোর পরিশ্রম করেন, কর দেন, আমাদের অর্থনীতিকেই মজবুত করেন। তাঁদের সঙ্গে এই আচরণ করা অনুচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy