Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

এত দূরে, তবু শ্বাস নিতেই পারছি না

গত বছর অক্টোবর মাসে সান ফ্রান্সিসকো থেকে ১৩০ কিলোমিটার দূরত্বে নাপা/সোনোমা কাউন্টি দাবানলে বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছিল। ৪৪ জন মারা গিয়েছিলেন। পুড়ে গিয়েছিল ন’হাজার গাড়ি।

বিষবাষ্প: ধোঁয়া থেকে বাঁচতে মুখোশ। ক্যালিফর্নিয়ার প্যারাডাইসের অস্থায়ী শিবিরে ঘরহারা এক বৃদ্ধা। রয়টার্স

বিষবাষ্প: ধোঁয়া থেকে বাঁচতে মুখোশ। ক্যালিফর্নিয়ার প্যারাডাইসের অস্থায়ী শিবিরে ঘরহারা এক বৃদ্ধা। রয়টার্স

উর্মি চক্রবর্তী
সান ফ্রান্সিসকো শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৩২
Share: Save:

গত সাত-আট বছর ধরেই প্রকৃতি ক্যালিফর্নিয়ার ওপর রুষ্ট। ২০১১-১৬ সালে চলল টানা খরা, ক্যালিফর্নিয়ার ইতিহাসে যা সব চেয়ে ভয়াবহ। তার পরে শুরু হল দাবানল। এমন নয় যে, ক্যালিফর্নিয়ায় দাবানল হয় না, বা তার জন্য প্রশাসন প্রস্তুত থাকে না। প্রায় প্রতি বছরই বিভিন্ন ন্যাশনাল পার্কে দাবানল হয়। কিন্তু গত দু’বছর যে ভাবে মানুষের বসতিতে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে, তা ভয়াবহ।

গত বছর অক্টোবর মাসে সান ফ্রান্সিসকো থেকে ১৩০ কিলোমিটার দূরত্বে নাপা/সোনোমা কাউন্টি দাবানলে বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছিল। ৪৪ জন মারা গিয়েছিলেন। পুড়ে গিয়েছিল ন’হাজার গাড়ি। এত বড় দাবানল ক্যালিফর্নিয়ায় এর আগে কখনও হয়নি। কে জানত, এ বছরের দাবানল তাকেও ছাপিয়ে যাবে। এ বারের দাবানলে এখনও পর্যন্ত ৭১ জন মারা গিয়েছেন। নিখোঁজ এক হাজার! ১২ হাজার বাড়ি পুড়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। এ হেন দাবানলের নাম দেওয়া হয়েছে, ‘ক্যাম্প ফায়ার’! ৮ নভেম্বর ক্যালিফর্নিয়ার রাজধানী স্যাক্রামেন্টোর কাছে প্যারাডাইস শহরে আগুন লাগে প্রথমে। দু’দিনের মধ্যে পুরো শহর পুড়ে খাক হয়ে গেল।

‘ক্যাম্প ফায়ার’ থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরে সান ফ্রান্সিসকো, কিন্তু সমুদ্রের ধারে হওয়ার জন্য ধোঁয়া এখানে চেপে বসছে। তেমন জোরালো হাওয়া নেই। বৃষ্টিও নেই। বেশ ঠান্ডা রাতের দিকে। ফলে ধোঁয়া অন্যত্র সরে যাওয়ার অবকাশও নেই। ধোঁয়ার জন্য দৃশ্যমানতা এতই খারাপ যে কয়েক দিন ধরেই সান ফ্রান্সিসকোর বহু উড়ানে দেরি হচ্ছে। আজও দু’শোর বেশি উড়ান নয় দেরিতে ছেড়েছে, বা দেরিতে এসে পৌঁছেছে। সাধারণ সময়ে এখানে দৃশ্যমানতা থাকে ১৬ কিলোমিটার। এখন ২.৪ কিলোমিটার!

আগামী সপ্তাহে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। তার পরে ধোঁয়ার থেকে কিছুটা নিস্তার পাওয়া যাবে বলে আশা করছি। ইন্টারনেটে দেখছিলাম, দু’দিন ধরে সান ফ্রান্সিসকোর বাতাসের মান বিশ্বে সব চেয়ে খারাপ। বাইরে বেরোলেই নাক, চোখ জ্বালা করছে। নিঃশ্বাস নেওয়াই কঠিন। ‘মাস্ক’ না পরে বাইরে থাকা যায় না। অনেক অফিস থেকে মাস্ক দেওয়া হচ্ছে, যাতে কর্মীরা অসুস্থ হয়ে না পড়েন। শুক্রবার বাচ্চাদের কয়েকটি ডে কেয়ার সেন্টারও বন্ধ ছিল। প্রশাসনও বলেছে, যথাসম্ভব বাইরে না যেতে, বাড়িতে থাকলেও পরিশ্রম বেশি না করতে।

লেখক বিজ্ঞানী

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Air Pollution Suffocation Wild Fire Camp Fire
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE