Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

ড্রাগনের দাপট কমবে মলদ্বীপে, আশায় দিল্লি

অগ্নিগর্ভ প্রতিবেশী বলয়ের মধ্যে বসে থাকা ভারতের কাছে সুখবর নিয়ে এল মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। সে দেশের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিন ভোটে হেরেছেন। চিনের জন্য দরজা খুলে দিয়ে ঘোষিত ভাবেই ভারতের সঙ্গে পাঞ্জা কষছিলেন তিনি।

ইব্রাহিম মহম্মদ সলি

ইব্রাহিম মহম্মদ সলি

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:০৮
Share: Save:

অগ্নিগর্ভ প্রতিবেশী বলয়ের মধ্যে বসে থাকা ভারতের কাছে সুখবর নিয়ে এল মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। সে দেশের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিন ভোটে হেরেছেন। চিনের জন্য দরজা খুলে দিয়ে ঘোষিত ভাবেই ভারতের সঙ্গে পাঞ্জা কষছিলেন তিনি। তাঁর পরাজয়ে উচ্ছ্বাস গোপন করেনি নয়াদিল্লি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ফোন করে অভিনন্দন জানান প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী প্রার্থী ইব্রাহিম মহম্মদ সলিকে। এর আগে ভোরেই তাঁকে অভিনন্দন জানায় বিদেশ মন্ত্রক। বলা হয়, ‘‘গণতন্ত্রের মূল্য এবং আইনের শাসনের প্রতি মলদ্বীপবাসীদের সুদৃঢ় দায়বদ্ধতা প্রতিষ্ঠা করল এই নির্বাচন।’’ বিদেশ মন্ত্রক আরও বলেছে, ‘‘প্রতিবেশীকে অগ্রাধিকার দেওয়ার ভারতীয় নীতি মেনে মলদ্বীপের সঙ্গে সহযোগিতা ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও গভীর করতে আমরা উদ্‌গ্রীব।’’ পরে মোদীও একই কথা জানান সলিকে। সলিও ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করতে চান বলে জানিয়েছেন।

ইয়ামিন জমানায় মলদ্বীপ বারবার ভারতের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়েছে। ভারতের দু’টি সামরিক হেলিকপ্টার ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রবল চাপ তৈরি করেছিলেন ইয়ামিন। সেখানে উপস্থিত ৫০ জন ভারতীয় সেনাকর্মীকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য কার্যত ফতোয়া জারি করেছিল ইয়ামিন সরকার।

পঁচিশ বছরের সাংসদ সলির সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠতা দীর্ঘদিনের। তিনি প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ক্রমশ পরিস্থিতি
ভারতের অনুকূলে যাবে বলে আশা করছে নয়াদিল্লি। সলি তাঁর প্রচারে বারবার বলে এসেছেন, ক্ষমতায় এলে প্রতিবেশী দেশগুলিকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হবে। বিদেশনীতিতে অগ্রাধিকার পাবে ভারত। চিন নয়।

ইয়ামিনের অভিযোগ ছিল, ভারত গোপনে সলিকে সাহায্য করছে। নয়াদিল্লি আমল দেয়নি সেই অভিযোগে। তবে ইয়ামিন ফের জিতে এলে নিয়ে সাউথ ব্লকের উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ ছিল বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা। ইয়ামিনের আমলে মলদ্বীপে বিশাল এলাকা জুড়ে সামরিক ঘাঁটি তৈরির প্রক্রিয়া বেজিং অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে।

এটা ঘটনা ভারত মহাসাগরে নিজেদের প্রভাব বজায় রাখতে ভারত ও চিন, উভয় দেশই মরিশাস, সেশেলস ও মলদ্বীপের মতো দেশগুলিকে হেলিকপ্টার, টহলদারি বোট ও আরও অনেক কিছু দিয়ে সাহায্য করে এসেছে। সাহায্যের মোড়কে নিজেদের প্রতিরক্ষা নজরদারি এবং ঘাঁটি তৈরিই এ সবের প্রকৃত উদ্দেশ্য। কিন্তু ইয়ামিন জমানায় এই কাজে মলদ্বীপে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিল ড্রাগনের দেশ। যে মলদ্বীপে ২০১১ সাল পর্যন্ত চিনের দূতাবাসও ছিল না, আজ সেখানকার রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক প্রতিটি পদক্ষেপে জড়িয়ে রয়েছে চিন। গত ডিসেম্বরে সাউথ ব্লকের রক্তচাপ দ্বিগুণ করে মলদ্বীপের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করেছে চিন। মলদ্বীপও চিনের ওবর প্রকল্পে সমর্থন জানিয়েছে। সে দেশের বিভিন্ন প্রকল্পে ভারতীয় সংস্থাগুলিকে হটিয়ে চিনা সংস্থাগুলি জায়গা করে নিয়েছে।

ইয়ামিনের পরাজয় তাই ভারত-চিন কূটনৈতিক যুদ্ধে ও অন্যান্য ক্ষেত্রে নয়াদিল্লিকে অনেকটাই সুবিধাজনক জায়গায় পৌঁছে দিল বলে মনে করছে বিদেশ মন্ত্রক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

China India Maldives Electio President
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE